ই-পেপার | বৃহস্পতিবার , ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

পর্যটক হারাতে বসেছে বাঁশখালীর বাহারছড়া সমুদ্রসৈকত

শিব্বির আহমদ রানা, বাঁশখালী:

পর্যটন সম্ভাবনাময় জনপদ বাঁশখালীর ‘বাহারছড়া সমুদ্রসৈকত’ চট্টগ্রামের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্র সৈকত। শুক্রবার ছুটির দিনসহ প্রতিদিন স্থানীয় লোকজন ও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের পর্যটকের আনাগোনা হয় এখানে। কিন্তু বাহারছড়া সমুদ্র সৈকতের সংযোগ কালীপুর ছপির দোকান থেকে বশিরউল্লাহ্ মিয়াজি বাজার থেকে সমুদ্র সৈকত পর্যন্ত দীর্ঘ ৯ কিলোমিটারের সড়কটির অবস্থা বেহাল। বড় বড় গর্ত ও খানাখন্দে সড়কের নাজুক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। একটু বৃষ্টি হলেই জল-কাদায় নাকাল হয়। এমনিতে সরু সড়ক, তার ওপর খানাখন্দের ফলে যাত্রীসাধারণ ও যানবাহন চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। নিয়মিত সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পতিত হচ্ছে যাত্রী সাধারণকে।

 

সরেজমিনে দেখা যায়, সমুদ্র সৈকত সংযোগ বশিরউল্লাহ মিয়াজী বাজার বেইলি সেতুর বেহাল দশা। সেতুর বেশ কয়েকটি পাটাতনে মরিচা ধরে ভেঙ্গে পড়ায় সেতুর সংযোগ সড়কের সাধারণ যাত্রীদের চলাচল খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। যদি অতিদ্রুত সেতুর সংস্কার করা না হয়, তাহলে সংযোগ সড়ক দিয়ে ওই এলাকার প্রায় ১৩ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষের সাথে উপজেলার প্রধান সড়কের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সাধারণ যাত্রীসহ যানবাহন চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়া সেতুর উপরে রাতের আঁধারে চলাচলের সময় ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটেই চলেছে নিত্যদিন।

 

ওই সড়ক দিয়ে নিয়মিত যাতায়তকারী সিএনজি চালক আব্দুল করিম বলেন, ‘বাহারছড়া সমুদ্র সৈকতে নিয়মিত পর্যটকরা যাতায়ত করে এ সড়ক দিয়ে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় হচ্ছে, সড়কটি যেমন সরু তার ওপর বড় বড় গর্তের সৃষ্টির ফলে সাধারণ যাত্রী, বয়স্ক ও ডেলিভারী রোগীদের নিয়ে যাতায়াত করা খুবই দূরহ হয়ে পড়ে। আজ থেকে প্রায় দীর্ঘ ৭ থেকে ৮ বছর ধরে সংস্কারবিহীন সড়কটিতে নেই কারো সুনজর। সড়কের বেহাল অবস্থা ও সড়ক সংযোগ বশিরউল্লাহ মিয়াজি বাজার বেইলী সেতুর বেশকয়েকটি পাটাতন সরে গিয়ে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এটির সংস্কার খুবই জরুরী। অন্যথায় সমুদ্র সৈকত পর্যটক হারাতে বসবে।’

 

বাহারছড়া বশির উল্লাহ্ মিয়াজি বাজার পশ্চিমকূল বণিক সমিতির সিনিয়র সহ-সভাপতি ডা. শাহরিয়ার আব্দুল্লাহ পারভেজ বলেন, আজ থেকে দীর্ঘ ৭ বছর আগে বশির উল্লাহ মিয়াজি বাজার সড়ক সংস্কারের জন্য স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যাপক তাজুল ইসলামকে ব্যক্তিগতভাবে দরখাস্ত দিয়েছি। গত ইউপি নির্বাচনের আগে বাজারের পুর্বাংশের একচেইন পর্যন্ত অংশের সংস্কার করেছে। বর্তমানে সড়কের যে বেহাল দশা, একইসাথে সেতুর পাটাতন ভেঙ্গে যাওয়ায় ঝূঁকির মধ্যে পারাপার করছে সাধারণযাত্রী ও যানবাহন। প্রতিনিয়ত মারাত্মক দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে লোকজন। পশ্চিমে উপকূলীয় বাহারছড়া সমুদ্র সৈকতে প্রতিদিন শতশত দর্শনার্থী এ সেতুর উপর দিয়ে যাতায়াত করে। দ্রুতই সড়ক ও সেতুর সংস্কার করা না হলে দূর্ভোগ পোহাতে হবে হাজার হাজার লোকজনকে।’

 

এ বিষয়ে বাহারছড়া ইউপির চেয়ারম্যান অধ্যাপক তাজুল ইসলামকে ফোন দিয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, বশির উল্লাহ মিয়াজি বাজার সড়ক সংস্কারের টেন্ডার সম্পন্ন হয়েছে। চলতি মাসের শেষে সড়কের কাজ শুরু হবে। তাছাড়া বেইলী সেতুর সংস্কারের জন্য উপজেলা প্রকৌশলীকে অবগত করেছি। তিনি স্টিমিট করে পাঠিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।’

 

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী কাজী ফাহাদ বিন মাহমুদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রতিবেদককে বলেন, ‘ বশির উল্লাহ মিয়াজি বাজার সড়কের টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। আগামী একমাসের মধ্যে সড়কের কাজ শুরু হবে। বেইলী সেতুর বিষয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান আজকেই আমাকে অবগত করেছে। সেতুর স্টিমিট প্রস্তুত করে উর্ধ্বতন কতৃপক্ষ বরাবর পাঠিয়েছি। জনদূর্ভোগ লাঘবে দ্রুত সেতুর সংস্কারের কাজ সম্পন্ন করা হবে বলে জানান তিনি।

 

এইচ এম কাদের,সিএনএন বাংলা২৪