ই-পেপার | শনিবার , ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

চিকিৎসকরা শনিবার কর্মস্থলে যোগ দেবেন

নিজস্ব প্রতিবেদক:

আগামী শনিবার নিজ-নিজ কর্মস্থলে যোগ দেবে ট্রেইনি চিকিৎসকরা। তবে সিনিয়রদের সঙ্গে আলোচনা অনুযায়ী তাদের দেয়া দাবিগুলো মানার বিষয়ে যে আশ্বাস দেয়া হয়েছে তা পুরণ না হলে ফের কঠোর আন্দোলনে মাঠে নামবেন তারা।

 

বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) পোস্ট গ্রাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলা হয়। বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, যেহেতু ট্রেইনি চিকিৎসকদের আন্দোলনের সাক্ষী পুরো দেশবাসী ছিলেন। তাই আমাদের আন্দোলনের ফলাফল দেশের মানুষকে জানানোর প্রয়োজন মনে করতেই এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, এমবিবিএস পাশের পর দেড় থেকে দু’বছর কঠোর পরিশ্রম আর অধ্যাবসায়ের মাধ্যমে পড়ালেখা করে একেকজন এফসিপিএস, রেসিডেন্ট ও নন-ট্রেইনি পর্যায়ে আসতে হয়। এতোটুকু আসতে একজন চিকিৎসককে বিসর্জন দিতে হয় জীবনের ৩০-৩৫ বছর। কারও ক্ষেত্রে তারো বেশি। এরপরেও মানুষের উন্নত সেবার জন্যেই এই উচ্চতর ডিগ্রি নিতে আসা আমাদেরকে দেয়া হয় মাত্র ২০ হাজার টাকা, যেখানে অন্যানা দেশের রেসিডেন্টদের বেতন শুরুই হয় ৭০-৮০ টাকায়। এই অতিমূল্যের বাজারে মাত্র ২০ হাজার টাকার সংসার চালানোর ক্ষমতা আমাদের আসলে কারোরই নেই। তাই দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়াতেই আন্দোলনে নামতে হয়।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, আপনারা পুরো দেশের মানুষ প্রথমবারের মতো ডাক্তারদের এতো বৃহৎ আন্দোলন দেখেছেন। দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া ছাড়া আসলে কেউ আন্দোলনে নামে না। আমাদের অবস্থাটাও হয়েছে তেমনই। আমরা নেমেছিলাম, আমাদের ক্ষুধার আন্দোলনের জানা, অধিকার আদায়ের জন্যে। আমরা প্রত্যেকে সপ্তাহে ৬০-৭০ ঘণ্টা ডিউটির পরেও যখন সংসার চালানোর মতো হাতে টাকা থাকে না, দিনশেষে অসহায়ের মতো টাকা ধারের জন্যে এদিক ওদিক ছুটতে থাকি, সেই অবস্থাটুকো আসলে আমাদের প্রকাশের ভাষা কারোই আনা নেই। হয়তো আমাদের প্রকাশের অপারগতার কারণেই আজকের আমাদের এই ব্যর্থতা।

তারা আরও বলেন, গত ১৬ জুলাই শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচির পরে ১৭ জুলাই বিএমএ প্রেসিডেন্ট ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, বিএসএমএমই ভিসি ডা.শারফুদ্দিন আহমেদ, স্বাচিপের সভাপতি ডা. জামাল উদ্দিন, মহাসচিব কামরুল হাসান মিলন ও ডিজিএমই ডা. টিটু মিয়ার সাথে আমাদের প্রতিনিধি দলের মিটিং হয় এবং নিম্নোক্ত সিদ্ধান্ত হয়। আর তা হলো এফসিপিএস ট্রেইনি চিকিৎসকদের ভাতা ২০ থেকে বেড়ে ২৫ হাজার টাকা করা হবে এবং তা এই জুলাই মাস থেকেই কার্যকর করা হবে, সাপ্তাহিক ২ কর্মদিবস ছুটি দেয়া হবে ও প্রাইভেট প্র্যাকটিসে কোনো বাধা দেয়া হবে না (সিন্ডিকেট মিটিংয়ে পাশের পর)। আন্দোলনরত অবস্থায় একাডেমিক অনুপস্থিতির জন্য কোন ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে না।

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, আগামী জানুয়ারি থেকে আরেক ধাপ ভাতা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে। এগুলো শুধু প্রতিশ্রুতি নয় এসব মেনে নেয়া মানে চিকিৎসকদের বৃদ্ধ বাবা-মায়ের ওষুধের খরচ, বাচ্চার প্যাম্পাসের খরচ, স্কুলের বেতনের খরচ ও ধার-দেনার পরিমান একটু হলেও কমবে। বৈঠকের পর সিনিয়রদের আশ্বাসের ভিত্তিতে আমরা সাড়ে ৭-৮ হাজার চিকিৎসক কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নিয়েছি। সবাই আগামী শনিবার নিজ নিজ কর্মস্থলে যোগদান করতে যাচ্ছি। তবে এই ঘোষণাও দেয়া হচ্ছে যে, দাবি যদি না মানা হয় এর পরিণতি হবে ভয়ানক, আমরা একবার যেহেতু মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে শিখেছি। আমরা পিছ পা হবো না।

 

নুর মোহাম্মদ, সিএনএন বাংলা২৪