ই-পেপার | শুক্রবার , ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে ২২ মার্কিনি নিহত, নিখোঁজ ১৭

আন্তর্জাতিক বাংলা :

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের যুদ্ধে নিহত মার্কিন নাগরিকদের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২২ জনে। এছাড়া এখনও ১৭ জন আমেরিকান নাগরিকের কোনও খোঁজ মিলছে না।

গত শনিবার থেকে শুরু হওয়া পাঁচ দিনের এই যুদ্ধে উভয়পক্ষের ২৩০০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে কমপক্ষে ২২ মার্কিন নাগরিকের নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে বলে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে। আরও ১৭ জন মার্কিনি নিখোঁজ রয়েছেন। মূলত ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে নিহত আমেরিকান নাগরিকদের সংখ্যা গত মঙ্গলবার ১৪ জন বলা হলেও বুধবার তা ২২ জনে পৌঁছায়।

 

হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা মুখপাত্র জন কিরবি বুধবার বলেছেন, গত সপ্তাহান্তে ইসরায়েলে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের অভূতপূর্ব হামলার সময় বন্দি হওয়া আনুমানিক ১৫০ জন ব্যক্তির মধ্যে ‘মুষ্টিমেয়’ মার্কিন নাগরিক রয়েছেন।

 

কিরবি সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই মুহূর্তে, যে সংখ্যাটি আমরা জানি বা আমরা বিশ্বাস করি যে, বন্দি করা হয়েছে তা খুব ছোট, খুব ছোট, মুষ্টিমেয় থেকেও কম। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে এটি পরিবর্তিত হতে পারে।’

 

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেছেন, ইসরায়েল-হামাসের অব্যাহত যুদ্ধে মার্কিন নাগরিকদের মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। ইসরায়েলের প্রতি বাইডেন প্রশাসনের দ্ব্যর্থহীন সমর্থনের অংশ হিসাবে বৃহস্পতিবার শীর্ষ এই মার্কিন কূটনীতিকের তেল আবিবে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।

 

এদিকে হামাস-ইসরায়েলের সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার পরপরই ইসরায়েল উপকূলে বিমানবাহী রণতরী পাঠানোর কথা জানিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। গত রোববার যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন জানায়, তারা মার্কিন বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস জেরাল্ড আর ফোর্ড এবং এর সঙ্গে থাকা অন্য যুদ্ধ জাহাজগুলোকে পূর্ব ভূমধ্যসাগরে পাঠাচ্ছে।

 

আর এর মাধ্যমে মূলত এই অঞ্চলে ফাইটার এয়ারক্রাফটের সংখ্যা বাড়াতে চাচ্ছিল দেশটি।

আল জাজিরা বলছে, মার্কিন নৌবাহিনীর সবচেয়ে উন্নত বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস জেরাল্ড আর ফোর্ড পূর্ব ভূমধ্যসাগরে পৌঁছে যাওয়ার পর মার্কিন সামরিক বাহিনী দ্বিতীয় বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস ডোয়াইট ডি আইজেনহাওয়ারকে এবার ইসরায়েলের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।

 

প্রসঙ্গত, মুসলিমদের তৃতীয় পবিত্র ধর্মীয় স্থান আল-আকসা মসজিদের পবিত্রতা লঙ্ঘন এবং অবৈধ বসতিস্থাপনকারীদের অত্যাচারের জবাব দিতে গত শনিবার ইসরায়েলে ‘অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড’ নামে সামরিক অভিযান শুরু করে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস।

 

এরপর থেকে টানা ছয়দিনের এই সংঘাতে নিহত ইসরায়েলিদের সংখ্যা ১২০০ ছাড়িয়েছে। নিহতদের মধ্যে বহু সেনাসদস্য, নারী ও শিশু রয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছে আরও হাজার হাজার ইসরায়েলি। এছাড়া আরও বহু মানুষকে বন্দি করেছে হামাস।

 

হামাস অবশ্য এর আগে হুমকি দিয়েছিল, যদি ইসরাইল গাজায় ফিলিস্তিনিদের বাড়িতে কোনও সতর্কতা ছাড়াই বোমা বর্ষণ করে তাহলে তাদের হাতে আটক বন্দিদের হত্যা করা হবে। আর তাই হামাসের হাতে আটক বন্দিদের গাজায় উপস্থিতি ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর জন্য উভয় সংকট হিসেবে সামনে এসেছে।

 

ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, গত শনিবার থেকে ইসরায়েলের অবিরাম বিমান হামলা গাজার পুরো আশপাশের এলাকাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে এবং কমপক্ষে ১২০০ জন ফিলিস্তিনি নিহত ও আরও হাজার হাজার আহত হয়েছেন।

 

কিরবি বলেন, গাজার বেসামরিক নাগরিকদের জন্য নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থা করার জন্য ইসরায়েল ও মিশরের সঙ্গে এখনও আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে বাইডেন প্রশাসন।

 

 

এইচ এম কাদের,সিএনএন বাংলা২৪