
নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার:
কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিপিজিসিবিএল) কাছে থেকে বুঝে নেওয়া মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর চ্যানেল উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (১১ নভেম্বর) বিকেলে চ্যানেলটি উদ্বোধনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। একই অনুষ্ঠানে গভীর সমুদ্রবন্দরের প্রথম টার্মিনাল নির্মাণকাজের ভিত্তি স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী। ১৮ দশমিক ৫ মিটার ড্রাফটের (জাহাজের পানির নিচের অংশ) ৪৬০ মিটার দীর্ঘ কনটেইনার জেটি ও ৩০০ মিটার দীর্ঘ মাল্টিপারপাস জেটি নির্মাণ এবং কনটেইনার ইয়ার্ডসহ বন্দর-সুবিধাদি নির্মাণের কাজ শুরু হতে যাচ্ছে। ২০২৬ সালে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরে অপারেশন শুরুর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত আছে।বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক।
তিনি জানান, গত ২০ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েলের কাছে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর চ্যানেল আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করেন কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিপিজিসিবিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবুল কালাম আজাদ। এরপর থেকে চ্যানেলের ব্যবহার, সংরক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ পরিপূর্ণভাবে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের ওপর ন্যস্ত রয়েছে। এ চ্যানেলের মাধ্যমে আগত সমুদ্রগামী জাহাজের পোর্ট ডিউজ, বার্থ হায়ার চার্জ, পাইলটিং, টাগ চার্জ, বার্থিং আনবার্থিং ও অন্যান্য চার্জ বন্দর কর্তৃপক্ষ আদায় করছে। চ্যানেলটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ১১ নভেম্বর কক্সবাজার সফরকালে উদ্বোধন করবেন। একই সঙ্গে গভীর সমুদ্রবন্দরের টার্মিনাল নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।
সূত্র জানায়, সরকারের অনুমোদনের প্রেক্ষিতে সিপিজিসিবিএল মাতারবাড়ীতে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের আওতায় ১৪ দশমিক ৩ কিমি দীর্ঘ এবং ২৫০ মিটার প্রস্থ, ১৮ দশমিক ৫ মিটার (এমএসএল) গভীরতার একটি চ্যানেল খনন করা হয়। পরবর্তীতে মাতারবাড়ী বন্দর নির্মাণের জন্য ২০১৮ সালের ২৯ নভেম্বর নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী চ্যানেলের প্রশস্ততা ১০০ মিটার বাড়িয়ে ৩৫০ মিটারে উন্নীত করা হয়। নির্মিত চ্যানেল ও হারবার নিরাপদ ও সুরক্ষিত করার জন্য সিপিজিসিবিএল ১ হাজার ৭৫৩ মিটার উত্তর ব্রেকওয়াটার (ঢেউ নিরোধক বাঁধ), ৭১৩ মিটার দক্ষিণ ব্রেকওয়াটার এবং উত্তর দিকে ১৮০২ দশমিক ৮৫ মিটার রিভেটমেন্ট নির্মাণ করে। ২০২২ সালের ১৬ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মুখ্য সচিবের সভাপতিত্বে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দরের চ্যানেল হস্তান্তর বিষয়ে সভার সিদ্ধান্তের আলোকে মাতারবাড়ী চ্যানেলটি সিপিজিসিবিএল কর্তৃক বন্দরের কাছে হস্তান্তর করা হয়। চ্যানেলটি দিয়ে ইতোমধ্যে বেশ কিছু রেকর্ড পরিমাণ কয়লাবোঝাই জাহাজসহ শতাধিক জাহাজ নিরাপদে ভিড়েছে।
২০২৬ সালে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম শুরু হবে। দেশের প্রথম এবং একমাত্র গভীর সমুদ্রবন্দর স্থাপনের জন্য ১৭ হাজার ৭৭৭ কোটি ২০ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে মাতারবাড়ী বন্দর উন্নয়ন প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রকল্পটি অনুমোদনের পরে বাস্তবায়ন কার্যক্রম শুরু করা হয়।
সিএনএন বাংলা২৪