ই-পেপার | শুক্রবার , ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

পটিয়া মাদরাসায় তান্ডবের ঘটনায় দুবাই প্রবাসী ফাজলানে জামিয়ার প্রতিবাদ

নিজস্ব প্রতিনিধি, সংযুক্ত আরব আমিরাত :

 

গত ৩১ অক্টোবর বাদ এশা সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ের দেরা নাইফে প্রবাসী ফাজালানে জামেয়ার উদ্যোগে জামেয়া ইসলামিয়া পটিয়ায় সাম্প্রতিক জামেয়ায় সংঘটিত ঘটনার প্রেক্ষিতে এক প্রতিবাদ সভা, মাওলানা মীর কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

 

সভায় জামেয়া ইসলামিয়ায় সংঘটিত নজিরবিহীন ঘটনার তীব্র নিন্দা জানানো হয়। সভায় বলা হয়, জামেয়া ইসলামিয়া পটিয়া দেশের সর্বোচ্চ ইসলামী বিদ্যাপীঠ, ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি প্রতিষ্ঠান, মাদরে ইলমী। দু’একজন পদলোভি, স্বার্থান্বেষী তথাকথিত অখ্যাত, কুখ্যাতদের প্ররোচনায় রাতের অন্ধকারে জামেয়ায় ভাঙচুর চালিয়ে কোটি টাকার ক্ষতি সাধন করে , ঘুমন্ত নিরীহ ছাত্রদেরকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করে, মাঠে নামিয়ে জামেয়ার পরিচালকের বিরুদ্ধে শ্লোগান দিতে বাধ্য করে। যা জামেয়ার ইতিহাসে নজিরবিহীন। জামেয়ার পরিচালকের বাসার দরজা ভেঙ্গে, ভাঙচুর চালিয়ে, স্ত্রী-সন্তানদের উপর নির্যাতন চালিয়ে, জিম্মি করে হত্যার হুমকি দিয়ে জামেয়া পরিচালককে অপহরণ করে নিয়ে যায় মুখোশ পরা চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা। তথাকথিতদের সামনে নিয়ে গিয়ে সন্ত্রাসীদের হাতে জিম্মি অবস্থায় তাদের লিখিত পত্রে জোরপূর্বক স্বাক্ষর আদায় করা হয়। পরে টেনেহিঁছড়ে বহিরাগত চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা এক কাপড়ে জামেয়া আঙিনার বাইরে নিয়ে ধাক্কা মেরে অজানার উদ্দেশ্য সিএনজি অটোরিকশায় উঠিয়ে দেয়ার নির্মম অপমাণজনক দৃশ্য ভিডিওতে দেখা যায়।

 

সভায় জামেয়ার প্রাক্তন ছাত্ররা বলেন,তথাকথিত শুরা নামক বৈঠকে জামেয়া পরিচালকের পদত্যাগপত্র গৃহীত হয়েছে প্রস্তাব পাশ করে জামেয়ার অভ্যন্তরে তথাকথিতদের বৈঠকে সন্ত্রাসীরা পৈশাচিক উল্লাস করতে দেখা যায়। যা দেশের প্রচলিত আইন ও শরিয়া আইনে জিম্মি করে পরিকল্পিত। পুর্বলিখিত পত্রে জোরপূর্বক স্বাক্ষর করা পত্র গৃহীত হওয়া দূরের কথা, এহেন কর্মকান্ড চরম শাস্তিযোগ্য ফৌজদারী অপরাধও বটে।

 

প্রবাসী ফাজেলানে জামেয়া নিয়মাতান্ত্রিক শুরার মাধ্যমে তদন্ত করে, সন্ত্রাসীদের ও পর্দার আড়ালের তথাকথিত বিশিষ্টদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জের দাবি জানান।প্রতিবাদ সভায় দুবাই ও উত্তর আমিরাত থেকে আসা বিপুল সংখ্যক প্রবাসী ফাজালানে জামেয়ার উপস্থিতিতে প্রবাসে যেনো একখন্ড জামেয়া ইসলামিয়া পটিয়া হয়ে উঠে। ফাজালানে জামেয়ার এই প্রতিবাদ সভায় জামেয়ার নজিরবিহীন, নির্মম ঘটনার আলোচনা করতে গিয়ে কান্নার ভেঙে পড়লে অভূতপূর্ব দৃশ্যের অবতারণা হয়।

 

সভায় গৃহীত প্রস্তাবে সর্বজন শ্রদ্ধেয় ইসলামী- আরবী সাহিত্য ব্যক্তিত্ব, জামেয়ার শুরা প্রধান আল্লামা সুলতান জওকের নিয়মতান্ত্রিক পদক্ষেপকে মোবারকবাদ জানিয়ে পুর্ণ সমর্থন জ্ঞাপন করা হয়।সভায় আরও বলা হয়, জামেয়ায় নজিরবিহীন নির্মম ঘটনার পরও অবৈধ শুরা বৈঠকে সাড়া দিয়ে উপস্থিত হয়ে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডকে ধামাচাপা দিয়ে তথাকথিত পরিচালনা পরিষদ গঠন করে বৈধতার অপচেষ্টা চালিয়ে জামেয়ার সুদীর্ঘ ঐতিহ্যবাহী ইতিহাসে কলঙ্ক লেপন করেছেন তাদেরকে কখনও জামেয়ার প্রবাসী ছাত্ররা ক্ষমা করবেনা। দেশে, প্রবাসে অবস্থানরত আবনায়ে জামেয়ার ছাত্রদেরকে জামেয়ার এ নজিরবিহীন, নির্মম অন্যায়ের প্রতিবাদ ও আল্লামা সুলতান যওকের নিয়মাতান্ত্রিক পদক্ষেপ বাস্তবায়নে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়।

 

 

সভায় আলোচনা করেন- মাওলানা নুরুল কবির, মাওলানা ছৈয়দ উল্লাহ, মাওলানা জাফর উল্লাহ, মাওলানা জহির আহমদ, হাফেজ নুর হোসেন, মাওলানা মুহাম্মদ হোসাইন, মাওলানা এমরানুল হক, মাওলানা মরগুবুর রহমান, মাওলানা নুর হোছাইন, মাওলানা বোরহান উদ্দিন, মাওলানা মিজানুর রহমান, মাওলানা আরিফ উল্লাহ, মাওলানা লোকমান হাকিম, মাওলানা জসিমউদ্দিন, মাওলানা নজরুল ইসলাম, মাওলানা মিনহাজুল হক, মাওলানা এমদাদুল হক, মাওলানা আবু সাঈদ, মাওলানা ফরিদুল আলম, মাওলানা মুহাম্মদ শোয়াইব, মাওলানা মুসলেহ উদ্দিন, মাওলানা ইউনুস আনোয়ার, মাওলানা ওবায়দুল হক, মাওলানা আমিন উল্লাহ, মাওলানা মাহবুবুর রহমান, আহমদ প্রমুখ।

 

 

প্রতিবাদ সভা পরিচালনায় ছিলেন, মাওলানা নজির আহমদ। মোনাজাতের মাধ্যমে সভার সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। মোনাজাতে বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত আবনায়ে জামেয়ার কান্না, আবেগ, হৃদয়ের রক্তক্ষরণের আহ আওয়াজে অপুর্ব রুহানী দৃশ্যের অবতারণা পরিলক্ষিত হয়।