ই-পেপার | রবিবার , ২৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত, দুর্ভোগে পানিবন্দিরা

কুড়িগ্রাম,প্রতিনিধি:

কুড়িগ্রামে নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করলেও এখনো নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে।

পানিবন্দি হয়ে পড়েছে নিম্নাঞ্চলের প্রায় ১২ হাজার পরিবার।বন্যাকবলিত এলাকার লোকজন নানা ভোগান্তিতে পড়েছেন। বিশেষ করে ব্রহ্মপুত্রের অববাহিকায় জেগে ওঠা নতুন চরগুলো প্লাবিত হওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন সেখানকার বাসিন্দারা।

নদের অববাহিকার পূর্ব বালাডোবা, কালির আলগা, পোড়ার চর ও মুসারচরসহ ১০টি চরে বসবাসকারী শতাধিক পরিবার ঘরবাড়ি ছেড়ে নৌকা ও উঁচু জায়গায় অবস্থান নিয়ে এক প্রকার মানবেতর জীবনযাপন করছে। এই পরিবারগুলো ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে থাকায় ঠিকমতো রান্না করতে পারছে না। পাশাপাশি তারা শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকটে পড়েছেন।

এদিকে গ্রামীণ রাস্তাঘাট তলিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। জেলার প্রায় ১০০ হেক্টর জমির বিভিন্ন ফসল পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। চরাঞ্চলে বিশুদ্ধ পানি ও শুকনো খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে। জেলার বিভিন্ন নদ-নদীর ২৬টি পয়েন্টে দেখা দিয়েছে নদী ভাঙন।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে, কুড়িগ্রামের সবকটি নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলার পাটেশ্বরী পয়েন্টে দুধকুমার নদের পানি বিপৎসীমার ৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া কুড়িগ্রাম সদরের ধরলার সেতু পয়েন্টে ৩৯ সেন্টিমিটার, নুনখাওয়া পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ৫৫ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৬১ সেন্টিমিটার ও কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি ৮৯ সেন্টিমিটার বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।


উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের মুসার চর এলাকার মতিয়ার রহমান বলেন, এই চরে ৩০টি পরিবারের বসবাস। চরটি নতুন হওয়ায় এখানকার বেশির ভাগ ঘরবাড়িতে কোমর পানিরও বেশি পানি হয়েছে। অনেকেই ঘরবাড়ি ছেড়ে উঁচু জায়গা ও নৌকায় বসবাস করছেন। নলকূপ তলিয়ে যাওয়ায় ঠিকমতো পানিও পাওয়া যাচ্ছে না। ঠিকমত রান্না করতে না পারায় অনেককে একবেলা খেয়েই দিন পার করতে হচ্ছে।

সদরের পাঁচগাছী ইউনিয়নের ভেলুর বাজার এলাকার শফিকুল ইসলাম বলেন,পানি কমলেও এখনো বাড়ির চারদিকে পানি। আবার পানি বৃদ্ধি পায় কিনা সেই চিন্তায় আছি। ১ বিঘা জমির পটল সব তলিয়ে গেছে। তবে তাড়াহুড়ো করে কিছু পটল তুলছি।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, জেলার ২৬টি পয়েন্টে ভাঙন দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন পয়েন্টে জিও ব্যাগ, জিও টিউব ফেলে ভাঙন রোধে কাজ চলছে। বন্যা পূর্বাভাসে এ সপ্তাহে বড় ধরনের বন্যার শঙ্কা নেই বলে জানা গেছে।

কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সকল প্রকার প্রস্তুতি নেওয়া আছে। নগদ অর্থ, শুকনো খাবার মজুত রয়েছে। যেখানে যখন প্রয়োজন তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে ইউএনও ও ইউপি চেয়ারম্যানদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে ত্রাণ বিতরণের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

এইচ এম কাদের,সিবিএনএন বাংলা২৪