আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ভারতে চলমান লোকসভা নির্বাচনের মধ্যেই বহুল বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনে (সিএএ) প্রথমবার ১৪ জন বিদেশিকে নাগরিকত্ব দিয়েছে বিজেপির সরকার। পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশে কথিত ‘নিপীড়নের শিকার’ অমুসলিম অভিবাসীদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দিতে প্রণীত এই আইন প্রায় দুই মাস আগে কার্যকরের ঘোষণা দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার (১৬ মে) ওই আইনের অধীনে এ ১৪ জনকে নাগরিকত্বের সদনপত্র দেওয়া হলো। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব অজয় কুমার ভাল্লা দিল্লিতে আবেদনকারীদের নাগরিকত্বের সনদপত্র হস্তান্তর করেন।
সিএএ-এর অধীনে পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তান থেকে ভারতে যাওয়া নথিবিহীন অমুসলিম অভিবাসীদের নাগরিকত্ব আবেদনের যোগ্যতার সময়কাল ১১ বছর থেকে কমিয়ে ৫ বছর করা হয়েছে। অর্থাৎ আগে ভারতীয় নাগরিকত্ব আবেদনের জন্য দেশটিতে ১১ বছর থাকতে হতো, এখন পাঁচ বছর ভারতে থাকা কেউ এই আবেদন করতে পারবেন।
নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে বিজেপি ২০১৯ সালে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এসেই ঘোষণা দেয়, তারা ভারতের নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করবে। কংগ্রেস, তৃণমূলসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের তুমুল বিরোধিতা সত্ত্বেও আইনটি সংসদে পাস করা হয়।
এ আইন অনুসারে, পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের মতো মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ থেকে যেসব অমুসলিম অভিবাসী (হিন্দু, খ্রিস্টান, শিখ, বৌদ্ধ ও পার্সি সম্প্রদায়) ‘নিপীড়নের মুখে’ টিকতে না পেরে ভারতে চলে গেছেন, তাদের সেদেশে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।
বিজেপি সরকারের দাবি, সংশোধিত এ আইন পাশের দেশগুলোতে ‘নিপীড়নের শিকার’ সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা দেওয়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে।
তবে কংগ্রেস, তৃণমূলসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজ এই আইনটিকে বরাবরই সাম্প্রদায়িক চিন্তাপ্রসূত এবং ভোটকেন্দ্রিক বলে অভিযুক্ত করে আসছে। তাদের বক্তব্য, উগ্র হিন্দুত্ববাদী ভোটারদের আরও জোটবদ্ধ করে বাগিয়ে নিতেই বিজেপি ভোটের আগে এ আইন কার্যকর প্রক্রিয়া শুরু এবং ভোটের মধ্যে প্রথম নাগরিকত্ব প্রদান করেছে।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি তার রাজ্যে সিএএ কোনোভাবেই কার্যকর হতে দেবেন না বলে হুঁশিয়ারি দিয়ে আসছেন।