ই-পেপার | বৃহস্পতিবার , ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শালিকের অত্যাচারী মালিক নাছিরকে গ্রেফতারের দাবি

শওকত আলম, কক্সবাজার :

 

কক্সবাজারের পর্যটন জোনের কলাতলির শালিক রেস্টুরেন্টের মালিক নাছির উদ্দিন বাচ্চুকে দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ অব্যাহত রয়েছে। নারী কর্মচারীদের যৌন নিপীড়ন ও জোরপূর্বক যৌনবৃত্তিতে বাধ্য করতে নির্যাতন, কর্মচারীদের মারধোরের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় তাকে গ্রেপ্তারের এ দাবি উঠেছে।

 

রবিবার দুপুর সাড়ে ১২ টায় কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে খুরুশকুলের সর্বস্তরের জনসাধারণ ও মুনিরিয়া বাহারুল উলুম মাদরাসার প্রাক্তন শিক্ষার্থী পরিষদের ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, সাবেক চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন, সাবেক চেয়ারম্যান মাষ্টার আবদুর রহিম, খুরুশকুল ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি কাজী দিদারুল আলম, এডভোকেট সাইফুল্লাহ নুর, এডভোকেট খালেদ সালাহউদ্দিন, কাওয়ারপাড়া সমাজ কমিটির সভাপতি আবুল কালাম, কুলিয়াপাড়া সমাজ কমিটির সভাপতি সোলায়মান বাদশাহ, ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন, খুরুশকুল ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।

 

সমাবেশে ২৪ ঘন্টার মধ্যে অত্যাচারী নাছির উদ্দিন বাচ্চুকে গ্রেফতারের দাবি জানানো হয়।

 

এদিকে, বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি কক্সবাজার জেলা শাখা থেকে শালিক রেস্টুরেন্টের মালিক নাছির উদ্দিন বাচ্চুর সদস্যপদ স্থগিত করা হয়েছে। এ ঘটনায় সমিতির পক্ষে গঠিত হয়েছে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি।

 

সভাপতি নাইমুল হক চৌধুরী টুটুল বলেন, এ ঘটনায় আহতদের হাসপাতালে দেখতে গিয়েছিলাম। শরীরে আঘাতের যে চিহ্ন দেখেছি তা অমানবিক। আহত ও অন্যান্য কর্মচারিদের সাথে সমিতির পক্ষে আলাপও করা হয়েছে। বিষয়টি সমিতির পক্ষে নিজস্ব নিয়মে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

 

তিনি ফৌজধারি অপরাধে সংঘটিত ঘটনাটি পুলিশকে নিজস্বভাবে ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান।

 

শালিক রেস্টুরেন্টের মালিকের বিরুদ্ধে নারী কর্মচারীদের যৌন নিপীড়ন ও জোরপূর্বক যৌন বৃত্তি করতে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। একই সঙ্গে এর প্রতিবাদ করলে অন্যান্য কর্মচারিদের উপর চালানো হয় নির্মম নির্যাতন। যার জন্য তৈরি করা হয়েছে স্টাফ কোয়ার্টার নামের একটি বন্দিশালাও। যেখানে ২৪ ঘন্টায় নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকে মালিকের দেয়া অস্ত্রধারী কয়েকজন যুবক।

 

বৃহস্পতিবার রাতে কক্সবাজার সদর থানায় পৃথকভাবে এ ঘটনায় ২ টি এজাহার দায়ের হয়েছিল। যার একটি নিয়মিত মামলা হিসেবে শনিবার লিপিবদ্ধ করেছে পুলিশ।

 

এজাহার ও ভূক্তভোগিদের অভিযোগ, কলাতলীতে বহুল পরিচিত শালিক রেস্টুরেন্টের কর্মচারী হিসেবে ২১ জন নারীকে নানানভাবে নিয়োগ দিয়েছেন মালিক নাছির উদ্দিন বাচ্চু। আর সব নারীই বয়সে তরুণী এবং উপজাতি সম্প্রদায়ের। এসব কর্মচারিদের নিয়োগ প্রদানের ক্ষেত্রে শর্ত দেয়া হয়েছে স্টাফ কোয়ার্টারের রাত্রি যাপন বাধ্যতামূলক। আর ওই স্টাফ কোয়ার্টার ঘিরে রয়েছে সশস্ত্র পাহারাদার। ওই স্টাফ কোয়ার্টারকে নির্যাতনের বন্দিশালা হিসেবে ব্যবহার করেন শালিকের মালিক। যেখানে প্রতিনিয়ত যৌন নিপীড়নের পাশাপাশি শারীরিক নির্যাতন আসছেন যাচ্ছে বাচ্চু। ১১ ও ১২ অক্টোবর টানা নির্যাতনের শিকার হওয়ার পর জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯ নম্বরে ফোন করার পর উদ্ধার হয় এক উপজাতি তরুণী। হাসপাতালে চিকিৎসাধিন রয়েছে কর্মচারি খালেক ও আবদুল্লাহ।

 

এইচ এম কাদের,সিএনএন বাংলা২৪