ই-পেপার | সোমবার , ২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করতে ষড়যন্ত্র করছে স্বাধীনতা বিরোধীরা: মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রী

সালাহউদ্দিন কাদের:

দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাধাগ্রস্ত করতেই স্বাধীনতা বিরোধীরা আবারও ষড়যন্ত্র করছে বলে মন্তব্য করেছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক ।

শনিবার (১৭ জুন) দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর এমএ আজিজ স্টেডিয়ামের জিমনেসিয়ামে বিভাগীয় মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মন্ত্রী বলেন- ‘১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধারা জীবনবাজি রেখে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন বলেই আমরা ‘বাংলাদেশ’ নামক একটি স্বাধীন রাষ্ট্র পেয়েছি। বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে আজ আমরা মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারতাম না’।

তিনি বলেন- ‘আজ জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ উন্নয়নের মহাসড়কে। কিন্তু দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাধাগ্রস্ত করতেই স্বাধীনতা বিরোধীরা আবারও ষড়যন্ত্র করছে। তাদের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে হবে’।

এসময় তিনি আরও বলেন- ‘সারাদেশে বধ্যভূমি সংরক্ষণের কাজ চলমান রয়েছে। ঢাকার পরে মুক্তিযুদ্ধের সুতিকাগার চট্টগ্রাম। এখানে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ ও জাদুঘর নির্মাণের বিষয়ে সরকারের মহাপরিকল্পনা রয়েছে। পাহাড়তলি বধ্যভূমিসহ যে সকল বধ্যভূমি রয়েছে সেগুলোর সংরক্ষণ কাজ দ্রুত সময়ে সম্পন্ন করা হবে’।

উদ্বোধকের বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য, সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি বলেন- ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে নিরস্ত্র বাঙালি সশস্ত্র যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছে। অনেকেই ইতিহাস বিকৃত করে অনেক কথা বলছেন। বঙ্গবন্ধুর নামটাও মুছে ফেলার প্রচেষ্টা চালিয়েছিলেন। তাই বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে’।
তিনি চট্টগ্রামের জিয়া জাদুঘরের নাম মুছে ফেলে এটিকে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে রূপান্তর করতে সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠানোর বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন।

এসময় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আহ্বায়ক, বীর মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান খান এমপি বক্তব্য রাখেন।
এসময় তিনি জামালখানে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ও মুক্তিযুদ্ধ সংক্রান্ত স্মৃতিফলক ভাঙচুরের প্রতিবাদে আগামী ২১ জুন সারাদেশে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি প্রদানের ঘোষণা দেন।

সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আহ্বায়ক, বীর মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান খান এমপি’র সভাপতিত্বে মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশের স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ মহানগর ইউনিট কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহমদ।

বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম জেলা সংসদের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম সরোয়ার কামাল দুলু ও মহানগরের ডেপুটি কমান্ডার, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদুল হক চৌধুরী সৈয়দের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) হেলাল মোর্শেদ খান বীর বিক্রম, সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সদস্য সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা ওসমান আলী, যুগ্ম সদস্য সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা এবিএম সুলতান আহমেদ ও ঢাকা মহানগর সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আহবায়ক যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আমির হোসেন মোল্লা।

সমাবেশে বক্তারা আরও বলেন, আগামী ২০৪১ সালে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। সরকারের দৃশ্যমান উন্নয়ন সহ্য করতে না পেরে স্বাধীনতা বিরোধী দেশী-বিদেশী চক্র আবারও ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। তাদের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ৭১’র বীর মুক্তিযোদ্ধারা সবাই এখন বয়সের ভারে ক্লান্ত। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রাখা ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন বাস্তবায়নে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের দায়িত্ব অগ্রগণ্য।

মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ বানচালের চক্রান্ত:
চট্টগ্রাম বিভাগীয় মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ বানচালের চক্রান্ত হয়েছে বলে দাবি করেছে একটি সূত্র। তাদের দাবি, সরকারবিরোধী একটি গোষ্ঠী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের এই সমাবেশ বানচাল করতে নানামুখি ষড়যন্ত্র করে। যে কারণে সমাবেশটি এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে না হয়ে জিমনেসিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়।

 

এইচ এম কাদের,সিএনএন বাংলা২৪: