কুষ্টিয়া প্রতিনিধি :
আওয়ামী লীগ এবং জাসদ দুই ভাই বলে নির্বাচনী প্রচারণায় বক্তব্য দিয়েছেন কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভেড়ামারা) আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু। মিরপুরের আওয়ামী লীগ নেতারা দীর্ঘদিন ধরে প্রকাশ্যে বিরোধ করলেও এই নির্বাচনে কয়েকজন ইনুর পক্ষে প্রচারণা চালিয়েছেন।
তবে আওয়ামী লীগের বড় একটি অংশ এখনো ইনুর বিরোধী। আসনটিতে জাসদ-আওয়ামী লীগের দ্বন্দ্ব বেশ পুরনো। এর মধ্যে ইনু তার নির্বাচনী সভায় এমন বক্তব্য দিয়েছেন। ইনু বলেন, শেখ হাসিনা ইনুকে নৌকা মার্কা দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ দলগতভাবে নৌকার সমর্থন দিয়েছে। জাসদ ও আওয়ামী লীগ দুই ভাই। আমরা একসাথে আছি, একসাথে লড়ব।
বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) বিকেলে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার পোড়াদহ ইউনিয়ন পরিষদের মাঠে নির্বাচনী জনসভায় হাসানুল হক ইনু এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে ইনু অনিয়ম, দুর্নীতি, টেন্ডারবাজি, ঘুষ বাণিজ্য, নিয়োগ বাণিজ্য করেনি। আমি যদি একটা টাকা চুরি ও ঘুষ খেয়ে থাকি, তাহলে কান কেটে আপনাকে দিয়ে দেব। জাতির ও এলাকার স্বার্থে আমি আপনাদের সাথে আছি। আমি আমার সাধ্যমতো এই এলাকার মানুষের পাশে থেকে উন্নয়ন করেছি, শান্তির পথ তৈরি করেছি। সবাই খুশি হবে আমি তা মনে করি না। দুই-একজন গালি দিতেই পারে। তবে আমি গালি গায়ে মাখি না। কারণ হাজার হাজার মিরপুরবাসী আমার সাথে আছে। আমি উন্নয়ন করেছি।
হাসানুল হক ইনু আরও বলেন, ১৫ বছর আগে ঘর থেকে বের হলে পায়ে কাদা, সন্ধ্যায় ঘরে ফিরলে অন্ধকার ও সন্ত্রাসীদের দৌরাত্ম্য ছিল। ১৫ বছরের ব্যবধানে কাদা, অন্ধকার ও সন্ত্রাস নেই। পাকা রাস্তা হয়েছে, বিদ্যুতের আলো হয়েছে, সন্ত্রাস দমন করা হয়েছে। রাত ১২টা পর্যন্ত গ্রামের বাজারে সাধারণ মানুষ নির্ভয়ে নির্বিঘ্নে আড্ডা দেন, চা নাস্তা খান।
জাসদ সভাপতি ও নৌকা প্রতীকের এই প্রার্থী বলেন, আমি জঙ্গি-সন্ত্রাস চাই না, আগুন-সন্ত্রাসী চাই না। যদি শান্তি চান নৌকায় ভোট দেবেন। যদি মাস্তানি, সন্ত্রাস, দুর্নীতি না চান তাহলে নৌকায় ভোট দেবেন। এ সময় মিরপুর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র এনামুল হক, কুষ্টিয়া জেলা পরিষদের সদস্য মোহাম্মদ আলী জোয়ার্দার, কুষ্টিয়া জেলা যুবলীগের সভাপতি রবিউল ইসলাম, মিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতাহার আলী, রুহুল আলম, সদরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আশরাফুল ইসলাম, পোড়াদহ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফারুকুজ্জামান জন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে মিরপুর-ভেড়ামারা আসনটিকে অলিখিত আওয়ামী লীগের প্রার্থী বলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সমর্থন দিয়ে বেশ জোরেসোরে প্রচারণা চালাচ্ছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কামারুল আরেফিনের পক্ষে। ইতোমধ্যে মিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আলোচনা সভা করে ইনুর বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাইতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।