ই-পেপার | সোমবার , ১লা জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বড়লেখায় চলাচলের রাস্তায় বেড়ায় প্রতিবন্ধকতা, আদালতে মামলা

সালেহ আহমদ ,স’লিপক, সিলেট:

মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার পাবিজুরীপার গ্রামে বসতবাড়ি থেকে বের হওয়ার রাস্তায় বাঁশের বেড়া ও গাছের চারা লাগিয়ে প্রভাবশালী প্রতিবেশিরা এক কলেজছাত্রীর পরিবারকে প্রায় দেড়মাস ধরে অবরুদ্ধ করে রাখার খবর পাওয়া গেছে।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও ফাঁড়ি পুলিশে একাধিকবার ধর্না দিয়ে প্রতিকার না পেয়ে অবশেষে ভোক্তভোগী কলেজ ছাত্রী মরিয়ম ফেরদৌস মনি গত ৩১ অক্টোবর রাস্তা অবরুদ্ধকারী ৬ ব্যক্তির বিরুদ্ধে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেছেন। মনি অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারি মোঃ আলা উদ্দিনের মেয়ে।

 

 

এদিকে গত বুধবার আদালত থানার ওসিকে রাস্তার প্রতিবন্ধকতা অপসারণ, শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখাসহ আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ দিয়েছেন।জানা গেছে, বড়লেখা নারীশিক্ষা একাডেমি ডিগ্রী কলেজের অনার্সের ছাত্রী মরিয়ম ফেরদৌস মনির বাবা-মা ২০১১ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ভাটাউচি মৌজায় ডিপি খনিয়ান ২৪৬ এর সাবেক ১৭৭৪নং দাগের সোয়া ১০ শতাংশ ভূমি ক্রয় করে বাড়ি নির্মাণ করেন। প্রায় ১২ বছর ধরে বসতবাড়ির দক্ষিণ দিকের অর্ধশত বছরের পুরনো রাস্তা দিয়ে কলেজছাত্রীর পরিবারসহ আশপাশের লোকজন চলাচল করেন।

 

 

উক্ত রাস্তায় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আকবর আলী ও ইউপি সদস্য সরকারি প্রকল্পে উন্নয়ন কাজ করেছেন। কিন্তু হঠাৎ গত ২০ সেপ্টেম্বর প্রতিবেশি জাকির হোসেন, নাজিম উদ্দিন, ফখর উদ্দিন ওরফে কটন আলী, আব্দুস শহিদ, আজাদ আহমদ গংরা কলেজছাত্রীর পরিবারের চলাচলের একমাত্র রাস্তাটি গাছের চারারোপন ও বাঁশের বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দেন। বাঁধানিষেধ করলেও তারা তা মানেনি। বসত বাড়ির দক্ষিণ ও পশ্চিম দিকের রাস্তাটি বন্ধ করে দেওয়ায় পরিবারটি অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। গাছের চারা ও বাঁশের বেড়ার ফাঁক দিয়ে চলাচল করতেও বাধা দেন। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন আহমদের শরনাপন্ন হলে তিনিও সুরাহা করে দেননি।

 

গত ২৫ সেপ্টেম্বর শাহবাজপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েও প্রতিকার না পেয়ে অবশেষে ভোক্তভোগি কলেজছাত্রী গত ৩১ অক্টোবর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বরাবর রাস্তা বন্ধকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করেন।ভূমি আইনে বলা আছে, কোনো ব্যক্তি বা পরিবার বা প্রতিষ্ঠানের চলাচলের পথ বন্ধ করা যাবে না। একান্ত প্রয়োজন দেখা দিলে পক্ষরা আলোচনা বা স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের মধ্যস্থতায় বাজারমূল্যে ক্ষতিপূরণের বিনিময়ে ন্যুনতম চলাচলের পথ দিতে হবে। কোনো পক্ষ রাজি না হলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এ জন্য এক বছর পর্যন্ত কারাদন্ড বা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবে।

 

ভোক্তভোগি কলেজছাত্রী মরিয়ম ফেরদৌস মনি জানান, রাস্তায় গাছের চারা ও বেড়া দেওয়া শুরু করার সাথে সাথেই অনেকের কাছে গিয়েছি। লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। সবাই শুধু সময়ক্ষেপনই করেন। অপরদিকে প্রতিপক্ষ পুরো রাস্তায় চারা লাগিয়ে ও বেড়া দিয়ে আমাদের অবরুদ্ধ করে রাখে। কিছু চারা মারা যাওয়ায় এগুলোর ফাঁক দিয়ে যাতায়াত করতাম। এখন তারা কাটা ফেলে তাও বন্ধ করে দিয়েছে।বাদিপক্ষের আইনজীবি এড. সুব্রত কুমার দত্ত জানান, আদালত রাস্তার প্রতিবন্ধকতা অপসারণের ব্যবস্থা গ্রহণসহ প্রতিবেদন জমা দিতে থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।

 

সিএনএন বাংলা২৪