সিএনএন বাংলা২৪,চাঁপাইনবাবগঞ্জ
প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. নিজামুল হক নাসিম বলেছেন, ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা হলে গ্রেপ্তারসহ নানা রকম হয়রানির শিকার হতে হয়। প্রেস কাউন্সিলের মামলা গ্রহণ বা কোন আদালতে মামলা হবে তা সুপারিশ ক্ষমতা থাকলে সাংবাদিকরা হয়রানি হতেন না। তাই এখন বলা হচ্ছে, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে যেসব মামলা হবে তা, প্রেস কাউন্সিলে হোক। তবে এতে কতোগুলো বাধা আছে। তাই সকল অপরাধের বিচার প্রেস কাউন্সিলে হবে না।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সার্কিট হাউসের সম্মেলন কক্ষে শুক্রবার (২ জুন) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সাংবাদিকদের সঙ্গে সেমিনার ও মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। প্রেস কাউন্সিলের আয়োজনে জেলায় কর্মরত ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকদের নিয়ে প্রেস কাউন্সিল আইন-১৯৭৪ ও আচরণবিধি এবং তথ্য অধিকার আইন অবহিতকরণ শীর্ষক এই সেমিনার ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
নিজামুল হক নাসিম আরও বলেন, এখন আবার বলা হচ্ছে, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা হলে তা প্রথমে প্রেস কাউন্সিলে হবে। পরে প্রেস কাউন্সিল দেখার পর মামলাটি অপরাধ বিবেচনায় সংশ্লিষ্ট আদালতে পাঠাবে। বিশেষ করে দৈনিক প্রথম আলোর ঘটনার পর এসব দাবি জোরেসোরেই উঠছে।
প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের দেশে অনেক সাংবাদিক রয়েছেন, যারা বিখ্যাত হয়েছেন কাজ করে। সাংবাদিকতাকে তারা অনেক উঁচু স্তরে নিয়ে গেছেন। যা আমরা চিন্তা করতেই পারি না। তারাই আমাদের গুরু। বর্তমান সাংবাদিকরা আইন না দেখে তাদেরকে ফলো করলেই সফল হতে পারবেন। দুঃখজনক হলো আমরা নিজেদের আইন পড়ি না। আমাদের কার্যক্ষেত্র বা ক্ষমতা সম্পর্কে জানি না। কোনো কোনো জায়গায় অতি উৎসাহে ক্ষমতার বাইরে কাজ করি। এতে নানারকম ঝামেলা হয়।
নিজামুল হক নাসিম বলেন, সাংবাদিকদের সমাজে একত্রিত করার জন্যই প্রেস কাউন্সিল আইন তৈরি করেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এশিয়া মহাদেশে প্রথম বাংলাদেশেই প্রেস কাউন্সিল আইন হয়। মিয়ানমার, কোরিয়া মালয়েশিয়া, ভারত ও পাকিস্তানে অনেক পরে হয়েছে। যা বিশ্বের দরবারে আমাদের জন্য গর্বের। প্রেস কাউন্সিল আইনে কারা সাংবাদিক হবে, তা বলা আছে। এনিয়ে সুস্পষ্টভাবে নীতিনালা তৈরি করা হয়েছে। এর বাস্তবায়নে আমরা কাজ করছি।
তিনি বলেন, একজন সাংবাদিক দেশের জনগণের বন্ধু। কখনো শত্রু হতে পারে না। প্রেস কাউন্সিলের জন্ম হয়েছে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষা ও সাংবাদিকদের মান উন্নয়ন করতে। আমরা সেই লক্ষ্যেই কাজ করছি। কিন্তু সাংবাদিকতা করতে গিয়ে দেখি অপ-সাংবাদিকতায় দেশ ভরে গেছে। এখনই তা দমন ক
রতে হবে। যা দেখব, তা লিখব না। দেখার পর তা সমাজের জন্য ক্ষতিকর কি না তা বিবেচনা করে লিখব। দেশের ক্ষতি হয় এমন কিছু থেকে বিরত থাকতে হবে।
প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বলেন, প্রেস কাউন্সিল সাংবাদিকদের তালিকা তৈরির কাজ করছে। যেখানে দেশের সকল সাংবাদিকদের ডাটাবেজ থাকবে। এখন পর্যন্ত ৯টি ওয়েজবোর্ড হয়েছে। তা অনেকেই বাস্তবায়ন করেন। তবে বেশিরভাগ করেন না। আইন অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠানগুলো বাস্তবায়ন করতে বাধ্য নয়। ৯ম ওয়েজবোর্ড নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা চলমান রয়েছে। এতে আমাদের কোনো হাত নেই। আমরা কোনো পদক্ষেপ নিতে পারি না।
সেমিনারে তথ্য অধিকার আইন-২০০৯ নিয়ে আলোচনা করেন বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের সচিব মো. মাসুদ খাঁন। সেমিনার ও মতবিনিময় সভার সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক দেবেন্দ্র নাথ উঁরাও। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল কালাম সাহিদ, জেলা তথ্য কর্মকর্তা মো. ওহিদুজ্জামান প্রমুখ।
এইচ এম কাদের,সিএনএন বাংলা২৪