বিশেষ প্রতিবেদক :
২০১৯ এর তুলনায় ২০২৩ সালে ঢাকা শহরে ডেঙ্গু রোগী ৪২ হাজার কম ছিল বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ঢাদসিক) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
বুধবার সকালে রাজধানীর মালিবাগ মোড় সংলগ্ন উড়ালসেতুর নিচে ১২নং ওয়ার্ডের গণশৌচাগার উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের ঢাদসিক মেয়র এ তথ্য জানান।
ঢাদসিক মেয়র বলেন, ‘২০১৯ সালে ঢাকা শহরে ১ লাখ ৫৫ হাজার ডেঙ্গু রোগী সনাক্ত হয়েছিল। গত বছর পূর্বাভাস দেয়া হয়েছিল যে, ডেঙ্গু পরিস্থিতি ২০১৯ সালকেও ছাড়িয়ে যাবে। আমরা যথাযথ প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। আমাদের মশককর্মী, যান-যন্ত্রপাতি, মানসম্পন্ন কীটনাশক মজুদ ও কাউন্সিলরবৃন্দের সহযোগিতায় আমরা ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছি। রোগীদের ঠিকানার ৪শ’ গজের মধ্যে বিশেষ মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম পরিচালনাসহ বিভিন্ন জায়গা ও স্থাপনায় আমাদের মশককর্মীরা কাজ করেছে। ফলে সফলতার সাথে এডিস মশার বিস্তার নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছি বলেই ২০২৩ সালে উত্তর ও দক্ষিণ মিলিয়ে ঢাকা শহরে ডেঙ্গু রোগী ছিল ১ লাখ ১৩ হাজার। সুতরাং, ২০১৯ এর তুলনায় ২০২৩ সালে ঢাকা শহরে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ৪২ হাজার কম ছিল। এ বছরও সকলের সহযোগিতায় ডেঙ্গু রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবো, ইনশাআল্লাহ।’
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সকলের দায়িত্বশীল ভূমিকা প্রয়োজন এ কথা উল্লেখ করে ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে প্রস্তুতির অংশ হিসেবে আগামী ২১ মে আমরা সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষের সাথে মতবিনিময় করব। ইতিমধ্যে তাদের পত্র দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও আমরা বিদ্যালয়, মহাবিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয়, থানা ও পুলিশ ফাঁড়িসহ সকল সরকারি, আধা-সরকারি স্থাপনা ও আবাসনে চিরুনি অভিযান পরিচালনা করবো।
প্রাথমিক পর্যায়ে সেগুলো আমরা একবার পরিচ্ছন্ন করবো এবং যে সকল স্থাপনায় লার্ভা পাওয়া যাবে, আমরা সেগুলো নিধন করব। পরবর্তীতে সেসব স্থাপনা ও আবাসনে যাতে এডিসের প্রজননস্থল সৃষ্টি না হয়, সেজন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে দায়িত্ব পালন করতে হবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে ডেঙ্গু রোগীর নির্ভুল তথ্য দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে ঢাদসিক মেয়র বলেন, ‘এক মাস আগে আমরা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সাথে বৈঠক করেছি। সেই বৈঠকে আমরা বলেছি, আমাদের ডেঙ্গু রোগীর যে তথ্য দেওয়া হয়- তা পরিপূর্ণ সঠিক নয়, অসম্পূর্ণ। ফলে দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এলাকার রোগীদের তথ্য পেতে আমাদের যথেষ্ট বেশ বেগ পেতে হয়। ঢাকার বাইরে থেকে যে রোগী আসে তাদের পৃথক করা কঠিন কোন কাজ নয়। তাদের পৃথকভাবে লিপিবদ্ধ করলে ঢাকার প্রকৃত রোগী সনাক্ত করা সহজ হয়। যদি রোগীর হয় ১০ জন, সেখানে যদি আমাদের (ঢাকার বাইরের রোগীসহ) ১শ’টা ঠিকানা দেওয়া হয়, তাহলে বাকি ৯০টা ঠিকানা খুঁজতে খুঁজতে আমাদের সময়ক্ষেপণ হয়। যদি বিভ্রান্তিকর তথ্য দেওয়া হয়, তাহলে আমাদের পক্ষে সঠিকভাবে (এডিসের প্রজননস্থল ধ্বংসের) কাজটা করা কষ্টসাধ্য হয়। সঠিক তথ্য দিলে আমরা সঠিকভাবে কাজটা করতে পারি। ঢাকাবাসীকে আমরা আরও বেশি ফলপ্রসূ সেবা দিতে পারবো।’
এর আগে ঢাদসিক মেয়র ১২ নম্বর ওয়ার্ডে পাইপ নর্দমা পরিষ্কার কাজের উদ্বোধন করেন। পরে মেয়র তাপস এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম দক্ষিণ কমলাপুর কালভার্ট সংলগ্ন ৮নং ওয়ার্ডের গণশৌচাগার উদ্বোধন করেন। পরবর্তীতে দু’জনই গণশৌচাগারের পাশে ২টি কদম ফুলের চারা রোপণ করেন।
কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান, সচিব আকরামুজ্জামান, ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী আশিকুর রহমান, অঞ্চল-২ এর অঞ্চলের আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা সোয়ে মেন জো, ১২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর খ ম মামুন রশিদ শুভ্র, ৮নং ওয়ার্ডের সুলতান মিয়া, সংরক্ষিত আসনের ফারহানা ইসলাম ডলি ও মিনু রহমান প্রমুখ এসময় উপস্থিত ছিলেন।