ই-পেপার | রবিবার , ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

মৌলভীবাজারে আগাম জাতের আনারসের বাম্পার ফলনে চাষিদের মুখে হাসির ঝিলিক

সালেহ আহমদ (স’লিপক):

মৌলভীবাজারের পাহাড় ও টিলায় আগাম জাতের আনারসের বাম্পার ফলন হয়েছে। আবহাওয়া চাষের অনুকূলে থাকায় উৎপাদনের এ মৌসুমে চাষিরা ন্যায্যদাম পেয়ে খুবই খুশি। প্রতিদিন শ্রীমঙ্গলের আড়ৎজুঁড়ে প্রায় কোটি টাকার আনারস কেনাবেচা হচ্ছে।

মৌলভীবাজারের এ সুস্বাদু আনারস খুব শিগগিরই রফতানির চিন্তাভাবনা চলছে জানিয়েছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক সামছুদ্দিন আহমদ বলেন, বিদেশে রফতানির বিষয়ে সরকার একটি পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। এটি বাস্তবায়িত হলে চাষিরা আরও লাভাবান হবেন।

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার একাধিক পাহাড় ঘুরে দেখা যায়, টিলার বুকজুঁড়ে সাজানো-গোছানো অপরূপ দৃশ্যের এক একটি আনারস বাগান। কাঁটাযুক্ত গাঢ় সবুজের পাতায় পাতায় ডানা মেলেছে শত শত কাঁচা-পাকা আনারস। তবে অসময়ে আগাম জাতের এ আনারস চাষে চাষিদের শুরুতে চরম বেগ পোহাতে হয়। শুষ্ক মৌসুমে সেচ সংকট মোকাবিলা এবং অধিক দামে ক্রয়করে একাধিকবার কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয়েছে। এতে অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর চাষিদের উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে। তারপরও এবার আনারসের ভালো ফলন হয়েছে। উৎপাদনের এ ভরা মৌসুমে চাষিরা আনারসের ন্যায্যদাম পেয়ে খুবই খুশি।

আনারস চাষি সামছুল হক জানান, তিনি এ বছর ৩/৪টি টিলায় আনারস চাষ করেছেন। প্রথম দিকে সেচ সমস্যার সম্মুখীন হন। তবে সেচ সমস্যা কাঁটিয়ে তার বাগানে আনারসের ভালো ফলন হয়েছে। এ পর্যন্ত তিনি ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকার আনারস বিক্রি করেছেন।

চাষি জসিম উদ্দিন জানান, এখন পর্যন্ত তার বাগান থেকে প্রায় ২৫ লাখ টাকার আনারস বিক্রি হয়েছে। তিনি আরও জানান, তার বাগানে এখনো অন্তত দেড় লাখ আনারস রয়েছে। বাজারের চলিত দাম অব্যাহত থাকলে এ বছর লাভের পরিমাণ বেশি থাকবে।

কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, মৌলভীবাজার সদর, রাজনগর, কুলাউড়া, জুড়ি ও বড়লেখা উপজেলায় আনারসের চাষাবাদ হয়ে এলেও সবচেয়ে বেশি চাষ ও উৎপাদন হয় শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ উপজেলায়। এ জেলায় হানিকুইন, জায়েন্ড কিউ ও ক্যালেন্ডার এ তিন জাতের মধ্যে বিলাতি জাতের আনারস হানিকুইনেরই উৎপাদন হয় বেশি এবং এর চাহিদাও ব্যাপক। গরমের কারণে রসালো ফল আনারসের ব্যাপক চাহিদা থাকায় প্রতিদিন প্রায় কোটি টাকার আনারস কেনাবেচা হচ্ছে শ্রীমঙ্গল আড়তে।

কৃষি অফিসের দেয়া তথ্যমতে, জেলায় ১ হাজার ২১৫ হেক্টর পাহাড়ি জমিতে আনারস চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। উৎপাদন ধরা হয়েছে ১ হাজার ৬শ মেট্রিক টন।

শ্রীমঙ্গল নতুন বাজার আড়ৎ সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজি মোঃ আবু তাহের আগাম জাত আনারসের উৎপাদন খরচ বেশি জানিয়ে জানালেন, তাদের আড়তে প্রতিদিন কম করে হলেও কোটি টাকার আনারস কেনাবেচা হচ্ছে। এতে আড়ৎদাররা যেমন খুশি, তেমনি চাষিরাও ভালো দাম পেয়ে খুশি।