নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঢাকা: ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেছেন, মাদক সমাজের একটি ক্যানসার। মাদকের বিরুদ্ধে সবাইকে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের (দিবা শাখা) ৫৬তম বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা কেবল মাদক ত্যাগ করেই বসে থাকবে না, যাতে মাদকসেবী তৈরি না হয়, তারা সে আন্দোলন গড়ে তুলবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন ডিএমপি কমিশনার।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, অভিভাবক ও সুধী সমাজের কাছে আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ একটি আস্থার নাম। পিতা-মাতা এই স্কুলে সন্তানকে দিতে পারলে মনে করেন, সন্তান শিক্ষা, আদব-কায়দা, আচার-আচরণসহ সবকিছুতে সুন্দর করে গড়ে উঠবে এবং আদর্শ মানুষ হয়ে বেরিয়ে আসবে।
তিনি বলেন, এখানে লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা ধরনের পাঠক্রম বহির্ভূত কার্যক্রম চলে। আজ বিভিন্ন ইভেন্ট ও ক্যাটাগরিতে প্রায় ৯শ ছাত্র-ছাত্রীকে পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে, যেটি একটি উৎসাহব্যঞ্জক বিষয়।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে ডিএমপি কমিশনার বলেন, জীবন একটি যুদ্ধক্ষেত্র। জীবনের শুরু থেকে যুদ্ধ করতে হয়। ছাত্রজীবন যুদ্ধক্ষেত্রের প্রাথমিক পর্যায়। জীবনে সত্যিকার মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে এ সময় যুদ্ধ করতে হয়, প্রতিযোগিতা করতে হয়, অধ্যবসায়ী হতে হয়, মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করতে হয়। মানবজীবনের এ পর্যায়ে জীবনের ভিত্তি তৈরি করতে হয়। পরিবার, সমাজ, দেশ, বিশ্বকে তথা পরবর্তী প্রজন্মকে কিছু দেওয়ার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে হয়।
তিনি বলেন, অনেকেই বলে থাকেন মোবাইল ফোন শেষ করে দিচ্ছে আমাদের সন্তানদের, আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে। আমি বলতে চাই, সারা বিশ্বের জন্যই মোবাইল ফোন একটি আধুনিক প্রযুক্তি। এটি অত্যাবশ্যকীয় বিষয়। ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিশ্বের যেকোনো লাইব্রেরি থেকে যেকোনো বই পড়া যায়। বর্তমানে এ মোবাইল ফোন হলো জ্ঞানের ভাণ্ডার। আমাদের এটি ত্যাগ করার কোনো উপায় নেই। তবে সেটি যেন সবসময় অবশ্যই ইতিবাচকভাবে ব্যবহার করা হয়, সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক ও শিক্ষকদের মোবাইল ফোনের অপব্যবহার সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। সবাই ইতিবাচকভাবে এ মোবাইল ফোনকে শিক্ষার উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করবে বলে আমি প্রত্যাশা করি।
ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলেছেন। এ দেশের উন্নয়ন সারা বিশ্বে একটি বিস্ময়। প্রধানমন্ত্রী স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছেন, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার কাজ শুরু করেছেন। ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক, শিক্ষকসহ সবাইকে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রস্তুতি নিতে হবে। বাংলাদেশ আজ বিশ্বে ৩৫তম অর্থনীতির দেশ। বাংলাদেশ ২০৪১ সালে উন্নত দেশে পরিণত হবে এবং সে সময় দেশ হবে ২৪তম অর্থনীতির দেশ। আধুনিক ও উন্নত দেশ হওয়ার অগ্রযাত্রায় এ প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদেরই নেতৃত্ব দিতে হবে।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বার্ষিক পরীক্ষায় ভালো ফলাফল, উত্তম হস্তাক্ষর, সাংস্কৃতিক বিভিন্ন প্রতিযোগিতা, বাংলা ও ইংরেজি কবিতা আবৃত্তি, চিত্রাঙ্কন, বিষয়ভিত্তিক সর্বোচ্চ নম্বর, উপস্থিত বক্তৃতা, নির্ধারিত বক্তৃতা, রবীন্দ্র সংগীত, নজরুল গীতি, দেশাত্মবোধক গান, লোকগীতি, শ্রেষ্ঠ স্কাউট, শ্রেষ্ঠ রেঞ্জার, শ্রেষ্ঠ বিএনসিসি ইত্যাদি বিভিন্ন ইভেন্টে মোট ৮৮৯ জনকে পুরস্কার দেওয়া হয়।
আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোহাম্মদ এমাম হোসাইনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মতিঝিল বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) হায়াতুল ইসলাম খান। এ ছাড়া, আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির সদস্য, স্কুলের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।