নিজস্ব প্রতিবেদক,নওগাঁ:
নওগাঁ: জলদস্যুদের হাতে জিম্মি কলিজার টুকরা প্রিয় সন্তান। কবে ফিরবে বাড়িতে সেই চিন্তায় বিভোর পরিবারের লোকজন।
আর তাই তো তাদের কাছে খুশির ঈদ রঙহীন। বাবা-মা-স্ত্রী আর ছোট্ট শিশু কন্যা মেহেরিমা সাফরিনের প্রত্যাশা অচিরেই ঘরে ফিরবে তাদের প্রিয় মুখ।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে সাইদুজ্জামানের বাবা আব্দুল কাইয়ুম বলেন,আমার ছেলে এবার ঈদে বাড়িতে আসার কথা ছিল। বলেছিল বাবা ঈদে বাড়ি আসবো ছুটি নিয়ে সবাই মিলে ঈদ করবো। কিন্তু ভাগ্যের কি পরিহাস ছেলে আমার হাজার-হাজার মাইল দূরে জলদস্যুদের হাতে জিম্মি হয়ে আছে। ঈদ পালন তাকে ছাড়া কল্পনাই করতে পারছি না।
সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহর চিফ ইঞ্জিনিয়ার নওগাঁর এ এস এম সাইদুজ্জামান।
গত ১২ মার্চ অপহৃত হওয়ার পর থেকেই ছেলের মুক্তির সংবাদের প্রতীক্ষায় সময় পার করছেন সাইদুজ্জামানের পরিবারের লোকজন। সন্তানকে ফিরে পেতে মহান আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করে সময় পার হচ্ছে তাদের।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, সাইদুজ্জামান ২০ বছর ধরে মেরিন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে দেশি বিদেশি বিভিন্ন কোম্পানির জাহাজে কাজ করছেন। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রামের গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এস আর শিপিং লিমিটেডের মালিকানাধীন জাহাজে কাজ করছেন। এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজ এস আর শিপিং লিমিটেড কোম্পানির একটি জাহাজ।
সাইদুজ্জামানের মা কোহিনূর বেগম বলেন, আমাদের মাঝে ঈদের আনন্দ নেই। আমার ছেলে আমার বুকের মানিককে দ্রুত ফিরে পেতে চাই। সরকার যেন দ্রুত ঈদের আগেই আমার ছেলেসহ অন্যদের দেশে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেয় সেই দাবি ও অনুরোধ করছি। ছেলেকে ছাড়া কিছুই ভালো লাগছে না। কবে ফিরে আমার বুকের ধন বলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। এসব নিয়ে বেশ চিন্তিত আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীরা।
নওগাঁ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রবিন শীষ বলেন, সোমালিয়া জলদস্যুদের হাতে জিম্মি হওয়ার পর থেকেই সাইদুজ্জামানের পরিবারের খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে নিয়মিত। এরই মধ্যে নওগাঁ জেলা প্রশাসক গোলাম মওলা মহোদয় ঈদের শুভেচ্ছা এবং ঈদ উপহার দিয়েছেন পরিবারটিকে। পরিবারের সদস্যদের সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন জেলা প্রশাসক। আমরা বিশ্বাস করি অপহৃত নাবিকদের উদ্ধারের বিষয়টি নিয়ে সরকার ও জাহাজ মালিকপক্ষ থেকে সব ধরনের চেষ্টা চলছে।