ই-পেপার | রবিবার , ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

তারা আবার অগ্নিসন্ত্রাস শুরু করেছে, তাই গ্রেফতার করা হচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক ,ঢাকা :

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কারও রাজনৈতিক অধিকারে সরকার হস্তক্ষেপ করেনি। এমনকি ২০১৩ সাল থেকে যারা অগ্নিসন্ত্রাস, মানুষ পোড়ানোর মামলার আসামি, তারাও ফিরে এসে রাজনীতিতে সক্রিয় হয়েছিলেন। কাউকে গ্রেফতারও করা হয়নি। কিন্তু তারা আবার অগ্নিসন্ত্রাস শুরু করেছে, তাই তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে।

আজ রোববার (২৬ নভেম্বর) প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবনে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন। আসন্ন নির্বাচন প্রসঙ্গে সরকারপ্রধান বলেন, আমাদের যেহেতু (সামনে) জাতীয় নির্বাচন। এটা সংবিধানের বাধ্যবাধকতা যে, আগামী জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে। তাই নির্বাচনের জন্য তফশিলও ঘোষণা করা হয়েছে। আমাদের আশা ছিল, নভেম্বর মাসের মধ্যে স্কুলের পরীক্ষাগুলো শেষ করার।

তিনি বলেন, আমরা কিন্তু কারও কোনো রাজনৈতিক অধিকারে হস্তক্ষেপ করিনি। এমনকি ২০১৩ সাল থেকে যারা অগ্নিসন্ত্রাস, মানুষ পোড়ানো… যেখানে ৩ হাজারেরও বেশি মানুষকে পুড়িয়েছে, সেখানে কয়েক হাজার মানুষ মারাও গেছে… সেসময় যারা আসামি ছিল, যারা পলাতক ছিল; যখন বিএনপি-জামায়াতসহ সমমনা দলগুলো রাজনৈতিক কর্মসূচি শুরু করেছে; তারা বহাল তবিয়তে এসেছে। তারা শান্তিপূর্ণ সভা যখন করেছে তাদের কোনো বাধা দেওয়া হয়নি। কিন্তু যখনই তারা আবার জ্বালাও-পোড়াও শুরু করল, বিশেষ করে ২৮ অক্টোবর থেকে তাদের যে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড… প্রধান বিচারপতির বাড়িতে হামলা, সেখানে ভাঙ্চুর করা; বিচারপতিদের বাড়িতে হামলা; পুলিশকে পিটিয়ে পিটিয়ে মারা, একটা বিভৎস চিত্র, যা চোখে দেখা যায় না; বাসে-গাড়িতে আগুন; এমনকি রেললাইনের কেটে রেখে দেওয়া হয়েছে… ট্রেনে চড়া সাধারণ মানুষকে হত্যা করতে। কিন্তু স্থানীয়রা সচেতন থাকায় কয়েকটি দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পাওয়া গেছে।

তারপরও তারা কমিউটার ট্রেন পুড়িয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এছাড়াও তারা সাংবাদিকদের উপর হামলা করেছে, নারীদের উপর আক্রমণ করেছে, এখন তো তারা প্রতিনিয়ত অগ্নিসংযোগ করেই যাচ্ছে। ফলে ছেলে-মেয়েদের স্কুলে পাঠানো… এক ভীতির অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। অথচ যতদিন তারা সঠিকভাবে রাজনৈতিক কর্মসূচি করেছে, ততদিন তাদের অসুবিধা ছিল না। তাতে বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর ভাবমূর্তিও বৃদ্ধি পেয়েছিল। কিন্তু এখন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করার পর জনগণ থেকে দ্বারা সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা মানুষ পুড়িয়ে মারবে, গাড়ি-রেল সবকিছু পোড়াবে… সাধারণ মানুষ, একটা মানুষ অনেক কষ্ট করে একটা বাস তৈরি করে, সেটা দিয়ে তার জীবন-জীবিকা চলে, সেটা যখন তার চোখের সামনে পুড়ে যায় বা বাসের হেলপার যখন ভেতরে ঘুমিয়ে আছে, সেই অবস্থায় যখন একটা গাড়ি পোড়ায়… এ ধরনের অগ্নিসন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত বা যারা এর হুকুম দাতা বা অর্থদাতা, তাদের আমরা কী করব, তাদের কি আমরা ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নেব? নাকি তাদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যবস্থা নেবে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে তারা জ্বালাপোড়াও করতেই থাকবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেকেই প্রশ্ন করেন, এদের কেন গ্রেফতার করা হলো? কিন্তু কেউ এটা বলে না যে, এরা অগ্নিসন্ত্রাসী, এরা পুলিশ হত্যা করেছে, মানুষ হত্যা করেছে। এখন ডিজিটাল যুগ, এখন সাধারণ মানুষই ভিডিও করে রাখে। এরা চিহ্নিত।

যারা এ ধরনের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা আমাদের নিতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণের স্বার্থে জনগণের সুরক্ষার স্বার্থে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এটা করে যাচ্ছে। জনস্বার্থে এটা করা হবে। যারা জাতীয় সম্পদ নষ্ট করবে, তাদের ছাড় দেওয়ার সুযোগ আছে বলে মনে করি না। তারা বন্ধ না করলে যা ব্যবস্থা নেওয়ার তা নিতেই হবে।