ই-পেপার | মঙ্গলবার , ২রা জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

চোরাচালান ঠেকাতে কঠোর অবস্থানে বিজিবি: বৈধ পথে পশু আমদানিতে অনুমতির দাবি

বিশেষ প্রতিবেদক:

কোরবানীর ঈদ সামনে রেখে পাশ্ববর্তী দেশ থেকে গরু পাচার রোধে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) দেশের সব সীমান্ত এলাকায় কঠোর অবস্থান নিয়েছে। অসাধুচক্রের গরু পাচার ঠেকাতে বিজিবির গোয়েন্দা নজরদারি জোরদারের পাশাপাশি আভিযানিক তৎপরতাও বাড়ানো হয়েছে।

মঙ্গলবার (২০ জুন) বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম এসব তথ্য জানিয়েছেন।

বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, ঈদুল আজহার সময় পাশ্ববর্তী দেশ থেকে বিপুল পরিমান গরু বাংলাদেশে পাচারে একটি চক্র তৎপর হয়ে ওঠে। এবারো তাই হয়েছে। ইতিমধ্যেই তারা তৎপর হয়ে উঠেছে। এ ধরনের অপতৎপরতা রোধে সীমান্তে কঠোর অবস্থানে রয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

 

বিজিবি বলছে, বর্তমানে বাংলাদেশ পশু সম্পদে স্বয়ংসম্পূর্ণ। দেশীয় এ সম্পদ বিকাশের স্বার্থে পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে গরু পাচার রোধে বিজিবি দৃঢ় অবস্থানে রয়েছে।

 

মো. শরীফুল ইসলাম জানান, সম্প্রতি অসাধু গরু পাচারকারীচক্র বিভিন্ন ধরনের অপতৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে। এর মধ্যে মন্ত্রণালয়/দপ্তরের ভুয়া অনুমোদনপত্র তৈরি, ভুয়া পরিচয় ও বিভিন্ন প্রতারণার মাধ্যমে সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে বাংলাদেশে গরু চালান ঢোকানোর অপতৎপরতা চালাচ্ছে।

 

এ অপতৎপরতা রোধে বিজিবি প্রস্তুত থেকে সীমান্তে পেশাদারত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। সীমান্তে দিয়ে অবৈধভাবে যাতে কোনো গরু বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে সে বিষয়ে বিজিবির গোয়েন্দা নজরদারির পাশাপাশি আভিযানিক তৎপরতাও বাড়ানো হয়েছে।

 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত ১৭ জুন রাতে এক ব্যক্তি ২২ বিজিবি’র অধীন একটি কোম্পানিতে গিয়ে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে অবৈধ গরু চালানের প্রস্তাব দেয়। ওই চোরাকারবারি জানায়, সীমান্তের ওপারে তার ৫ হাজার গরু বাংলাদেশে পাচারের জন্য অপেক্ষমান রয়েছে। গরু চোরাচালানের অবৈধ প্রস্তাব দেয়ার অভিযোগে শামিম হাসান (৩২) নামের ওই চোরাকারবারিকে বিজিবি আটক করে। তার নাম মো. শামিম হাসান (৩২)। পরবর্তীতে মামলা দায়ের করে তাকে থানায় সোপর্দ করা হয়।

 

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, অসাধুচক্রটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর জাল করে বিট বা খাটাল স্থাপনের ভূয়া অনুমোদনপত্র তৈরি করে সীমান্তের ওপার থেকে গরু আনার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। বিষয়টি বিজিবির গোচরীভূত হলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ওই অসাধু ও প্রতারকচক্রের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেয়।

 

জানা যায়, কক্সবাজার-বান্দরবান সীমান্ত দিয়ে চোরাকারবারিরা প্রতিনিয়ত মিয়ানমারের গরু এদেশে পাচার করছে। এর প্রেক্ষিতে সীমান্তরক্ষী বিজিবি শক্ত অবস্থানে রয়েছে। তবুও সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে শতশত চোরাই গরু বাংলাদেশে নিয়ে আসছে চোরাকারবারিরা। এতে প্রায় প্রতিদিন অসংখ্য চোরাই গরু বিজিবির হাতে আটকও হচ্ছে।

 

এদিকে, কক্সবাজার ও বান্দরবানের পশু ব্যবসায়ীদের দাবি, কুরবানির ঈদকে সামনে রেখে মিয়ানমারসহ অন্য প্রতিবেশী দেশ থেকে সরকারিভাবে পশু আমদানির অনুমতি দেওয়া হলে চোরাই পথে পশু আসা বন্ধ হবে।

 

টেকনাফ স্থলবন্দরের ব্যবসায়ী শাকের বিন ফয়েজ বলেন- বন্দর দিয়ে বৈধ পথে পশু আমদানির অনুমতি দেওয়া হলে চোরাই পথে পশু আসা বন্ধ হবে। পাশাপাশি সরকারের বিপুল রাজস্ব আদায় হবে।

এইচ এম কাদের,সিএনএন বাংলা ২৪