কক্সবাজার অফিস :
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে সাময়িকভাবে চলা স্পেশাল ট্রেন নিয়মিত করার পাশাপাশি এর বগি ও ট্রিপ বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজারের কার্যালয়। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক বরাবর দেওয়া নতুন এই প্রস্তাবে স্পেশাল ট্রেনটিতে ১০টির পরিবর্তে ১৮টি বগি সংযোজন এবং দিনে দুইবারের পরিবর্তে চারবার যাতায়াতের অনুমোদন চাওয়া হয়েছে।
রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন- বিদ্যমান জনবল এবং লজিস্টিকস ব্যবহার করেই চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটের কক্সবাজার স্পেশাল ট্রেনকে নিয়মিত করা, বগি ও ট্রিপ সংখ্যা বাড়ানো সম্ভব। তাই বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজারের কার্যালয়ের প্রস্তাবটি রেলভবন গ্রহণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিলে বিপুল যাত্রী চাহিদা পূরণ হবে। পাশাপাশি রাজস্ব আদায়ের পরিমাণও বাড়বে।
রেলওয়ের সর্বশেষ টাইম টেবিল অনুযায়ী চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে দুই জোড়া ট্রেন চলার কথা। সূচি অনুযায়ী একটি ট্রেন (৮২১) সকাল ৭টায় চট্টগ্রাম ছেড়ে ১০টা ২০ মিনিটে কক্সবাজার পৌঁছাবে। ফিরতি ট্রেনটি (৮২২) সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে কক্সবাজার ছেড়ে দুপুর ২টা ১৫ মিনিটে চট্টগ্রাম পৌঁছাবে। বিকাল ৩টা ১৫ মিনিটে চট্টগ্রাম থেকে আরেকটি ট্রেন (৮২৩) ছেড়ে সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে কক্সবাজার পৌঁছাবে। সন্ধ্যা ৭টায় ফিরতি ট্রেনটি (৮২৪) কক্সবাজার ছেড়ে এসে রাত ১০টা ৫ মিনিটে চট্টগ্রাম পৌঁছাবে।
তবে রেলপথ চালুর পাঁচমাসেও চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে নিয়মিত ট্রেন চালু না হওয়ায় এই সূচি বাস্তবায়ন করতে পারেনি রেলওয়ে। গত ঈদে চালু করা একটি স্পেশাল ট্রেনই কেবল সকাল ৭টায় চট্টগ্রাম ছেড়ে ১০টা ২০ মিনিটে কক্সবাজার পৌঁছায়। সারাদিন ট্রেনটি কক্সবাজার রেলওয়ে স্টেশনে বসে থাকে। এরপর সন্ধ্যা ৭টায় কক্সবাজার ছেড়ে রাত ১০টা ৫ মিনিটে চট্টগ্রাম পৌঁছায়। এখন এই স্পেশাল ট্রেনকেই টাইম ট্রেবিলে সাজানো সূচি অনুযায়ী দিনে চারবার চালানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান- দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন গত নভেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধনের পর প্রথম এই রুটে বাণিজ্যিক ট্রেন চলাচল শুরু হয় গত ১ ডিসেম্বর। বিপুল যাত্রী চাহিদা থাকলেও গত পাঁচ মাস ধরে এই রুটে চলাচল করছে মাত্র দুটি ট্রেন। তাও চলছে কেবল ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে। ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে চলাচল করা কক্সবাজার এক্সপ্রেস ও পর্যটক এক্সপ্রেস বিরতিহীন হওয়ায় দক্ষিণ চট্টগ্রামের লোকজন দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইনের সুফল পাচ্ছেন না। এ নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে স্থানীয়দের। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে নতুন ট্রেন চালুর বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছেন তারা।
এর বড় কারণ হচ্ছে- বিপুল চাহিদা থাকা সত্তে¡ও বিদ্যমান ব্যবস্থায় কক্সবাজার এক্সপ্রেস ও পর্যটক এক্সপ্রেসে চড়ে প্রতিদিন চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি কক্সবাজার যাওয়ার সুযোগ পান মাত্র ১১৫ জন করে যাত্রী। ফলে এই রুটে স্বাভাবিক সময়েই ট্রেনের টিকিট পাওয়া যেন অনেকটা ‘সোনার হরিণ’ পাওয়ার সমান।
এমন বাস্তবতায় ঈদযাত্রাকে কেন্দ্র করে গত ৮ এপ্রিল চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে একটি ঈদ স্পেশাল ট্রেন চালু করা হয়। ঈদের দিন বাদ দিয়ে সেটি চলে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত। এরপর ১৭ এপ্রিল থেকে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত এই ট্রেন ফের চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়। এখন এই মেয়াদ ২০ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটের স্পেশাল ট্রেনটি ১০/২০ লোড নিয়ে চলাচল করছে। ট্রেনটিতে সিট রয়েছে ৪৩৮টি। এটি চট্টগ্রামের ষোলশহর, জানালীহাট, পটিয়া, দোহাজারী, সাতকানিয়া, চকরিয়া, ডুলাহাজারা ও রামুতে যাত্রা বিরতি দেয়। চালুর পর থেকে গত ২৫ দিনে এই ট্রেন থেকে ৫১ লাখ টাকা রাজস্ব আয় হয়েছে।