সালেহ আহমদ স’লিপক :
মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া) আসনে নৌকার দুই বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) নিয়ে বিপাকে পড়া নৌকার পালে এবার হাওয়া লেগেছে। নৌকার বিজয় সুনিশ্চিত করতে বিভিন্ন স্থান থেকে নেতারা এসে ছুঁটছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। ভোট চাওয়ার পাশাপশি তারা চাঙ্গা রেখেছেন নির্বাচনী মাঠ।
কুলাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের পাশাপাশি নৌকার পক্ষে গত ২০ ডিসেম্বর রাতে শেখ ওয়ালি আসিফ ইনান কুলাউড়া আসেন। ওইদিন তিনি ছাত্রলীগের কর্মীসভায় নৌকার পক্ষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থেকে কাজ করার আহবান জানান। ২৪ ডিসেম্বর দিনব্যাপী উপজেলার জয়চন্ডী ইউনিয়নে নৌকার পক্ষে জনসংযোগে অংশ নেন মৌলভীবাজার পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব মোঃ ফজলুর রহমান। সর্বশেষ ২৫ ডিসেম্বর উপজেলার কাদিপুর ও ভুকশিমইল ইউনিয়নে গণসংযোগে অংশ নেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। কেন্দ্রিয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইন ও প্রধানমন্ত্রীর প্রটোকল অফিসার আবু জাফর রাজু।
কাদিপুর ইউনিয়নের ছকাপন বাজারের পথসভায় সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, শফিউল আলম চৌধুরী নাদেলকে বিজয়ী করলে কুলাউড়াবাসী একজন মন্ত্রী পাবেন। শুধু তাই নয় সরকারের উন্নয়ন জনগনের দোর গোড়ায় পৌছে দিতে নৌকাকে বিজয়ী করতে হবে।
এদিকে ঠিক উল্টো চিত্র আছে ভোটের মাঠে। নৌকার পক্ষে কুলাউড়ার আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ বলে দলের পক্ষ থেকে দাবি করা হলেও ভোটের মাঠে স্বতন্ত্রের খোলসে রয়েছেন দুইজন বিদ্রোহী প্রার্থী। দিনের বেলায় নেতাকর্মীরা নৌকার পথসভায় অংশ নিলেও, সেই একই কর্মী রাতে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে গণসংযোগে অংশ নেন। কুলাউড়া উপজেলা ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতা, উপজেলা কৃষক লীগের শীর্ষ নেতা এবং জেলার নেতারাও স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন। শুধু তাই নয় নৌকার পক্ষে মাঠে কাজ করা অনেক নেতারই আন্তরিকতার ঘাটতি রয়েছে।
নৌকার কান্ডারি শফিউল আলম নাদেল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রিয় সাংগঠনিক সম্পাদক (ময়মনসিংহ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত) এবং বসবাস করেন সিলেট শহরে। তিনি বিজয়ী হলে ব্যস্ত থাকবেন ক্রিকেট ও রাজনীতি নিয়ে। তিনি বিজয়ী কুলাউড়ার মানুষ বিগত ৫ বছরের ন্যায় নির্বাচিত এমপির দেখা সহজে পাবে না। ফায়দা নেবে দলের সুবিধাভোগীরা।
এসব হিসাব নিকাশ সেই সাথে চা বাগানের ভোট বিভক্ত হলে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে। ফলে নৌকার বিজয় ভোটের সমীকরণে জটিলা তৈরি হয়েছে। এছাড়াও সাবেক এমপি এমএম শাহীন প্রচার করছেন, এবারই তার শেষ নির্বাচন। তাই মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া) আসনে ভোটের সমীকরণ জটিল থেকে জটিলতর হয়ে উঠছে।