শিব্বির আহমদ রানা, বাঁশখালী:
চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে শামিমা জান্নাত (১৯) নামে ডিভোর্সি এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে খোদ গৃহবধূর বাপের বাড়িতেই। মৃত্যুর রহস্য নিয়ে চলছে ধোঁয়াশা। ঘটনাটি তদন্তাধীন রয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ময়না তদন্তের পরেই জানা যাবে মৃত্যুর প্রকৃত রহস্য ‘হত্যা না আত্মহত্যা’।
ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার (২১ জুলাই) বাঁশখালী উপজেলার গন্ডামারা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে। ওই বৃহবধূ স্থানীয় মোস্তাফিজুর রহমানের মেয়ে।
নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত বছরের মার্চ মাসে শামিমা জান্নাতের সাথে বিয়ে হয় একই ইউনিয়নের ২নম্বর ওয়ার্ডের নন্না মিয়ার পুত্র ইকবাল হোসেন (২৭) এর সাথে। বিয়ের পর থেকে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে নানা বিষয়ে কলহ লেগেই থাকতো। এই কলহ একপর্যায়ে ভিভোর্সে গড়ায়। গত ৬ জুলাই তাদের মধ্যে চুড়ান্ত ডিভোর্স হয়ে যায়। ডিভোর্সের পরেও স্বামী তার সাবেক স্ত্রীর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করতো। সর্বশেষ গত শুক্রবার রাতে স্বামী ইকবাল তার শ্বশুরবাড়িতে যান। ইকবাল কান্নাকাটি করে পুণরায় সংসার ফিরে পেতে চায় বলে জানান। এতে মেয়ের বাবা এলাকার কয়েকজনের সাথে পরামর্শ করে সকালেই যা হওয়ার হবে মর্মে রাতেই ইকবালকে তাদের বাড়িতে থাকার অনুমতি দেন। পরদিন সকালে স্ত্রীর শয়নকক্ষে স্বামী তার ব্যবহৃত মুঠোফোন, জামা, জুতো ফেলে নিরুদ্দেশ হয়ে যায়। বিছানায় নিথর দেহ পড়ে থাকে স্বামী পরিত্যক্ত শামিমা জান্নাতের।
মেয়ের পরিবার ঝুলন্ত অবস্থায় লাশ পেয়েছে দাবী করলেও পুলিশ ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখেন ওই গৃহবধূর লাশ শোয়া অবস্থায় রয়েছে। এদিকে ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করতে শনিবার (২২ জুলাই) পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠিয়েছে।
ঘটনার খবর পেয়ে শনিবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন আনোয়ারা সার্কেলের এএসপি মো. কামরুল হাসান ও বাঁশখালী থানার ওসি মো. কামাল উদ্দিন।
পুলিশ জানায়, ২০২২ সালের ১০ মার্চ বিয়ে হয় ইকবাল ও শামিমার। কিন্তু বনিবনা না হওয়ায় গত ৬ জুলাই তাঁদের মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়। কিন্তু এরপরও দুজনের মধ্যে মুঠোফোনে কথা হতো। সর্বশেষ শুক্রবার রাতে ইকবাল শ্বশুর বাড়ি গিয়ে রাতযাপন করেন। এদিকে, শনিবার সকালে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় শামিমাকে পেয়ে দ্রুত বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করে।
এ বিষয়ে বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল উদ্দিন পিপিএম বলেন, ‘মেয়ের পরিবার থেকে লাশের ময়নাতদন্ত না করার জন্য যথেষ্ট অনুনয়-বিনয় করা স্বত্তেও ঘটনাটি কি আত্মহত্যা নাকি হত্যাকাণ্ড তার রহস্য উদঘাটন করার জন্য আমরা লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চমেক হাসপাতালে পাঠিয়েছি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে আইনি প্রক্রিয়া গ্রহন করা হবে।