ই-পেপার | রবিবার , ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

পাঁচ হাজার মানুষের ভোগান্তি এলজিইডির নতুন সড়কে

হাবিবুর রহমান লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি:
লক্ষীপুরের রামগতিতে এলজিইডির নতুন সড়কের উপর পৌরসভার আকস্মিকভাবে সড়ক নির্মাণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমন ঘটনায় বাজার ব্যবসায়ীদের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।  এতে দৈনিক পাঁচ হাজার মানুষ ভোগান্তিতে পড়েন।
 উপজেলা এলজিইডি অফিসসূত্রে জানা গেছে, ২০১৪-২০১৫ অর্থ বছরে রামগতি  পৌরসভার প্রাণকেন্দ্র জলিল মাস্টার (মুক্তিযোদ্ধা)  সড়কটি ২ কোটি ৭৭ লক্ষ টাকা ব্যয়ে  নির্মিত  মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন কাম-সড়কটি ২০১৮ সালে সম্পন্ন হয়েছে। কমপ্লেক্স কাম-সড়কের  কাজ ছিলো আরসিসি পাথর ঢালাইয়ের। এতে বাজার ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী দারুন উপভোগ করছেন। সরকারের যথাযথ উন্নয়নমূলক কাজে সুফলভোগ করছেন  স্থানীয়রা।
 নামপ্রকাশ না করার শর্তে  কয়েকজন  ঠিকাদার ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, জেলা আ.লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক ও পৌর মেয়র এম. মেজবাহ উদ্দিন মেজু এলজিইডি’র সদ্য সমাপ্ত নতুন সড়কের  উপর হঠাৎ পৌরসভার প্রায় ১৯ লক্ষ ৩ হাজার ৯৪৯ টাকা  ব্যয়ে পুনঃ নির্মাণ কাজ করেন। তাদের ভাষ্যমতে পৌরসভার উন্নয়ন মূলক  যে কোন কাজ মেয়রের রক্তসম্পর্কীয় লোকেরাই পাচ্ছেন। নতুন সড়ক এখন  ব্যবসায়ীদের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এদিকে এলজিইডির পাথরের সড়কের উপর নির্মানের রড ও  টেম্পারলেস  ইটের খোয়া দিয়ে রাস্তা পুনঃ নির্মাণ করেন মেয়র।   আগের পাথরের করা সড়কটিই ছিলো মানসম্মত।
 এদিকে জেলা পরিষদ  হতে  ২০  থেকে ৩০ টি দোকানঘর  ইজারা  নেয় স্থানীয়রা। নতুন সড়কের কারণে সামান্য বৃষ্টিতেই  সড়কের পানি জমে জেলা পরিষদের ওই দোকানের দিকে গড়ায়।
 স্থানীয়লোকজন ও ব্যবসায়ীরা জানান, মুক্তিযোদ্ধা সড়কে নতুন একটি ভবন নির্মিত হয়েছে। ওই ভবনের তত্ত¡বাধানে রয়েছেন মেয়র নিজেই। ভবনের সুবিধার্থে রাস্তাটি পুনঃনির্মাণ করেন মেয়র। এছাড়া মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেসেররও সৌন্দর্য বিনষ্ট হয়ে গেছে।
এই সড়কের কারণে দৈনন্দিন রিক্সা ও পথচারীদের দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। এদিকে অপ্রয়োজনীয় ও খাম  খেয়ালিপনায় সড়কটি করতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে ডাক্তার তছলিম, জহির উদ্দিন ও রতন সাহা। এদের মধ্যে গুরুতর আহত রতন সাহা বিছানা শয্যায়ী।
পৌরসভার প্রাণকেন্দ্র আলেকজান্ডার বাজারের পানহাটা, মাজার রোড, কাঁচাবাজার সড়কে সামান্য বৃষ্টিতে হাটু পানি জমে থাকে। বাজারের প্রধান সড়কের ড্রেন   ভেঙ্গে লোহার রড বেরিয়ে জনচলাচলে দুর্ভোগ চরমে।  কিছু কিছু স্থানে ড্রেনের পাটাতন ভেঙ্গে ড্রেন বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে দিন দিন মানুষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছে।
 যানচলাচল না করতে পারায় ব্যবসায়ীরা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে। এতে দ্রব্যমূল্যে উর্ধ্বগতির ঝুঁকি মুখোমুখি হচ্ছেন ব্যবসায়ী ও  ভোক্তারা।  পলাশ সাহা নামে একজন ক্ষুদ্রব্যবসায়ী ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান,  সামান্য বৃষ্টিতে রাস্তায় পানি জমে থাকে। এতে আমরা  বেচাকেনা করতে দুর্ভোগে পড়তে হয়।
 উপজেলা আ.লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক আবু নাছের বলেন,  সরকারী উন্নয়নের নতুন সড়কে মেয়র  ব্যক্তিগত প্রয়োজনে সড়ক নির্মাণ করছেন। প্রকৃত পক্ষে এটা জনস্বার্থে হয়নি।
পৌর আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক ওয়ারেছ মোল্লা  ও উপজেলা আ.লীগ সাংগঠনিক সম্পাদক জহির উদ্দিন বাবর বলেন,  সরকারি দুই তিন কোটি টাকা ব্যয়ে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স  ভবন কাম-সড়কের উপর মেয়রের বিশেষ প্রয়োজনে  ইটের খোয়া দিয়ে নতুন সড়ক  নির্মাণ সরকারের টাকার অপছয়।
জেলা পরিষদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের আহবায়ক ভিপি হেলাল  ও উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের যুগ্মআহবায়ক  সোয়েব খন্দকার  বলেন, জলিল মাস্টার সড়কে  এলজিইডি নির্মিত রাস্তাটি সম্পূর্ণ ভালো ছিলো।  ওই  সড়কের নতুন রাস্তা হওয়ায় জেলা পরিষদ মার্কেটের দোকানদাররা অসুবিধা পড়েছে।
এবিষয়ে রামগতি পৌরসভার মেয়র এম. মেজবাহ উদ্দিনের মোবাইলে দৈনিক মানবজমিন প্রতিনিধি অপরুপ দাস পরিচয় দিলে  অপর দিক থেকে শব্দ শুনে মোবাইল ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।