শিব্বির আহমদ রানা, বাঁশখালী
চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে কর্মরত সাংবাদিকদের সাথে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী হিসেবে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী এডভোকেট এএইচএম জিয়াউদ্দিন এর মতবিনিময় সভা শনিবার (৫ আগস্ট) দুপুরে পৌরসদরস্থ রয়েল হান্ডি রেস্টুরেন্টে অনুষ্ঠিত হয়।
মতবিনিময় সভায় এডভোকেট এএইচএম জিয়া উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক হিসেবে ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতির সাথে জড়িত। দলের দুঃসময়ে একজন সংগঠক হিসেবে সততা, নৈতিকতা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করেছি। আমি বাঁশখালীর স্বার্থে, মানুষের কল্যাণে কাজ করতে চাই। বিগত কয়েকদশক থেকে বাঁশখালীর জনগণের কল্যানে কাজ করে আসছি।
তিনি বলেন, অবহেলিত জনপদ বাঁশখালীর বৃহত্তর উন্নয়নে সুযোগ্য নেতৃত্বের কোনো বিকল্প নাই। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমি আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী। বাঁশখালীর মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে দল আমাকে মনোনয়ন দিলে বাঁশখালীর কাঙ্খিত উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারবো।’
উল্লেখ্য, রাজনৈতিক অঙ্গণে একজন ক্লিন ইমেজের ত্যাগী নেতা হিসেবে সর্বমহলে সুপরিচিত হয়ে উঠেছেন তিনি। এডভোকেট জিয়া উদ্দিন বংশীয় সূত্রে প্রসিদ্ধ আওয়ামী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা এডভোকেট আবদুস সবুর ছিলেন বাঁশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। ১৯৭৩ সালে তিনি রেডক্রস চট্টগ্রামের সহসভাপতি নিযুক্ত হন। তিনি কলকাতা ইসলামীয়া কলেজে অধ্যয়নকালে বেকার হোস্টেলে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রুমমেট ছিলেন। আন্দোলন-সংগ্রামে বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর হিসেবে আমৃত্যু দলের জন্য কাজ করেছকন। তাঁর দাদা মরহুম আবদুল লতিফ খানখানাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের (ডিস্ট্রিক চেয়ারম্যান) ৭ বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন। তাঁর নানা এএইচএম মোফাখখর ছিলেন একজন প্রথিতযশা আইনজীবী। তিনি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ছিলেন। মাতা মরহুমা বেগম মমতাজ চৌধুরী ছিলেন একজন সুসাহিত্যিক। তিনি মমতাজ সবুর নামে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় লেখালেখি করতেন। তাঁর মৌলিক গ্রন্থের সংখ্যা ছয়টি। তিনি ২০০২ সালে চট্টগ্রাম ডাইজেস্ট কর্তৃক রত্নগর্ভা মা পুরস্কারে ভূষিত হন।
এডভোকেট এএইচএম জিয়া উদ্দিন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লোক প্রশাসন বিষয়ে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। এএইচএম কফিল উদ্দিন এলিট গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের জেনারেল ম্যানেজার। মেঝভাই প্রথিতযশা আইনজীবী বিচারপতি বোরহান উদ্দিন বর্তমানে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপীল বিভাগের বিচারপতি।
এডভোকেট এএইচএম জিয়া উদ্দিন তাঁর বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে রাজনীতি, সমাজসেবা ও আইন সেক্টরের বিভিন্ন শীর্ষ পদে গুরু দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ২০০৩ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত স্বেচ্ছাসেবক লীগ চট্টগ্রাম মহানগরের আহবায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এই দীর্ঘ সময়ে দলের দুঃসময়েও তিনি চট্টগ্রাম মহানগরে আওয়ামী রাজনীতিকে চাঙ্গা রাখেন। তাঁর নেতৃত্বে বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্য ও কর্মতৎপরতা পরিলক্ষিত হয়। তিনি সম্মেলনের মধ্য দিয়ে আহবায়ক কমিটি বিলুপ্ত ও নতুন কার্যকরী কমিটি উপহার দেন। তিনি ১৯৮৯ সালে পাথরঘাটা ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি, ১৯৯৪ সালে বঙ্গবন্ধু ল’ টেম্পল ছাত্র সংসদের নির্বাচিত ভিপি ও ১৯৯০ সালে চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজ ছাত্রলীগের সিনিয়র সহসভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৪ সালে তিনি কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সিনিয়র সদস্য নিযুক্ত হন। এডভোকেট জিয়া উদ্দিন ১৯৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন ও ১৯৯৬ এর গণ আন্দোলনে রাজপথে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন।
তিনি ২০০৮ সালে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০১৭ সালে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের ডেপুটি এটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব লাভ করেন। তিনি ২০২০, ২০২১ ও ২০২২ সালে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির টানা ৩ বারের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার গৌরব অর্জন করেন।
এছাড়াও তিনি বাঁশখালী সমিতি চট্টগ্রামের সহ-সভাপতি, চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের আজীবন সদস্য, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সহ বিভিন্ন সামাজিক ও সেবামূলক সংগঠনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত আছেন।
আগামীতে জাতীয় নির্বাচনে তিনি প্রার্থী হবেন। তবে দল যাকে যোগ্য মনে করে নমিনেশন দিবেন অতীতের মত তৃণমূল নেতাকর্মীদেরকে নিয়ে দলীয় প্রার্থীকে বিজয় করার জন্য নিরলস কাজ করে যাবেনও বললেন তিনি।
এ সময় বাঁশখালী আওয়ামীলীগের বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ ও বাঁশখালীতে কর্মরত সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।