সিএনএন বাংলা ডেস্ক:
নোয়াখালীতে পরকীয়ার জেরেই মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহিদুল ইসলাম। বুধবার রাতে সুধারাম মডেল থানায় সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই তথ্য জানান।
পুলিশ সুপার জানান, এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত নোয়াখালী পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের হরিনারায়ণপুরের কচি মিয়ার বাসা থেকে আলতাফ হোসেনকে (২৮) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি একাই মা নূর নাহার বেগম (৪০) ও মেয়ে ফাতেমা আজিম প্রিয়ন্তিকে (১৬) হত্যা করেছেন। পরে আলতাফের মেস থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকুর কভার উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার আলতাফ লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি উপজেলার চরবাদাম ইউনিয়নের মৃত আবুল কালামের পুত্র।
পুলিশ সুপার মো: শহিদুল ইসলাম বলেন, ভিকটিম নূর নাহার বেগমের সঙ্গে প্রবাসে থাকা অবস্থায় ভুল নাম্বারে পরিচয় হয় আসামি আলতাফ হোসেনের। একপর্যায়ে দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আসামি আলতাফকে ওমান থেকে দেশে এসে ব্যবসা করার জন্য বলেন ভিকটিম। ব্যবসার সম্পূর্ণ মূলধন এবং তার সব দেনা বহন করার আশ্বাসও দেন। ভিকটিমের আশ্বাসে এক সপ্তাহ আগে আলতাফ হোসেন ওমান থেকে দেশে আসেন। এসে ভিকটিম নূর নাহার বেগমের কাছে ব্যবসার টাকা দাবি করলে দিতে টালবাহানা করেন নুর নাহার।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, বুধবার সকালে টাকা চাওয়ার জন্য ভিকটিমের মাইজদীর বাসায় যান আসামি। এসময় ভিকটিম টাকা দিতে অস্বীকার করেন। এনিয়ে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে ভিকটিম হুমকি দেন যে, টাকা নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করলে আলতাফকে পুলিশে ধরিয়ে দেওয়া হবে। এ সময় ধাক্কা দিয়ে ঘর থেকে বের করে দিতে গেলে আসামি ক্ষিপ্ত হয়ে সঙ্গে থাকা ছুরি দিয়ে নুর নাহারকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করেন। চিৎকার শুনে মাকে রক্ষা করতে এগিয়ে গেলে আসামি ভিকটিমের মেয়ে ফাতেহা আজিম প্রিয়ন্তিকেও উপুর্যুপরি ছুরিকাঘাত করেন। এতে আহত প্রিয়ন্তি দৌঁড়ে নিচতলার ভাড়াটিয়ার বাসার দরজায় ধাক্কা দেন। ভাড়াটিয়া দরজা খুলে দেওয়ার পর প্রিয়ন্তি ডাইনিং রুমের মেঝে অজ্ঞান হয়ে পড়েন। প্রিয়ন্তির পিছু পিছু আসামি আলতাফ হোসেন দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টা করলে স্থানীয়দের সহায়তায় পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।
এদিকে, ছুরিকাঘাতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে ভিকটিম নুর নাহার বেগম ঘটনাস্থলেই মারা যান। স্থানীয়রা হাসপাতালে নেওয়ার পথে মেয়ে প্রিয়ন্তিরও মৃত্যু হয়।
পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার আসামি আলতাফ হোসেনকে থানা হেফাজতে নিয়ে পুলিশ বিভিন্নভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করে। একপর্যায়ে আসামি পুলিশের কাছে ঘটনার বিস্তারিত বলেছে।
এইচ এম কাদের,সিএনএন বাংলা২৪