ই-পেপার | শুক্রবার , ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

চীনসহ তিন দেশ থেকে আনা হচ্ছে নন-ইউরিয়া সার

বাণিজ্যিক প্রতিনিধি :

আরও তিনটি দেশের সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে চুক্তির মাধ্যমে নন-ইউরিয়া সার (টিএসপি, ডিএপি ও এমওপি) আমদানি করবে সরকার। এই তিনটি দেশ হলো– চীন, মালয়েশিয়া ও জর্ডান। গতকাল বুধবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ভার্চুয়াল সভায় এ প্রস্তাবে নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়।

 

সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান সাংবাদিকদের জানান, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) মাধ্যমে সৌদি আরব, মরক্কো, তিউনিসিয়া, কানাডা, রাশিয়া ও বেলারুশের সঙ্গে নন-ইউরিয়া সার আমদানির চুক্তির ধারা অব্যাহত রাখাসহ আরও তিনটি দেশের (চীন, মালয়েশিয়া ও জর্ডান) সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে চুক্তির মাধ্যমে নন-ইউরিয়া সার (টিএসপি, ডিএপি ও এমওপি) আমদানির প্রস্তাব নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

 

তিনি আরও জানান, অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় ৮ হাজার ২৬২ কোটি ৭৮ লাখ টাকা ব্যয়ে মোট ৭টি প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়। এর মধ্যে সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবির মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে বিক্রির জন্য ১ কোটি ১০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনা হবে। আন্তর্জাতিকভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে ১৪৩ কোটি ১৮ লাখ ৫৯ হাজার টাকায় ভারতের গ্রিন নেশন বিল্ডার্স অ্যান্ড ডেভেলপারসের কাছ থেকে এ তেল আমদানি করা হবে। এ ক্ষেত্রে প্রতি লিটারের দাম পড়ছে ১৫৪ টাকা ৬০ পয়সা।

এর আগে গত ১৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় স্থানীয় প্রতিষ্ঠান সিটি এডিবল অয়েল থেকে টিসিবির জন্য ৫০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার প্রস্তাব অনুমোদন হয়। প্রতি লিটার ১৫৪ টাকা ২৯ পয়সা দরে এ তেল কিনতে ব্যয় ধরা হয় ৭৭ কোটি ১৪ লাখ টাকা।

গতকাল রাষ্ট্রীয় চুক্তির আওতায় কাতারের মুনতাজাত থেকে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) ৩০ হাজার টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানির একটি প্রস্তাবও অনুমোদন হয়েছে। প্রতি টন ৩৮৩ দশমিক ৮৩ ডলার দরে এতে ব্যয় হবে ১২৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা। সৌদি আরবের সাবিক এগ্রি-নিউট্রিয়েন্টস থেকে ৩০ হাজার টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানির প্রস্তাবও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ১২৩ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। এ ক্ষেত্রে প্রতি টনের দাম পড়ছে ৩৭০ দশমিক ৮৩ ডলার। এ ছাড়া দেশীয় প্রতিষ্ঠান কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো) থেকেও ৩০ হাজার টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার কেনা হবে। প্রতি টন ৩৬৩ দশমিক ৬২ ডলার হিসাবে এতে ব্যয় হবে ১২১ কোটি ৮ লাখ টাকা।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভায় ১১ মেগাওয়াট ক্ষমতার বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপনের দর প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বিল্ড অন অপারেট পদ্ধতিতে বেসরকারি খাতের প্রতিষ্ঠান সিদ্দিক ফেব্রিক্স লিমিটেড-ইনটেক এনার্জিস এবং সাউদিয়া জার্মান পাওয়ার প্লান্ট (এসএফ-এলই-এসজিপিপিএল জেভি) যৌথভাবে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি স্থাপন করবে। ২৫ বছর মেয়াদে এ কেন্দ্র থেকে প্রতি ইউনিট ২১ টাকা ১০ পয়সা দরে বিদ্যুৎ কিনবে সরকার। সে হিসাবে এ বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালিকরা পাবেন আনুমানিক ৪ হাজার ৬৮ কোটি টাকা। এই বিদ্যুৎ পরিবেশবান্ধব হওয়ায় দাম কিছুটা বেশি হলেও ভর্তুকি দিয়ে বিদ্যুৎ বিভাগ তা কিনে নেবে।

বিদ্যুৎ বিভাগের আরেকটি প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে ফেনী জেলার সোনাগাজী উপজেলায় ১০০ মেগাওয়াট (এসি) সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের ট্যারিফ অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি স্থাপন করবে চীনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান বিইআইএইচসিএল এবং বিজেডএইচই, ইএনএএম ও এমএনএসের কনসোর্টিয়াম। এ ক্ষেত্রে প্রতি ইউনিটের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১১ টাকার বেশি। ২০ বছর মেয়াদে এ কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ কিনতে সরকারের ব্যয় হবে আনুমানিক ৩ হাজার ৫৬৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা।

সভায় সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অধীন সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের ‘আরিচা (বরঙ্গাইল)-ঘিওর-দৌলতপুর-নাগরপুর-টাঙ্গাইল আঞ্চলিক মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ’ প্রকল্পের একটি প্যাকেজের পূর্তকাজ ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার্সের কাছ থেকে কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ১১২ কোটি ৮১ লাখ ৯০ হাজার টাকা।