নিজস্ব প্রতিনিধি :
চট্টগ্রামে পুলিশ ‘হেফাজতে’ দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক কর্মকর্তা ছৈয়দ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহর মৃত্যুর ঘটনায় আদালতে চান্দগাঁও থানার ওসি-তদন্তসহ ৯ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। মামলার পরপরই পরিদর্শক (তদন্ত) মনিবুর রহমানকে চান্দগাঁও থানা থেকে বদলি করা হয়েছে। তবে সিএমপির দাবি— এ বিষয়ের সঙ্গে বদলির কোনো সম্পর্ক নেই। এটি নিয়মিত বদলি।
সোমবার (১৬ অক্টোবর) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (প্রশাসন ও অর্থ) এম এ মাসুদ স্বাক্ষরিত এক আদেশে এ তথ্য জানা যায়।
এতে চান্দগাঁও থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মনিবুর রহমানকে উপ-পুলিশ কমিশনার (পশ্চিম) কার্যালয়ের পরিদর্শক (অপরাধ) হিসেবে বদলি করা হয়েছে। আর তার স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছে উপ-পুলিশ কমিশনার (পশ্চিম) কার্যালয়ের পরিদর্শক (অপরাধ) মো. ছাবের আলীকে।
এরআগে, পুলিশ ‘হেফাজতে’ মারা যাওয়া দুদকের সাবেক কর্মকর্তার স্ত্রী ফৌজিয়া আনোয়ার গতকাল সোমবার (১৬ অক্টোবর) চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ ড. বেগম জেবুননেছার আদালত মামলা দায়ের করেন। মামলায় নগরের চান্দগাঁও থানার ওসি-তদন্তসহ ৯ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার আসামিরা হলেন— চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খাইরুল ইসলাম, পরিদর্শক (তদন্ত) মনিবুর রহমান, সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. ইউসুফ ও সোহেল রানা। এছাড়া বাকি পাঁচ আসামিরা হলেন— এস এম আসাদুজ্জামান, জসিম উদ্দিন, মো. লিটন, রণি আক্তার তানিয়া এবং কলি আক্তার।
তবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিএমপির অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) পংকজ দত্ত বলেন, ‘ওই ঘটনার বিষয়ের সঙ্গে এ বদলির কোনো সম্পর্ক নেই। এটি নিয়মিত বদলি হিসেবেই করা হয়েছে।’
এদিকে, গত ৫ অক্টোবর দুদকের অবসরপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহকে গ্রেপ্তার সময় অভিযানে থাকা দুই এএসআইকে (সহকারী উপ-পরিদর্শক) চান্দগাঁও থানা থেকে সরিয়ে দামপাড়া পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়। তারা হলেন— চান্দগাঁও থানার উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. ইউসুফ আলী এবং এটিএম সোহেল রানা। সেসময় সিএমপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল— ‘তদন্তের স্বার্থেই তাদের সরানো হয়েছে।’
উল্লেখ্য, গত ৩ অক্টোবর রাতে নগরের চান্দগাঁও থানার এক কিলোমিটার এলাকার বাসা থেকে দুদকের অবসরপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহকে (৬৪) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর পুলিশ হেফাজতে ‘অসুস্থ হয়ে’ দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক কর্মকর্তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় পরেরদিন বুধবার (৪ অক্টোবর) তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)। এতে নগর গোয়েন্দা পুলিশের উত্তর জোনের উপ-কমিশনারকে প্রধান করা হয়েছে। কমিটির অপর সদস্যরা হলেন— নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (উত্তর) এবং বিশেষ শাখার সহকারী কমিশনার।
এদিকে, নগরের চান্দগাঁও থানা পুলিশ হেফাজতে থাকা অবস্থায় মারা যাওয়া দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক উপ-পরিচালক ছৈয়দ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহর মামলায় সমন লুকিয়ে রাখায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্টেস্ট আাদালতের বেঞ্চ সহকারী মোহাম্মদ হারুন অর রশীদকে ক্যাশিয়ার পদে বদলি করা হয়েছিল। এছাড়াও এক সদস্য বিশিষ্ট বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল।