স্পোর্টস ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন টেস্ট ইতিহাসের সবচেয়ে সফল পেসার জেমস অ্যান্ডারসন। চলতি গ্রীষ্মে লর্ডস টেস্টই হবে ইংল্যান্ডের জার্সিতে তার খেলা শেষ ম্যাচ।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক বার্তায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তিনি।
পেস অ্যাটাককে ঢেলে সাজাতে ইংল্যান্ড এখন ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে আছে। অ্যান্ডারসনের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে কথা বলতে নিজ দেশ নিউজিল্যান্ড থেকে ১১ হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে যুক্তরাজ্যে আসেন ইংল্যান্ড টেস্ট দলের কোচ ব্রেন্ডন ম্যাককালাম। দুজনে মিলে একসঙ্গে গলফও খেলেন। সেখানেই অ্যান্ডারসনকে নিজের পরিকল্পনার কথা জানান ম্যাককালাম। পরের বছর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে অনুষ্ঠেয় অ্যাশেজের জন্য পেস অ্যাটাক তৈরি করতে চাইছেন তিনি। তখন অ্যান্ডারসনের বয়স হবে ৪৩। সেই বয়সে অ্যান্ডারসন নিজের ফর্ম ধরে রাখতে পারবেন কি না, তা নিয়ে যে কারোরই শঙ্কা থাকার কথা।
অ্যান্ডারসন অবশ্য আর জলঘোলা করেননি। ম্যাককালামের কথায় সাড়া দিয়ে ঠিকই দিয়েছেন অবসরের ডাক। সাদা পোশাকে ৭০০ উইকেট নেওয়া এই পেসার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেন, ‘সবাইকে একটা কথা বলতে চাই, লর্ডসে গ্রীষ্মের প্রথম টেস্টই হবে আমার শেষ টেস্ট। শৈশব থেকে যে খেলাকে ভালোবেসে এসেছি, সেই খেলায় ২০ বছর ধরে নিজের দেশকে প্রতিনিধিত্ব করাটা অবিশ্বাস্য। ইংল্যান্ডের হয়ে মাঠে নামার মুহূর্তটা আমি খুব মিস করব। তবে আমি জানি, এটাই সরে দাঁড়ানোর এবং বাকিদের স্বপ্ন পূরণের সুযোগ করে দেওয়ার সঠিক সময়, যেমনটা আমি পেয়েছিলাম। কারণ এর চেয়ে বড় অনুভূতি আর নেই। ‘
৪১ বছর বয়সী এই পেসার আরও লিখেন, ‘ড্যানিয়েলা, লোলা, রুবি ও বাবা-মার ভালোবাসা এবং সমর্থন না পেলে আমি এতদূর আসতে পারতাম না। বিশাল ধন্যবাদ তাদের, একইসঙ্গে যেসব খেলোয়াড় ও কোচ বিশ্বের সেরা কাজে আমাকে নিয়োজিত করেছেন তাদেরও ধন্যবাদ। সামনে থাকা নতুন চ্যালেঞ্জ, একইসঙ্গে আরও বেশি গলফ খেলে দিনগুলো পার করা নিয়ে রোমাঞ্চিত আমি। বছরের পর বছর ধরে আমার পাশে থাকা সবাইকে ধন্যবাদ, সবসময় আমার কাছে এর (পাশে থাকার) মানেটা বিশাল। এমনকি আমার চেহারায় সেই প্রতিচ্ছবি ফুটে না ওঠলেও। (বিদায়ী) টেস্টে দেখা হবে। ‘
২০০২ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওয়ানডে ম্যাচ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শুরু করেন অ্যান্ডারসন। পরের বছরই লর্ডসে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হয় ডানহাতি এই পেসারের। ক্রিকেটের মক্কা খ্যাত সেই লর্ডসেই ক্যারিয়ারের ইতি টানতে যাচ্ছেন তিনি। আগামী ১০ জুলাই শুরু হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্টটি। সবশেষ ভারত সফর খুব একটা ভালো যায়নি অ্যান্ডারসনের। যদিও সেই সিরিজেই একমাত্র পেসার হিসেবে ৭০০ উইকেট নেওয়ার মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি। সর্বোচ্চ উইকেট শিকারির তালিকায় সাদা পোশাকে তার উপরে আছেন কেবল দুজন বোলার মুত্তিয়া মুরালিধরন (৮০০) ও শেন ওয়ার্ন (৭০৮)। ক্যারিয়ারের শেষ টেস্টে ওয়ার্নকে অ্যান্ডারসন টপকাতে পারবেন কি না, তা সময়ই বলে দেবে।
অ্যান্ডারসন ৭০০ উইকেট নিয়েছেন ১৮৭ টেস্ট খেলে। আর মাত্র একটি টেস্ট খেলার ঘোষণা দেওয়ায় অক্ষত থাকল শচীন টেন্ডুলকারের ২০০ টেস্ট খেলার রেকর্ড। টেস্টের মতো যদিও অতোটা সমৃদ্ধ নয় তার ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ার। ১৯৪ ওয়ানডেতে ২৬৯ ও ১৯ টি-টোয়েন্টি খেলে ১৮ উইকেট শিকার করেন তিনি।