ই-পেপার | সোমবার , ১লা জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

গাজায় শান্তির জন্য যে তিন শর্ত দিলেন নেতানিয়াহু

স্পোর্টস ডেস্ক :
গাজা উপত্যকায় প্রতিনিয়ত হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইলি বাহিনী। এবার গাজায় শান্তি স্থাপনের জন্য ৩টি পূর্বশর্ত দিয়েছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।

সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রথমসারির দৈনিক ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে সাম্প্রতিক ইসরাইল-হামাস যুদ্ধ সম্পর্কে একটি কলাম লিখেছেন তিনি। সেখানেই এই পূর্বশর্ত হিসেবে এসব পয়েন্ট এনেছেন তিনি। কলামে এসব শর্তের বিস্তারিত ব্যাখ্যাও দিয়েছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী।

এই পূর্বশর্তগুলো হলো— ‘হামাসকে ধ্বংস করা’, ‘গাজাকে নিরস্ত্রীকরণ করা’ এবং ‘ফিলিস্তিনের সমাজ থেকে ইহুদিদের প্রতি বিদ্বেষ ও ঘৃণামূলক মনোভাব দূর করা’। বিবৃতিতে নেতানিয়াহু বলেছেন, ইসরাইল-হামাস যুদ্ধের পর পশ্চিমতীরে ক্ষমতাসীন ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ (পিএ) গাজা শাসন করতে পারবে বলে মনে করেন না তিনি। কারণ পিএর সেই সক্ষমতা নেই।

তিনি বলেন, ‘গাজায় ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর চলমান অভিযানের মূল উদ্দেশ্য হামাসকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করা। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি এবং অন্য অনেক দেশ উদ্দেশ্যকে সমর্থন করেছে। তারাও চায়, এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠী শেষ হোক। গাজায় হামাসের শাসন অবসান এবং তাদের সামরিক সক্ষমতা সম্পূর্ণ নষ্ট করার মাধ্যমেই এই লক্ষ্য অর্জন সম্ভব।’

তিনি আরও বলেন, ‘আর এই লক্ষ্য অর্জন ব্যতীত আমাদের সামনে আর কোনো উপায়ও নেই। কারণ হামাসের নেতারা ইতোমধ্যে জানিয়েছেন, গত ৭ অক্টোবর যে হামলা হয়েছে, ভবিষ্যতে বারবার তার পুনরাবৃত্তি ঘটবে। সারাক্ষণ এই ঝুঁকির মধ্যে থাকা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।’

তবে হামাসের কব্জায় এখনো ইসরাইল এবং অন্যান্য দেশের যে ১২৯ নাগরিক জিম্মি অবস্থায় রয়েছেন, কীভাবে তাদের মুক্ত করা হবে, সে সম্পর্কিত কোনো তথ্য নেতানিয়াহুর কলামে পাওয়া যায়নি। দ্বিতীয় শর্ত, ‘গাজাকে নিরস্ত্রীকরণ করা’র ব্যাখ্যায় নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘আমরা চাই না যে, গাজা উপত্যকা হামলাকারীদের ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহৃত হোক। এ কারণে উপত্যকার পরিসীমা বা সীমান্তে একটি সাময়িক নিরাপত্তা জোন স্থাপন করা প্রয়োজন। সেই সঙ্গে গাজা ও মিসরের মধ্যে যে সীমান্তপথ রয়েছে, সেই রাফাহ ক্রসিংয়ে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো জরুরি। কারণ গাজায় অস্ত্রের চালান ঢোকে মূলত এ সীমান্ত দিয়েই।

‘আমরা যদি প্রত্যাশা করি যে (যুদ্ধ অবসানের পর) পিএ গাজায় এসব পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করবে, তা হলে সেটি হবে দিবাস্বপ্ন। কারণ পিএর সেই সক্ষমতা কিংবা ইচ্ছে— কোনোটাই নেই।’ তৃতীয় পূর্বশর্তের ব্যাখ্যায় নেতানিয়াহু বলেন, ‘ফিলিস্তিনের স্কুলগুলোতে বাচ্চাদের অবশ্যই এটা শেখাতে হবে যে, মৃত্যুর চেয়ে বেঁচে থাকা অনেক মূল্যবান এবং জীবনের যত্ন নেওয়া জরুরি। ফিলিস্তিনের ইমামরা সবসময় তাদের ধর্মীয় বক্তব্যে ইহুদিদের হত্যার পক্ষে উসকানি দেন— এটা বন্ধ করতে হবে। সেই সঙ্গে ফিলিস্তিনের সাধারণ জনগণ যেন সন্ত্রাসবাদে অর্থের জোগান দেওয়ার পরিবর্তে সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইকে সমর্থন করে— সে জন্যও ফিলিস্তিনের সুশীল সমাজকে কাজ করতে হবে।’

সূত্র: টাইমস অব ইসরাইল, ফক্স নিউজ