চট্টগ্রাম ব্যুরো:
চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের সাবেক সচিব আবদুল আলীম ও চট্টগ্রাম কলেজের সাবেক অধ্যাপক মুহাম্মদ ইদ্রিস আলীর বিরুদ্ধে সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ মামলা দায়ের করেন বোর্ডের বর্তমান সচিব নারায়ন চন্দ্র নাথের স্ত্রী বনশ্রী দেবনাথ।
বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলাটি করা হয়। ট্রাইব্যুনাল অভিযোগ আমলে নিয়ে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজমকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
পুলিশ ও শিক্ষা বোর্ড সূত্র জানায়, শিক্ষা বোর্ডের সচিবের ছেলে নক্ষত্র দেব নাথ এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। তবে তিনি একটি বিষয়ে জিপিএ-৫ পাননি। সেজন্য সচিবের পরিবার পুনর্নিরীক্ষণের জন্য আবেদন করতে চায়। কিন্তু পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করতে গিয়ে দেখতে পান, কে বা কারা আগেই নক্ষত্র দেব নাথের ছয় বিষয়ের ১২টি পত্রের আবেদন করে ফেলেছে। বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হওয়ায় সচিবের স্ত্রী বনশ্রী নাথ পুনর্নিরীক্ষণের আবেদনকারীকে শনাক্ত ও আইনি প্রতিকার চেয়ে গত ৪ ডিসেম্বর পাঁচলাইশ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পরে এ নিয়ে তদন্তে নামে পুলিশ।
পুলিশ সূত্র জানায়, অধ্যাপক নারায়ন চন্দ্র নাথের ছেলে নক্ষত্র দেবনাথের এইচএসসি পরীক্ষার ১২টি পত্রের ফলাফল পুনর্নিরীক্ষণের আবেদনকারী ব্যক্তির মুঠোফোন নম্বর উদ্ঘাটন করে আদালতে গত ১৫ জানুয়ারি প্রতিবেদন জমা দেয় পাঁচলাইশ থানা পুলিশ। চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের সাবেক সচিব অধ্যাপক আবদুল আলীমের মুঠোফোন নম্বরটি রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করে পুনর্নিরীক্ষণের আবেদনটি করা হয় বলে সেখানে উল্লেখ করা হয়।
এদিকে অধ্যাপক নারায়ন চন্দ্র নাথকে নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তিকর ও মানহানিকর বক্তব্য দেওয়ায় আইনি প্রতিকার পেতে আদালতে শরণাপন্ন হওয়ারও পরামর্শ দেয় পাঁচলাইশ থানা পুলিশ। সে অনুযায়ী সাধারণ ডায়েরির তদন্তের ভিত্তিতে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের সাবেক সচিব অধ্যাপক আবদুল আলীম এবং সাবেক অধ্যাপক মুহাম্মদি ইদ্রিস আলীর বিরুদ্ধে সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা করে বোর্ড সচিব নারায়ন চন্দ্র নাথের পরিবার।
পুলিশি প্রতিবেদনে বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অধ্যাপক নারায়ন ও তার ছেলের বিরুদ্ধে দেওয়া আবদুল আলীমের লিংক তুলে ধরা হয়। পাশাপাশি শিক্ষা বোর্ডে এক সঙ্গে কর্মরত থাকা অবস্থায় অধ্যাপক নারায়নের সঙ্গে অধ্যাপক আবদুল আলীমের দ্বন্দ্বের চিত্রটিও তুলে ধরা হয় পুলিশি প্রতিবেদনে।
অন্যদিকে অধ্যাপক ইদ্রিস আলী অধ্যাপক নারায়ন চন্দ্র নাথ ও তার ছেলের ফল নিয়ে ফেসবুকে নানা পোস্ট দিয়েছেন। এ জন্য তাঁকে আসামি করা হয়।
মামলার বিষয়ে বাদীর আইনজীবী জয়শ্রী দে বাংলানিউজকে বলেন, ট্রাইব্যুনাল মামলাটি গ্রহণ করে কাউন্টার টেরোরিজমকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। মামলার পরবর্তী দিন ধায্য করা হয়েছে আগামী ২৪ এপ্রিল।