নিজস্ব প্রতিবেদক,ঢাকা:
ঢাকা: দেশের উচ্চশিক্ষাক্ষেত্রে যথার্থ পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে সামাজিক রূপান্তরের ইতিহাসকে গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর।
এছাড়া, ডিজিটালাইজেশন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রয়োজনে নতুন বিভাগ খোলা ও কারিকুলাম পরিবর্তনের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (২ মে) ইউজিসি আয়োজিত উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে সামাজিক রূপান্তর এবং সহযোগিতা বিষয়ক এক গোলটেবিল বৈঠকে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
সভায় জার্মানির বাউহাউস ইউনিভার্সিটির উপ-উপাচার্য ড. আলরিক কাচ, ইউনিভার্সিটির চেয়ার অব রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট প্রফেসর ড. এখারড ক্রাফট, ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন, প্রফেসর ড.বিশ্বজিৎ চন্দ, প্রফেসর ড. হাসিনা খান, ইউজিসি সচিব ড. ফেরদৌস জামান এবং বিভিন্ন বিভাগের পরিচালকসহ কমিশনের কর্মকর্তারা অংশ নেন।
প্রফেসর আলমগীর বলেন, সামাজিক রূপান্তরে সমাজের ইতিহাস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের শিক্ষার মতো বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষাখাতেও ডিজিটালাইজেশন একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেজ্ঞ মোকাবিলায় আমাদের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো নতুন নতুন বিষয় প্রবর্তনসহ কারিকুলামে পরিবর্তন আনছে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ এখন জনমিতিক সুবিধার কাল অতিক্রম করছে। দেশের কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর সংখ্যা অনেক বেশি। বিশাল সংখ্যক কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীকে দক্ষ জনসম্পদে রূপান্তর দেশের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এজন্য যথাযথ পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা জরুরি।
বাউহাউস ইউনিভার্সিটির উপ-উপাচার্য ড. আলরিক কাচ তার বক্তব্যে সমাজের ইতিহাস, রাজনীতি, ইকোলজি, অর্থনীতি এবং আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করাকে উচ্চশিক্ষাখাতের অন্যতম চ্যালেঞ্জ হিসেবে চিহ্নিত করেন। এগুলো সামাজিক রূপান্তরের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান উল্লেখ করে তিনি সমাজ পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় এই বিষয়গুলো নিয়ে যথাযথভাবে পরিকল্পনা প্রণয়ন করা প্রয়োজন বলে জানান।
বাউহাউস ইউনিভার্সিটির চেয়ার অব রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট প্রফেসর ড. এখারড ক্রাফট বলেন, বাংলাদেশে বাউহাউস ইউনিভার্সিটি বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, মোংলা পোর্ট, চট্টগ্রাম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে।
তিনি তার বক্তব্যে বিগত ১৫ বছরে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় এবং জার্মান বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উন্নয়নের একটি চিত্র তুলে ধরেন।
সভায় বক্তারা জানান, বিশ্বের সব ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং প্রযুক্তি মানুষের জীবনকে নানাভাবে প্রভাবিত করছে। শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রযুক্তি জ্ঞানের বিস্তার নিশ্চিত করতে বিশ্বের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো কারিকুলাম পরিবর্তনসহ প্রয়োজনীয় অবকাঠামো গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। উচ্চশিক্ষা খাতে কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স এবং অ্যাক্রিডিটেশন ব্যাপকভাবে প্রধান্য পাচ্ছে। তবে এসব ক্ষেত্রে যথার্থ পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে সামাজিক রূপান্তরের ইতিহাসকে গুরুত্ব দিতে হবে।
এছাড়া, সভায় বাউহাউস ইউনিভার্সিটিকে ন্যানো টেকনোলজি, আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স এবং বায়ো ম্যাটেরিয়ালসের উন্নয়ন নিয়ে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানানো হয়।