ই-পেপার | রবিবার , ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

সিত্রাংয়ে ভুগেছেন, মোখার আগেই জাল সরিয়ে নিচ্ছেন জেলেরা

নিজস্ব প্রতিবেদক : চট্টগ্রামের আকমল আলী সড়ক মৎস্যজীবী ঘাটের পাশের জেলেপাড়া, ১২ মে ঘূর্ণিঝড় মোখার আঘাতে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কায় আগেভাগে জাল সরিয়ে নিচ্ছেন জেলেরা।

 

চট্টগ্রামের আকমল আলী সড়কের মৎস্যজীবী ঘাটের পাশে জেলেপাড়া। বেড়িবাঁধের বাইরে প্রায় ৩০০ জেলে পরিবারের বসবাস। অল্প দূরে সাগরের বিশাল জলরাশি। গত বছরের অক্টোবরে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের আঘাতে লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছিল এ পাড়া। সে সময় ঘর ভেঙেছে, জাল ভেসে গেছে, জিনিসপত্র বানের পানিতে ডুবেছে জেলেদের। কোনোরকমে প্রাণ বাঁচিয়েছিলেন পাড়ার বাসিন্দারা।

 

এখন আরেকটি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় মোখার মুখোমুখি হওয়ার আশঙ্কায় ভুগছেন জেলেপাড়ার বাসিন্দারা। এবার তাঁরা আগের চেয়ে অনেকটাই সতর্ক। আগেভাগে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিচ্ছেন জিনিসপত্র। বলছেন, সিত্রাংয়ের সময় যে ভুল হয়েছিল, এবার তা করতে নারাজ তাঁরা।

আজ শুক্রবার সকালে আকমল আলী সড়কের জেলেপাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবিলায় আগেভাগে প্রস্তুতি নিচ্ছেন সবাই। কেউ জাল নিয়ে ছুটছেন বেড়িবাঁধের দিকে। কেউ জালের কাছি বা মোটা রশি ও মাছ রাখার ড্রাম নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিচ্ছেন। এসব নিয়ে ব্যস্ত জেলেপাড়ার বাসিন্দারা।

 

জেলেপাড়ার বাসিন্দা সুবল চন্দ্র দাস। বছর দশেক আগে হাতিয়া থেকে এই জেলেপাড়ায় এসে বসবাস শুরু করেন তিনি। একটি পিকআপে ২৫টি টংজাল তুলে দিচ্ছিলেন সুবল দাস। নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিচ্ছেন জাল ছাড়াও অন্যান্য জিনিস।

 

সিত্রাংয়ের অভিজ্ঞতা বিনিময় করে সুবল বললেন, ‘কার্তিক মাসের তুফানে টিনের ঘর ভেঙে যায়। টাকা, জাল—সব পানিতে ভেসে যায়। সেবার ছয় লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়। পরে টাকা ধার করে এই জালগুলো কিনেছি। এগুলো যদি বাঁচাতে না পারি, তাহলে নিজেও মরে যাব।’

 

জেলেপাড়ায় দুই শতাধিক টিনের ঘর। বাঁশ, বেড়া ও টিন দিয়ে এসব ঘর তৈরি। সিত্রাংয়ে সব ঘর গুঁড়িয়ে গিয়েছিল। এখনো অনেকে নতুন করে ঘর বাঁধতে পারেননি। স্থানীয় ব্যক্তিদের একমাত্র জীবিকা মাছ ধরা। বংশপরম্পরায় মাছ ধরে আসছেন তাঁরা। সরকারি জমিতে ঘর বেঁধে পরিবার নিয়ে বসবাস করেন।