ই-পেপার | মঙ্গলবার , ১৮ই জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ত্রিপুরা-বাংলাদেশ বই উৎসবে কবি হিমাদ্রী সম্মাননা পেলেন কামাল পারভেজ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম :

 

প্রথমবারের মতো বড় আয়োজনে বই উৎসব পালনের মধ্যদিয়ে বিগত ত্রিশ বছরের পথচলাকে নতুন দিগন্তে শুরু করলো স্রোত প্রকাশনা ও স্রোত লিটল ম্যাগাজিনের সাহিত্য সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠান।

 

শুক্রবার সন্ধ্যায় আগরতলা প্রেসক্লাবের তৃতীয় তলায় নৃপেন চক্রবর্তী শতবর্ষী হলে উদ্বোধন হয় দুদিনব্যাপী বাংলাদেশ-ত্রিপুরা বই উৎসব। স্রোত প্রকাশনার ত্রিশ বছর পূর্তি উপলক্ষে কথা সাহিত্যিক দেবব্রত দেব প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে মেলার শুভ সূচনা করেন। স্বাগত ভাষণ দেন স্রোতের কর্ণধার গোবিন্দ ধর।

 

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি দেবব্রত দেব তার বক্তব্যে বলেন, স্রোত প্রকাশনার শুরুর দিন থেকেই গোবিন্দ ধরের সঙ্গে পরিচয়। কুমারঘাটের মতো প্রত্যন্ত এলাকা থেকে প্রকাশনার মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ শৈল্পিক কাজে নিরন্তর লেগে থাকা সাহিত্যের প্রতি অগাধ ভালোবাসা না হলে কখনোই সম্ভব নয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত না থেকেও অনলাইনে মেলার সাফল্য কামনা করে বক্তব্য পেশ করেন রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকাশন বিভাগের অধ্যক্ষ রামকুমার মুখোপাধ্যায়।বিশেষ অতিথি রাজ্যের বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব তথা চিত্রশিল্পী স্বপন নন্দী বলেন, সুস্থ সংস্কৃতির বিকাশে এই প্রচেষ্টা সত্যিই প্রশংসনীয়। বাংলাদেশ থেকে আগত এবং মানুষ পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক আনোয়ার কামাল বলেন, ভারত-বাংলা মৈত্রীর ক্ষেত্রে স্রোত আয়োজিত বইমেলা একটি মাইলস্টোন হয়ে থাকলো। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন লেখিকা নিয়তি রায়বর্মণ ত্রিপুরা, সম্মানিত অতিথি বুক সেলার্স এন্ড পাবলিশার্স এসোসিয়েশনের সম্পাদক রাখাল মজুমদার, আগরতলা স্রোত প্রকাশনা মঞ্চের সম্পাদক বিজন বোস, বাংলাদেশ থেকে আগত দৈনিক আমাদের নতুন সময় পত্রিকার চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান ও লেখক কামাল পারভেজ, পূর্বাপরের সম্পাদক হাসনাইন সাজ্জাদি, নন্দন বইঘর প্রকাশক সুব্রতকান্তি চৌধুরী, ত্রিপুরার লেখিকা ক্রাইরী মং চৌধুরী, পুরাতন পাতা প্রকাশের সম্পাদক রমজান বিন মোজাম্মেল, আসামের নব দিগন্ত প্রকাশনীর মিতা দাস পুরকায়স্থ, কবি জহর দেবনাথ- আসাম, কারুকাজ ম্যাগাজিন সম্পাদক আমিরুল ইসলামসহ আরো অনেকে। অনুষ্ঠানে সদ্য প্রয়াত আসামের হাইলাকান্দির সাহিত্য পত্রিকার সম্পাদক কবি বিজিৎকুমার ভট্টাচার্য, বাংলাদেশের কবি আসাদ চৌধুরী, হাংরি জেনারেশনের কবি দেবী রায়, কথাসাহিত্যিক প্রদীপ সরকার ও সাংবাদিক পার্থ সেনগুপ্তর উপর স্মৃতিচারণ করে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পন করেন উপস্থিত সকল সাংস্কৃতিক ব্যাক্তিত্বরা। সংগীত পরিবেশন করেন বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী গৌর দাস ।

 

আবৃত্তি নীড়ের পরিবেশিত আবৃত্তি অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলের প্রশংসা অর্জন করে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশিষ্ট লোকগবেষক ও প্রাবন্ধিক অশোকানন্দ রায়বর্ধন। দ্বিতীয় দিন অনুষ্ঠান শুরু হয় সকাল দশটায়, এতে সারাদিন তিন পর্বে অনুষ্ঠান চলতে থাকে। প্রথম পর্বে আলোচনা ও সংগীত পরিবেশন, দ্বিতীয় পর্বে কবি সম্মেলনে কবিতা আবৃত্তি ও স্বরচিত কবিতা পাঠ। কবি সম্মেলনে ত্রিপুরা রাজ্যের বিভিন্ন ভাষায়ও কবিতা পাঠ হয় ও আনন্দমুখর হয়ে উঠে অনুষ্ঠানটি। আলোচকদের আলোচনার বিষয়ে আশির দশকের দাঙ্গার প্রেক্ষাপটে ত্রিপুরার গল্পবিশ্ব এবং শতবর্ষে বিমল চৌধুরী। দুটি বিষয়ে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন বিমল চক্রবর্তী, দেবব্রত দেব, ড.সেবিকা ধর, অশোকানন্দ রায়বর্ধন।

 

ত্রিপুরার লিটল ম্যাগাজিন ও স্রোতের তিরিশ বছর ত্রিপুরার লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলন এবং বাংলাদেশের প্রকাশনা শিল্প। আলোচনায় অংশ গ্রহণ করেন কবি শুভ্রশংকর দাশ, আমিরুল ইসলাম, আনোয়ার কামাল, নিয়তি রায়বর্মন। কবি সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন করপন হাসনাইন সাজ্জাদী। তৃতীয় পর্বে স্রোতের সাহিত্য সাংস্কৃতিক মেল বন্ধনের অঙ্গ ত্রিপুরা বাংলাদেশ বইমেলা আগামীদিন বৃহত্তর রূপ হবে বলে সভাপতি বক্তব্যে তুলে ধরেন এবং স্রোত অনুষ্ঠানে সংক্ষিপ্তভাবে নিজেদের অভিমত ব্যক্ত করেন। বই উৎসবে বিহার, আসাম, নেপাল ও বাংলাদেশ থেকে লিটল ম্যাগাজিন সম্পাদক ও প্রকাশকরা তাদের বইপত্র নিয়ে উপস্থিত হন। অনুষ্ঠানে শেষ দিকে সাহিত্য সম্মাননা দেওয়া হয় এবং অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন অনুষ্ঠানের সভাপতি অশোকানন্দ রায়বর্ধন।

 

এইচ এম কাদের,সিএনএন বাংলা২৪