নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা :
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, শেখ রাসেল বেঁচে থাকলে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নের কাণ্ডারি হতেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর অসাধারণ উত্তরসূরি হতেন। অমিত সম্ভাবনাময় নেতৃত্বের গুণাবলি তার মধ্যে ছিল। তিনি অনন্তকাল ধরে আমাদের প্রেরণা জোগাবেন। তিনি অন্ধকারে দীপ্তিময় জ্যোতিষ্ক হয়ে স্বপ্নের পথে এগিয়ে যেতে আমাদের অনুপ্রাণিত করবেন।
বুধবার (১৮ অক্টোবর) বিকেলে সচিবালয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে শেখ রাসেল দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে তিনি এ কথা বলেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শিশু রাসেলকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। ছোট রাসেলকে যারা গুলি করতে পেরেছে… তারা কতটা নিষ্ঠুর ও কতটা নির্মম ছিল তা বলার অপেক্ষা রাখে না। ১৫ আগস্টের ঘটনা কারবালা প্রান্তরের নির্মমতাকেও হার মানিয়েছে। বিশ্বে অনেক রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড হয়েছে। কিন্তু কোনো হত্যাকাণ্ডে অন্তঃসত্ত্বা নারী ও শিশুকে এভাবে হত্যা করা হয়নি।
তিনি বলেন, ১৫ আগস্টে যে বিভীষিকাময়, নারকীয় ও বর্বরোচিত ঘটনা ঘটেছিল… বিশ্বের ইতিহাসে অন্য কোনো দেশের ইতিহাসে এই নির্মমতা দেখা যায়নি। আমাদের দুর্ভাগ্য যে, ৭৫ এর খুনিরা দাম্ভিকতার সঙ্গে এদেশে বিচরণ করেছিল। তাদের বাঁচাবার জন্য ক্ষমতালিপ্সু খন্দকার মোশতাক, জিয়াউর রহমান ও তাদের সহযোগীরা খুনিদের বিদেশে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছিল। এমনকি তারা দেশে ফিরে এসে জাতীয় সংসদের সদস্য হয়েছিল এবং রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করেছিল।
তিনি আরও বলেন, এ নির্মম হত্যাকাণ্ডের বিচার করা যাবে না— ১৯৭৯ সালে সংসদে এমন আইনও পাশ করা হয়েছিল। ইতিহাসের নির্মমতা-বর্বরতাকে আইনি কাঠামোতে সুরক্ষা দেওয়ার চেষ্টা এ দেশে হয়েছিল। খুনিদের দাম্ভিকতার সঙ্গে ঘুরে বেড়াতে দেওয়া হয়েছিল। এখনো সব খুনিদের বিচার হয়নি।
রেজাউল করিম বলেন, বাবার সান্নিধ্য খুব বেশি না পেলেও বাবার জন্য শিশু রাসেলের মমত্ব ছিল প্রগাঢ়। তার ভালোবাসা ও আকর্ষণের জায়গা ছিল বাবাকে ঘিরে। বঙ্গবন্ধুর মতো দৃঢ় ব্যক্তিত্ব ছিল শেখ রাসেলের। তার চলা-ফেরা ও কথা-বার্তায় আভিজাত্য ছিল।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নৃপেন্দ্র চন্দ্র দেবনাথ। আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ টি এম মোস্তফা কামাল ও মো. তোফাজ্জেল হোসেন। এসময় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব বলেন, শেখ রাসেল বেঁচে থাকলে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার কাণ্ডারি হতেন। শেখ রাসেলের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর গুণাবলি ছিল। শেখ রাসেলের মৃত্যু পৃথিবীর সব ট্র্যাজেডিকে হার মানায়। এ ধরনের নিষ্ঠুরতা যেন কোনো শিশুর ভাগ্যে না ঘটে।
আলোচনা সভা শেষে শেখ রাসেলসহ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের শহিদ এবং জাতির পিতার পরিবারের সদস্যদের জন্য দোয়া করা হয়। এর আগে, মন্ত্রণালয়ে স্থাপিত শেখ রাসেলের প্রতিকৃতিতে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন মন্ত্রী।