নিজস্ব প্রতিবেদক :
দীর্ঘ দিন ধরে চট্টগ্রামে টিসিবির (ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ) তেলের মোড়ক পরিবর্তন করে বেশি দামে নগরীর বিভিন্ন দোকানে পাইকারি বিক্রি করছিল একটি অসাধু সিন্ডিকেট। আর এ কাজের জন্য তারা বিভিন্ন স্থানে ছোট বড় বেশ কয়েকটি গুদাম ভাড়া করে। যেখানে ডিলারের কাছ থেকে কেনা টিসিবি’র তেল স্তূপ করে পরে সেগুলোর কার্টুন খুলে প্রতিটির মোড়ক উঠিয়ে নেওয়া হতো৷ পরে বসুন্ধরা গ্রুপের মোড়ক লাগিয়ে বদলে দেয়া হতো তেলের রূপ। সেখান থেকে বস্তায় করে ক্রেতাদের কাছে সরবরাহ করা হতো৷
অবশেষে এ সিন্ডিকেটের ৪ সদস্যকে র্যাবের হাতে ধরা পড়তে হয়েছে। গত শনিবার নগরীর বায়েজিদ থানাধীন বালুচড়া বাজারের বিসিএসআইআর গবেষণাগারের বিপরীতে অবস্থিত একটি গুদামে তাদেরকে হাতেনাতে আটক করা হয়। একইসাথে গুদাম থেকে ২ হাজার ৫৫২ লিটার টিসিবি’র সয়াবিন তেল জব্দ করা হয়েছে।
এরা হলেন, মুদি দোকানি লক্ষীপুর জেলার ধর্মপুর এলাকার আবুল কালামের ছেলে মো. খোরশেদ আলম (৪০), চাপাইনবয়াবগঞ্জ জেলার ভোলাহাট আদাতলা এলাকার মৃত ইলিয়াছের ছেলে আব্দুল সালাম (৪৭), মো. নয়ন (২২), একই এলাকার আব্দুস সালামের ছেলে মো. নয়ন (২২) ও একই জেলার সাগরুইল গোমস্তাপুর থানার মো. এনামুলের ছেলে আল হাদিস (২৪)।
র্যাব-৭ এর কোম্পানি কমান্ডার মাহফুজুর রহমান বলেন, সরকার ভর্তুকি মূল্যে যেখানে টিসিবি’র সয়াবিন তেল ১০০ টাকা দামে খোলা বাজারে ভোক্তাদের মাঝে বিক্রয় করছে, সেখানে এই সিন্ডিকেট নিজেদের দোকানে অবৈধভাবে টিসিবি’র তেল মজুদ করে পরবর্তীতে কালোবাজারের মাধ্যমে অন্যান্য সাধারণ পণ্যের ন্যায় নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অধিক মূল্যে বিক্রয় করছে। এতে অসহায় সাধারণ ভোক্তাদের ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল। ফলশ্রুতিতে সাধারণ ভোক্তাগণ দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য পাচ্ছেন না।
অভিযানে দেখা যায়, বিসিএসআইআর গবেষণাগারের বিপরীতে অবস্থিত একটি সরু গুদামে সাটার বন্ধ রেখে শতশত টিসিবি তেলের মোড়ক অর্ধেকটা উঠিয়ে নিচ্ছে শ্রমিকরা। পরবর্তীতে সেগুলোতে বসুন্ধরা গ্রুপের তেলের মোড়ক লাগিয়ে দেয়া হচ্ছে। পরে বস্তায় পুরে রিকশা ও ভ্যান যোগে সরবরাহ করা হচ্ছে নগরীর আতুরার ডিপো, অক্সিজেন, বায়েজিদসহ বিভিন্ন পাইকারি দোকানে৷ বালুচড়া বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ওই এলাকার প্রতিটি দোকানে টিসিবির তেল বিক্রি করা হচ্ছে। প্রতিটি ২ লিটার তেল বিক্রি করা হচ্ছে ৩৬০ টাকা দামে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বালুচড়া বাজারের মুদি ব্যবসায়ী খোরশেদ আলম টিসিবি’র তেল অবৈধভাবে সংগ্রহ করে তার গুদামে মজুদ করে রাখতেন। পরে দোকানে দোকানে বিক্রি করতেন।
নুর মোহাম্মদ, সিএনএনবাংলা২৪
