মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, ময়মনসিংহ:
পোশাক পড়া ব্যক্তিটি সাধারণ মানুষ নয়, তিনি একজন মানবিক ভূয়া পুলিশ। ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে এক ভুয়া পুলিশকে আটক করেছে ঈশ্বরগঞ্জ থানা পুলিশ। রোববার ভোরে উপজেলার কবীর ভুলসোমা এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। বিষয়টি নিয়ে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
জানা যায়, মোবাইলে পরিচয়ের সুত্র ধরে প্রেম তারপর প্রেমিকার বাড়িতে এসে পুলিশের এস আই পরিচয় দিয়ে বিয়ে করে অবস্থান করছিলেন মনির খান নামে এক ব্যাক্তি। এসময় নিজের পরিচয় দিতে গিয়ে এস আই পরিচয় ছাড়াও ভিজিটিং কার্ড বিতরণ ও পুলিশ পরিচয়পত্র দেখান। এসময় স্থানীয়দের সন্দেহ তৈরি হলে খবর দেয় ঈশ্বরগঞ্জ থানায়। খবর পেয়ে থানার এস আই উমর ফারুক রাজুর কাছে ভুয়া এস আই হিসাবে ধরা খেয়ে আটক হয়। রোববার ভোর রাতে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার কবীর ভুলসোমা গ্রামে এমন ঘটনাটি ঘটে। বিষয়টি নিয়ে সোমবার রাতে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার মাইজবাগ ইউনিয়নের কবির ভুলসোমা গ্রামের আব্দুল খালেকের মেয়ের গত ২ ফেব্রুয়ারি বিয়ে হয়েছে একজন এস আই এর সাথে। হঠাৎ এমন ঘটনা নিয়ে গ্রামেই কানাঘুষা শুরু হয়। এর মধ্যে জামাই গ্রামে বের হয়ে নিজেকে ভৈরব থানার এস আই হিসেবে চাকুরীতে আছে বলে পরিচয় দেন। সেখানে নাম বলেন মনির খান। কিন্তু এই বিষয়টি এলাকার অনেকের সন্দেহ হলে রোববার রাতে গ্রামের পাশেই মাইজবাগ বাজারে টহলরত ঈশ্বরগঞ্জ থানার এস আই উমর ফারুক রাজুর কাছে এলাকার লোকজন বিষয়টি জানান।
এ বিষয়ে উমর ফারুক জানান, তিনি একটি ভিজিটিং কার্ড পেয়ে রোববার শেষ রাতে ওই এস আই এর খোঁজ করতে কবির ভুলসোমা গ্রামের আব্দুল খালেকের বাড়িতে যান। সেখানে গেলে কথিত এস আই নিজেকে ভৈরব থানার উপপরিদর্শক পরিচয় দিয়ে অসংলগ্ন কথা বলতে থাকেন। আর তখনি বিষয়টি ধরা পড়তে থাকে। এক পর্যায়ে নিজের এস আই এর পরিচয়পত্র দেখান। তখন ওই পরিচয় পত্রের আইডি নাম্বার চেক করে ও ভৈরব থানার দায়িত্বরত ডিউটি অফিসারের কাছে জানতে পারেন এমন নামে ভৈরব থানায় কোনো এস আই নেই। পরে জেরার মুখে স্বীকার করেন তিনি কোনো এস আই নন। বিয়ে করতেই এমন কৌশল অবলম্বন করেছিলেন। এ অবস্থায় শেষ রাতে তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যান।
ঈশ্বরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মাজেদুর রহমান জানান, ভুয়া এই এস আই এর নাম ধরে অনলাইনে চার্জ করলে জানা যায়, তিনি হচ্ছেন মো.আব্দুর রহমানের ছেলে এনামুল কবির মনির খান। বাড়ির ঠিকানা দেখা যায় দুইটি। একটি নেত্রকোনা সদরের নাগড়া ও পূর্বধলা উপজেলার হিরণপুর। তাঁর নামে বিবাড়িয়ার নবীনগর, ডিএমপির শাহআলী ছিনতাইয়ের মামলা ও ময়মনসিংহ কোতোয়ালি থানায় ২০১৬ সালে ছিনতাই করার সময় হত্যাকান্ডের ঘটনায় একটি হত্যা মামলা রয়েছে। এ বিষয়ে আরও খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে। মামলার পস্তুতি চলছে।