ই-পেপার | শুক্রবার , ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

’১৪ আর ’২৪ এক নয়, সরকারের শেষ রক্ষা হবে না: মঈন খান

নিজস্ব প্রতিবেদক ,ঢাকা :

২০১৪ সাল আর ২০২৪ সাল এক নয় মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেছেন, জনগণের শক্তির কাছে কামান বা বুলেট কিছুই টেকে না। বিশ্বে এমন অসংখ্য নজির রয়েছে।

এবার সরকারের শেষ রক্ষা হবে না। এই সরকারের ওপর জনগণের আস্থা নেই। শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) বিকেলে ‘মহান বিজয় দিবস, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা ও বর্তমান প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)।

দেশে রাজনীতি বলে কিছু নেই অভিযোগ করে ড. আবদুল মঈন খান আরো বলেন, দেশে বর্তমানে রাজনীতি বলে কিছু নেই, রয়েছে অপরাজনীতি। এখানে ক্ষমতার নামে চলে দখল ও চাঁদাবাজি আর টাকা পাচার। ৫২ বছর আগে দেশের মানুষ যে আকাঙ্ক্ষা নিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছিল তার মূলে ছিল গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও দেশের অর্থনৈতিক মুক্তি। কিন্তু আজ দুটোর কোনোটিই নেই।

তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ দেশকে ভালোবাসলে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করে গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিক। জনগণের ভোটে তারা নির্বাচিত হলে প্রথম আমি অভিনন্দন জানাব। না হলে এবার জুজুর ভয় দেখিয়ে এই সরকারের কোনো লাভ হবে না। নির্বাচনের পর সরকার ৫ দিনও টিকবে না।

বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, বর্তমানে দেশের সংকটের সমাধান করতে হবে। সরকার মুখে যা বলে কাজে তা করে না। কাজে যা করে, তা বলে না। তারা নিজেদের গণতান্ত্রিক সরকার বলে পরিচয় দেয়। বিএনপিকে বলে সন্ত্রাসী দল! তারা মিথ্যা কথা বলে জনগণকে বার বার বিভ্রান্ত করছে। তারা হিটলারের মন্ত্রী গোয়েবলসের মতো মিথ্যাচার করছে। তবে এভাবে সরকারের শেষ রক্ষা হবে না। ক্ষমতার মোহে অন্ধ হলে পায়ের মাটি কখন সরে যায় টের পাওয়া যায় না।

তিনি আরও বলেন, এই সরকারের মিথ্যাচার নিজেরাই বিশ্বাস করে না। তারা মনে করছে ক্ষমতায় যেহেতু আছে নির্বাচনের দরকার কী? কোনো সরকার গণতন্ত্রের ভান ধরলে সেই সরকার স্বৈরাচারের চেয়েও বেশি ভয়ংকর হয়ে ওঠে। আজকে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার একদলীয় গণতন্ত্র দিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের মানুষ কখনোই স্বৈরশাসক মানেনি। যার প্রমাণ ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ। সেদিন কিন্তু দেশের জনগণ পাকিস্তানি স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে ও গণতন্ত্রের দাবিতে জীবন দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন করেছে। আমরা আবারও সবাইকে নিয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমেই এই সরকারের পতন ঘটাবো ইনশাআল্লাহ।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের সঙ্গে আমাদের বর্তমান বাংলাদেশের কোনো মিল নেই। শুধু সরকারের লোকেরা কথা বলবেন। আর কারও কথা বলার সুযোগ নেই। এটাকে বলা যায় বাকশাল-২। আসুন আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ি। ফ্যাসিবাদ পরাজিত হবে ইনশাআল্লাহ।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদীন বলেন, গণতন্ত্র ও জনগণের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধার করতে বিএনপি আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। দেশের সমগ্র মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে এই সরকারের বিরুদ্ধে জেগে উঠেছে। একপর্যায়ে সরকার ভয় পেয়ে ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশে পরিকল্পিতভাবে সহিংসতা ঘটিয়ে আমাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। তারাই আবার বলে বিএনপি সন্ত্রাসী দল! আওয়ামী লীগ নিজেরা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়। তারা বিরোধীদলের হাত পা বেঁধে দিয়ে বলে নির্বাচন করেন! কী প্রহসন। তারা এখনো সুষ্ঠু নির্বাচন দিলে ১০ টি আসনও পাবে না! তাদেরকে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য করতে হবে।

ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব ডা. মো. আবদুস সালামের সার্বিক তত্ত্বাবধানে এবং সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ডা. মো. মেহেদী হাসানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএমএ’র সাবেক সভাপতি একেএম আজিজুল হক, অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ-এ্যাব’র সভাপতি প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু, ড্যাবের ডা. এম এ সেলিম, ডা. জহিরুল ইসলাম শাকিল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক লুৎফর রহমান, জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের (জেডআরএফ) প্রকৌশলী মাহবুব আলম, ডা. রফিকুল কবির লাবু, ডা. মোস্তাক রহিম স্বপন, ডা. শহীদুল আলম, ডা. মোসাদ্দেক হোসেন বিশ্বাস ডাম্বেল, ডা. শহীদ হাসান, ডা. মো. সিরাজুল ইসলাম, ডা. পারভেজ রেজা কাকন, ডা. সরকার মাহবুব আহমেদ শামীম, সায়ীদ মেহবুব উল কাদির, ডা. জাহানারা লাইজু প্রমুখ।