ই-পেপার | রবিবার , ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সরকারি আদেশ বাস্তবায়ন হয়নি আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে

মোঃ আবদুল রহিম চৌধুরী, ঢাকা

হিমাগারে আলুর সরকার নির্ধারিত মূল্য নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসকদের যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল তা বাস্তবায়ন হয়নি। ফলে আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে আলু।গত মঙ্গলবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আলুর সরকারি দাম নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দেয়। বুধবার থেকে এ নির্দেশ বাস্তবায়নের কথা ছিল। তবে এ দিন রাজধানীর কোথাও নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে কোনো কর্মকর্তাকে মাঠে দেখা যায়নি। এ নিয়ে জেলা প্রশাসনের কোনো নির্দেশনাও নেই।

 

দেশে হঠাৎ দাম বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষিতে গত ১৪ সেপ্টেম্বর আলুর পাইকারি ও খুচরা দাম বেধে দেয় সরকার। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হিমাগারে প্রতি কেজি আলু ২৬ থেকে ২৭ টাকা আর খুচরা বাজারে ৩৫ থেকে ৩৬ টাকায় বিক্রি হওয়ার কথা। সরকার দাম বেধে দিলেও তার প্রভাব বাজারে পড়েনি। রাজধানীতে বাজার ভেদে প্রতি কেজি আলু কিনতে ভোক্তার খরচ হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা।বেঁধে দেওয়া দামে আলু বিক্রিতে কঠোর হচ্ছে সরকারবেঁধে দেওয়া দামে আলু বিক্রিতে কঠোর হচ্ছে সরকার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মঙ্গলবারের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত সোমবার এ সংক্রান্ত একটি পত্র জারির মাধ্যমে সকল জেলা প্রশাসকদের এ নির্দেশ দেয়া হয়েছে। দ্যা কন্ট্রোল অব অ্যাসেনসিয়াল কমোডিটিস অ্যাক্ট– ১৯৫৬ এর ৩ (২) (ই) অনুযায়ী এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

 

 

এতে আরও বলা হয়েছে, আলু ব্যবসায়ীরা কোল্ড স্টোরেজ ও খুচরা পর্যায়ে সরকার নির্ধারিত মূল্য অপেক্ষা অত্যধিক দামে আলু বিক্রি করছেন। জনস্বার্থে আলুর বাজার স্থিতিশীল করার লক্ষ্যে দ্যা কন্ট্রোল অব অ্যাসেনসিয়াল কমোডিটিস অ্যাক্ট– ১৯৫৬ এর ৩ (২) (ই) জেলা প্রশাসকের তত্ত্বাবধানে জরুরী ভিত্তিতে তার জেলাধীন কোল্ড স্টোরেজসমূহ থেকে সরকার নির্ধারিত মূল্যে আলু বিক্রির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। এ ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসকগণ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে একজন উপযুক্ত কর্মকর্তাকে এক বা একাধিক স্টোরেজ তত্ত্বাবধানে দায়িত্ব অর্পণ করবেন এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার উপস্থিতিতে সরকার নির্ধারিত মূল্যে আলু বিক্রয় করবেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ বাস্তবায়ন না হওয়ায় বুধবার আগের দামেই বিক্রি হয়েছে আলু।

 

 

ভোক্তারা বলছেন, সরকার নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। কেউ জনগণের কথা ভাবছেন না। পণ্যের দাম বেড়ে গেলে এখন আর তদারকি সংস্থাগুলো কোনোভাবেই পণ্যের দাম কমাতে পারছে না। বাজারে কোনো অভিযানও দেখা যাচ্ছে না। ফলে বিক্রেতারা পণ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়িয়ে ক্রেতার পকেট কেটে বাড়তি টাকা মুনাফা করছে।এদিন, দেশের বিভিন্ন জেলার হিমাগারগুলোতে আলু বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৪ টাকা, পাইকারিতে ৪৮ থেকে ৫২ আর খুচরায় অন্তত ৬০ টাকা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, চাহিদার তুলনায় মজুদ কম তাই আলুর দাম বেড়েছে। তবে ভোক্তা সংগঠনের দাবি, নজরদারি থাকলে দাম এতটা বাড়তো না।

 

 

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের কাছে ক্রেতারা জিম্মি। এমনকি তারা সরকারের আদেশও মানছে না। দেখা গেছে, দেশে যতবার পণ্যের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে, বিক্রেতারা সেটা কার্যকর না করে ক্রেতার কাছে বেশি দামে পণ্য বিক্রি করেছে। কিন্তু যেসব তদারকি সংস্থা এই মূল্য কার্যকর করবে তারাও অসাধুদের কাছে এক প্রকার অসহায়ত্ব প্রকাশ করছে। ফলে ক্রেতারা কোনো প্রকার সুফল পাচ্ছে না। তাই তদারকি সংস্থার কার্যক্রম প্রশ্নবিদ্ধ বলে মনে হচ্ছে।’দেশে বছরে আলুর চাহিদা ৯০ লাখ টন। আর হিমাগারের মালিকরা জানান, মজুদ আছে ৮৫ লাখ টন। তবে এ মাসে নতুন আলু উঠলে দাম কমতে পারে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।