ই-পেপার | রবিবার , ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

পটিয়ায় দুই বছরে ৫ শতাধিক গরু চুরি : পুলিশ পরিচয়ে লুট আতঙ্কে খামারিরা!

আবদুল হাকিম রানা, পটিয়া:

চট্টগ্রামের পটিয়ায়
পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি), আবার কখনো পুলিশ এবং র‍্যাব পরিচয়ে প্রায়ই গরু ডাকাতি করছে একটি সংঘবদ্ধ গরুচোর চক্র। খামার মালিকদের অস্ত্রের মুখে বেশিরভাগই গরু নিয়ে যাচ্ছে ডাকাতদল। ফলে চরম আতঙ্কে রয়েছেন খামারিরা। প্রশাসনের তৎপরতা কম থাকায় গরু চুরি কিংবা ডাকাতি বেড়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয়রা। তবে প্রশাসন বলছে, কৌশল বদলে চোর সিন্ডিকেট এ অপকর্ম করে যাওয়ায় তা নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

 

জানা যায়, সর্বশেষ গত রোববার গভীর রাতে উপজেলার কুসুমপুরা ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডস্থ থানা মহিড়া দাঁইয়াপাড়া নুরুল ইসলাম মেম্বারের বাড়ি এলাকার শামশুল আলমের খামার থেকে ডাকাতদল ডিবি পুলিশ পরিচয়ে অস্ত্রের মুখে প্রায় ৮ লাখ টাকা দামের ৩টি গরু নিয়ে যায়। পথচারী ও স্থানীয় ১০-১৫ জনকে একটি টিনশেডের ঘরে মুখ-হাত-পা বেঁধে রেখে ১০টি মোবাইল ফোনসহ ৫০ হাজার টাকাও লুট করে তারা। তাদের পরিচয় জানতে চাওয়ায় মনছুর আলম নামের এক ব্যাক্তিকে অস্ত্র দিয়ে মাথায় গুরুতর জখম করে ডাকাতদল পালিয়ে যায়।

 

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সিহাব জানান, রাত সাড়ে ১২টার দিকে তিনি শান্তিরহাট দোকান থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে রাস্তায় কয়েকজনকে সাদা চেক শার্ট পরা অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে তাদের পরিচয় জানার আগেই মুখ বেঁধে ঘরে তালা মেরে রাখে তাকে । তিনি জানান, শুধু তাকে নয়, আরও হাত-পা-মুখ বাঁধা হয় ১২ জনের। ডাকাতদল ডাকাতি করে চলে যাওয়ার পর তাদের স্থানীয়রা উদ্ধার করে। ডাকাতদলের প্রত্যেকের হাতে অস্ত্র ছিল।

 

মারধরের শিকার মনছুর আলম আরও জানান, তিনি জিজ্ঞেস করায় ডাকাতদল তাকে ডিবি পুলিশ পরিচয় দেয়। এর এক পর্যায়ে তিনি তাদের পরিচয়পত্র চাওয়ায় তাকে অস্ত্র দিয়ে মাথায় আঘাত করে, ফুলা জখম করে।

 

এ ঘটনায় ডেইরি ফার্মের মালিক শামশুল আলমের পুত্র মো. লোকমান বাদী হয়ে পটিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। তিনি অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিন ধরে গরু ডাকাত চক্র গভীর রাতে পটিয়ার বিভিন্ন ফার্মে হানা দিয়ে গরু লুট করলেও প্রশাসনের তেমন কোনো তৎপরতা নেই। বিভিন্ন পরিচয়ে ডাকাতদল অস্ত্রের মুখে খামারিদের গরু লুট করায় আতঙ্কে আছেন তারা। এমন হলে খামারিরা গরু লালন-পালনে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। একইভাবে রাতের আঁধারে কুসুমপুরা ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের এডভোকেট এম হোসাইন রানার ডেইরী ফার্ম থেকে গত ৩০ জুলাই রাতে ৪ টি ৭ লক্ষ টাকা দামের গরু চুরি করে নিয়ে যায়। এডভোকেট হোসাইন রানা এ নিয়ে পটিয়া থানায় মামলাও দায়ের করেন।

কিন্তু বিগত ১ মাসেও তার চুরি যাওয়া গরু উদ্ধার হয়নি। উল্টো চোরের দল এ অঞ্চলে রাতের আঁধারে অস্ত্র নিয়ে আতংক ছড়াচ্ছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পটিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ প্রিটন সরকার জানান, উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় গরু লুটের ঘটনায় আমরা ইতিমধ্যে কয়েকজনকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনেছি। পটিয়ার পুলিশ এ ব্যাপারে কাজ করছে।

 

তবে জনপ্রতিনিধি ও সাধারণ মানুষকে সাথে নিয়ে এলাকা ভিত্তিক প্রতিরোধ করার বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত গ্রহন করেছি। এতে এ সমস্যা দ্রুত সমাধান হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যাক্ত করেন।

 

এইচ এম কাদের,সিএনএন বাংলা২৪