পেকুয়া উপজেলা প্রতিনিধি:
কক্সবাজারের পেকুয়ায় মসজিদের জায়গা দখল বেদখল নিয়ে কমিটির লোকজন ও গ্রামবাসীর উপর ইউপি সদস্যের নেতৃত্বে হামলা করা হয়েছে। এ ঘটনায় উভয়পক্ষে মহিলাসহ ১৪ জন আহত হয়েছে। আহতদের উদ্ধার করে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
২ সেপ্টেম্বর (শনিবার) বেলা ১১ টায় উপজেলার রাজাখালী ইউনিয়নের নতুন ঘোনা এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।
এ ঘটনায় আহতরা হলেন, ওই এলাকার মৃত পেঠানের ছেলে হাবিব উল্লাহ (৫০), মৃত বদিউল হকের ছেলে মুস্তাফিজ (১৯), স্ত্রী আমেনা বেগম (৪৮), মৃত নুরুল হকের ছেলে নবির হোসেন ওরফে নুরুল হুদা মাঝি (৪০), তাঁর স্ত্রী ফাতেমা বেগম (৩৪), মাহমুদুল করিমের ছেলে কবির হোসেন (৪০), মৃত লাল মিয়ার ছেলে নুর মোহাম্মদ (৬০), আবদুল হকের স্ত্রী আলিমুন্নেছা (৫০), মৃত কালা মিয়ার ছেলে মাহমুদুল করিম (৪০), কবির হোসেনের ছেলে ও ৫ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী শাহদত হোসেন (১৩), শহর আলীর ছেলে জাকের হোসেন (৪৫), জাবের আহমদ (৪০), আবুল কালাম (৫৫) ও তাঁর ছেলে ৫ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী জিয়াবুল করিম (১৩), আব্দুল জব্বারের ছেলে আইয়ুুব আলী ও মো. হানিফের স্ত্রী জোৎস্না আক্তার। আহতদেরকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আহত মুস্তাফিজ ও নবীর হোসেনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদেরকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে রেফার করেন।
ঘটনার পরপরই পেকুয়া থানার ওসি (তদন্ত) সুদীপ্ত শেখর ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
এদিকে আহত হাবিব উল্লাহ, নুর মোহাম্মদ সাংবাদিকদের বলেন, নতুনঘোনা জামে মসজিদের জায়গা নিয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য হোসাইন শহীদ সাইফুল্লাহর সাথে দীর্ঘদিন ধরে মসজিদ কমিটির লোকজন ও গ্রামবাসীর বিরোধ চলে আসছিল। সেই বিরোধের জের ধরে মসজিদের জায়গা জবরদখল করার চেষ্টা করে। মসজিদ পরিচালনা কমিটি সদস্য ও নিরীহ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলা করে ৬ জনকে জেলেও পাঠান সাইফু মেম্বার। কয়েকদিন আগে সাইফু মেম্বারের বিরুদ্ধে এলাকাবাসী মানববন্ধনও করেছে।
এনিয়ে গ্রামবাসীর সাথে তাঁর বিরোধ চরম আকার ধারণ করে। এর জেরে সকালে সাইফু মেম্বারের নেতৃত্বে তাঁর বাবা কামাল হোসেন, ভাই মিজবাহ, জাকের হোসেন, আইয়ুব আলী, কালু, আব্দু জাব্বার, জসিম, দিদার, রুহুল কাদের, আবুল কালাম, মোজাহের বাচ্চু, আরিফ, আবদুর রহমান ফকিরসহ ২০-২৫ জনের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে গ্রামবাসীর ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এসময় তাদের এলোপাতাড়ি ধারালো অস্ত্রের আঘাতে নারীসহ ৯ জন গুরুতর জখম হন।
ইউপি সদস্য হোসাইন শহীদ সাইফুল্লাহ বলেন, জমি তাঁর কেনা সম্পত্তি। তাঁর নামে দলিল ও খতিয়ান সৃজন রয়েছে। মসজিদকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে আমার জায়গা গ্রাস করতে চায় মাহমুদুল করিম, আবদুল হক, নুরুল হুদা গং। সকালে নতুনঘোনা স্টেশনে বৈঠকের কথা বলে আমার লোকজনের ওপর হামলা চালায়। এসময় তাঁর পক্ষের ৫ জন আহত হয়।
এদিকে সৃষ্ট ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। যেকোনো মুহুর্তে দুপক্ষের মধ্যে ফের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা।
এ বিষয়ে পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ওমর হায়দার বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।