ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি):
ওয়ায়েজ আহমেদ মাহিম, এক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। আগারগাঁও থেকে বাসে করে প্রতিদিন জ্যাম ঠেলে ক্লাসে আসা-যাওয়া করেন তিনি।
এতে সময়ের ক্ষতি হওয়ার পাশাপাশি তিনি বাসায় ফিরে হারিয়ে ফেলেন কাজ করার তাড়না।
তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেট্রো স্টেশন চালু হওয়ায় প্রথমবারের মতো মেট্রোরেলে চড়ে ক্লাস করতে যাওয়ার সুযোগ পান মাহিম। তিনি বলেন, আমি অত্যন্ত আনন্দিত। ভাবতেই পারছি না এতো দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে পেরেছি। আজকে আমার সেমিস্টার ফাইনাল। অন্যদিন বাসে জ্যাম ঠেলে আসতে হতো। আজ ১০ থেকে ১৫ মিনিটেই চলে এলাম।
শুধু মাহিমই নন, মেট্রোরেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশনে নেমে অনেকেই অনেকভাবে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন।
বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) মেট্রোরেলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশনটি উদ্বোধন হয়। এদিন সকাল সাড়ে ৭টায় মতিঝিল থেকে প্রথমবারের মতো মেট্রোরেল থামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশনে।
যাত্রীদের সুবিধার্থে স্টেশনটি সকাল সাড়ে ৬টায় খুলে দেওয়া হয়। প্রতি ১০ মিনিট পরপর একটি ট্রেন যাতায়াত করছে সেখানে।
উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী বিপ্র মিত্র বলেন, ভালো লাগছে। তবে শিক্ষার্থীদের পক্ষে এ ভাড়া বহন করে নিয়মিত যাতায়াত অসম্ভব। উত্তরা থেকে আসলে একজন শিক্ষার্থীর আসা যাওয়ায় ১৮০ টাকা খরচ হবে। এই টাকায় নিয়মিত যাতায়াত শিক্ষার্থীদের জন্য কঠিন। ফলে শিক্ষার্থীদের হাফ পাশের ব্যবস্থা করা উচিত।
মেট্রোরেলে চড়ছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তারাও। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্য ওমর বলেন, চড়ে দেখলাম মেট্রোরেল কেমন। ভালো লাগছে। চমৎকার।
ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী অনি হাসান বলেন, মেট্রোতে চড়ে অনেক ভালো লাগছে। আমি মিরপুর-১২ থেকে এত দ্রুত কখনো পৌঁছাইনি। তাছাড়া পরিবেশও ভালো।
আজিমপুরে বসবাসকারী কৃষি ও সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রাক্তন ডিরেক্টর মাসুদ রেজা বলেন, মেট্রোতে আগেও চড়েছি। তবে দীর্ঘদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের এই স্টেশনটি চালু হওয়ার আশায় ছিলাম। আজ সেই আশা পূরণ হলো।
চলতি বছরের ৪ নভেম্বর মেট্রোরেলের আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরদিনই উত্তরা হতে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেলের চলাচল শুরু হয়। তবে মতিঝিল পর্যন্ত সকাল সাড়ে ১১টা পর্যন্ত চলাচল করছে। আর উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত আগের সময় রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত চলছে মেট্রোরেল।
বর্তমানে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত সব স্টেশনই চালু আছে। আগারগাঁও থেকে মতিঝিলের সাতটি স্টেশনের পাঁচটিই চালু হলো। বাকি রইল শাহবাগ ও কাওরান বাজারের স্টেশন। আগামী জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি চালু হতে পারে এ দুটি মেট্রো স্টেশন।