নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা :
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনক্ষণ প্রায় ঘনিয়ে এসেছে। দেশি-বিদেশি কূটনীতিক ও পর্যবেক্ষকদের নজর এখন ভোটের মাঠে।
সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন থেকে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে ইতোমধ্যেই তাদের অবহিত করা হয়েছে। তবে ভোটের মাঠে ভোটারদের উপস্থিতি ও সহিংসতা হয় কি না, সেদিকে নজর রাখছেন তারা।
আগে থেকেই একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের তাগিদ দিয়ে আসছেন বিদেশি কূটনীতিকরা। সব দলের অংশগ্রহণে যেন একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়, সে উদ্যোগও নিয়েছিলেন তারা। তবে শেষ পর্যন্ত বিএনপিসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নেয়নি।
জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে গত বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) ঢাকায় বিদেশি কূটনীতিকদের ব্রিফিং করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। সেখানে প্রায় ৫০টি মিশনের কূটনীতিক ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধি অংশ নেন। তবে ব্রিফিংয়ে মাত্র কয়েকজন কূটনীতিক আলোচনায় অংশ নেন। নির্বাচন নিয়ে বিদেশি কূটনীতিকদের কয়েকটি বিষয়ে আগ্রহ ছিল। এর মধ্যে ছিল নির্বাচনে ভোটারদের ভোটের মাঠে আনতে চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে কি না, নির্বাচনে কেমন অভিযোগ আসছে ও নির্বাচনে সহিংসতা হবে কি না।
জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে ৬-৭ জানুয়ারি হরতালের কর্মসূচি দিয়েছে বিএনপি। সে কারণে ভোটের মাঠে রাজনৈতিক উত্তেজনা ও সহিংসতার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে বেশ কয়েকটি সূত্র জানায়, ভোটের মাঠে ভোটারদের উপস্থিতি ও সহিংসতা নিয়েই বেশি নজর থাকবে কূটনীতিক ও পর্যবেক্ষকদের।
কূটনীতিকদের ব্রিফিংয়ে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বিএনপির নির্বাচন বর্জনের বিষয়টিও তুলে ধরা হয়। বিএনপির নাম উল্লেখ না করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিদেশি কূটনীতিকদের জানান, কিছু বিরোধী রাজনৈতিক দল নির্বাচন বর্জন করেছে এই দাবিতে যে, নির্বাচনটি এক ধরনের অরাজনৈতিক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হতে হবে। কিন্তু নির্বাচন ব্যবস্থাপনা সংস্থা হিসেবে নির্বাচন কমিশন বিদ্যমান আইন অনুযায়ী নির্বাচন পরিচালনার জন্য বাধ্য। নির্বাচনকালীন সরকারের ধরন পরিবর্তনের জন্য সংবিধান সংশোধন প্রয়োজন। সেটা আমাদের হাতে নেই। এটি সামগ্রিক রাজনৈতিক নেতৃত্বের সম্মিলিত ইচ্ছা, প্রজ্ঞা ও সিদ্ধান্তের মধ্যে নিহিত।
এদিকে, গত ২২ মাসে বর্তমান নির্বাচন কমিশন যেসব নির্বাচন পরিচালনা করেছে, সে বিষয়ে বিদেশি কূটনীতিকদের বিস্তারিত তুলে ধরেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। তিনি জানান, ২২ মাসে রাষ্ট্রপতি পদের নির্বাচন, সংসদের ১৬টি উপ-নির্বাচন, ১১টি সিটি করপোরেশন, ৬২টি জেলা পরিষদ, ২৭টি মহকুমা পরিষদ, ৬৪টি পৌরসভা এবং প্রায় ৯০০টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনসহ প্রায় এক হাজার ২০০টি নির্বাচন পরিচালনা করেছে। এসব নির্বাচন সুষ্ঠু ও সাধারণভাবে শান্তিপূর্ণ ছিল বলেও কূটনীতিকদের জানানো হয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেন জানিয়েছেন, নির্বাচন নিয়ে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বিদেশি কূটনীতিকদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে আশ্বস্ত হয়েছেন কি না, সেটা তারাই বলতে পারবেন। আমরা আমাদের অবস্থান তুলে ধরেছি।
আগামী ৭ জানুয়ারি (রোববার) দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এতে ২৮টি রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র মিলিয়ে এক হাজার ৯৭০ জন প্রার্থী অংশ নিচ্ছেন।