আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
উত্তর কোরিয়া ফিলিস্তিনিদের প্রতি পূর্ণ সমর্থন ও তাদেরকে সব ধরনের সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। বুধবার দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েন্দা সংস্থার বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়ালস্ট্রিট জার্নাল।প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন কর্মকর্তাদের ইসরাইল-হামাস সংঘাতের মধ্যে ফিলিস্তিনিদের সমর্থন করার নির্দেশ দিয়েছেন এবং তিনি হামাসসহ ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠীগুলোর কাছে অস্ত্র বিক্রির বিষয়ে বিবেচনা করতে পারেন।
পারমাণবিক কর্মসূচির কারণে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন হয়েছে উত্তর কোরিয়া। দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েন্দা সংস্থাটি আইনপ্রণেতাদের কাছে জানিয়েছে, অতীতে হামাসের কাছে অ্যান্টি ট্যাংক রকেট লঞ্চার বিক্রি করেছে উত্তর কোরিয়া। গাজা যুদ্ধের মধ্যে উত্তর কোরিয়া আরও অস্ত্র রপ্তানির চেষ্টা করতে পারে বলেও আশঙ্কা তাদের। দক্ষিণ কোরিয়ার ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির পরিচালক কিম কিউ-হিউন আইনপ্রণেতাদের বলেছেন যে, কিম জং উন যুদ্ধ থেকে লাভবান হওয়ার জন্য ফিলিস্তিনের প্রতি পূর্ণ সমর্থনের আহ্বান জানিয়েছেন।
কোরিয়া হেরাল্ড জানিয়েছে, হামাসের পোস্ট করা ছবি এবং ভিডিও থেকে প্রমাণ সংগ্রহ করে তারা পর্যালোচনা করেছে। দক্ষিণ কোরিয়ার সংস্থাটি দাবি করেছে, ৭ অক্টোবর ইসরাইলে অভূতপূর্ব আক্রমণ চালানোর সময় হামাসযোদ্ধারা উত্তর কোরিয়ার অস্ত্র ব্যবহার করে থাকতে পারে। অ্যাসোসিয়েট প্রেসের খবরে বলা হয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়ার কর্মকর্তা এবং উত্তর কোরিয়ার অস্ত্রের দুই প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞের মতে, হামাস সম্ভবত একটি উত্তর কোরিয়ার এফ-৭ রকেটচালিত গ্রেনেড ব্যবহার করেছে। এটি একটি কাঁধে চালিত অস্ত্র, যা যোদ্ধারা সাধারণত সাঁজোয়া যানের বিরুদ্ধে ব্যবহার করে।
এর আগে একটি ছবিতে হামাসযোদ্ধাদের সন্দেহভাজন উত্তর কোরিয়ার বুলসে-গাইডেড অ্যান্টি-ট্যাংক মিসাইল ব্যবহার করতে দেখা গিয়েছিল। তবে হামাস উত্তর কোরিয়ার অস্ত্র ব্যবহার করছে— গত সপ্তাহে এমন দাবি নাকচ করে দিয়েছে পিয়ংইয়ং। কিম প্রশাসন জানিয়েছে যে, এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পরিচালিত একটি ভিত্তিহীন গুজব।
গত মাসে উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গাজা উপত্যকার আল-আহলি আল-আরাবি হাসপাতালে বোমা হামলার জন্য ইসরাইলকে অভিযুক্ত করে বলেছিল যে, তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায় যুদ্ধাপরাধ করছে। ইসরাইলি বিমান হামলায় গাজায় নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে আট হাজার ৭৮৬ জন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, ৭ অক্টোবর থেকে ইসরাইলি বিমান হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে তিন হাজার ৬৪৮ জনই শিশু। এ ছাড়া নিহতদের মধ্যে দুই হাজার ২৯০ জন নারী আছে। সেখানে ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছে এক হাজার ১২০ জন শিশুসহ মোট দুই হাজার ৩০ জন। তারা সবাই নিখোঁজ রয়েছেন।