শিব্বির আহমদ রানা, বাঁশখালী :
নাসির উদ্দিন (৬০) নামে এক ভিক্ষুক গত রোববার (১০ মার্চ) শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে নিজেই ভর্তি হন বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে। পরে চিকিৎসাধিন অবস্থায় সোমবার (১১ মার্চ) সকালে তিনি মরা যান।
ঠিকানা পরিচয়হীন নাসির উদ্দিনের মৃত্যুর পর বিষয়টি বাঁশখালী থানা পুলিশকে অবহিত করেন উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক। বিষয়টি জানতে পেরে বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তোফায়েল আহমেদ মৃতের ঠিকানা জানতে অনুসন্ধান চালান। দীর্ঘসময় ধরে অনুসন্ধান চালিয়ে জানা যায় ভিক্ষুক নাসির উদ্দিন ভোলা জেলার বোরহান উদ্দিন উপজেলার টকবি ইউনিয়নের কাইচ্ছা কাজী বাড়ী আনিসুল হকের ছেলে।
বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, নাসির উদ্দিন শ্বাসকষ্ট রোগে গত রোববার ভর্তি হন। সেখানে হাসপাতাল রেজিস্টারে তার নাম নাসির উদ্দিন লেখা হয়। বরিশাল জেলার বোরহানগঞ্জ থানার টকবি ইউনিয়ন তার স্থায়ী ঠিকানা লেখা হয়। পরে পুলিশের সহায়তায় জানা যায় বরিশালে বোরহানগঞ্জ নামে কোনো থানা নেই। অনেক অনুসন্ধান করে সঠিক ঠিকানা বের করেন বাঁশখালী থানা পুলিশ।
বাঁশখালী থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ‘বহু কষ্টে ভিক্ষুকের আত্নীয়-স্বজনের সহিত যোগাযোগ করলেও তেমন সাড়া পাওয়া যায়নি এবং আর্থিক অভাবের কারণে তারা মৃত দেহ গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানান। বহু চেষ্টায় ভিক্ষুকের আপন বোন সুফিয়া কামালের সাড়া মেলে, কিন্তু তারা মৃত দেহের দাফন কাফনসহ পরিবহনের কোন ব্যয় বহন করতে পারবে না বলে জানান।
বাঁশখালী থানা পুলিশ অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘মৃত ব্যক্তির বোনকে মৃতের সকল ব্যয়ভার বহন করার বিষয়ে আশ্বস্থ করলে মৃত ব্যক্তির বোনের ছেলে মো. কামাল মৃত দেহ গ্রহণ করতে আসেন। আমার দেওয়া প্রতিশ্রুতি মতে বাঁশখালী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সুধাংশু শেখর হালদার, সেকেন্ড অফিসার কায়কোবাদ, এসআই আহসান হাবীব ও এসআই নুর মোহাম্মদের সহযোগীতায় মৃতদেহ পরিবহন ও দাফন কাফন সম্পন্ন করার জন্য নগদ ২৩ হাজার টাকার অর্থ সহায়তা প্রদান করি।’
এদিকে ভিক্ষুকের সঠিক ঠিকানা বের করে তার লাশ স্বজনদের কাছে তুলে দিয়ে দাফন, কাফনের খরচসহ আর্থিক সহায়তা প্রদান করে যে মানবতার দৃষ্ঠান্ত স্থাপন করেছেন তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশংসায় ভাসছেন বাঁশখালী থানা পুলিশ।