ই-পেপার | বৃহস্পতিবার , ৪ঠা জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্তে যা বললেন সৈয়দ ইবরাহিম

নিজস্ব প্রতিবেদক,ঢাকা:

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোটগতভাবে অংশ নিতে যাচ্ছে এতদিন ধরে সরকারবিরোধী আন্দোলন করে আসা বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি। এজন্য নিবন্ধিত আরও রাজনৈতিক দল মুসলীম লীগ ও বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির সঙ্গে যুক্তফ্রন্ট নামের নতুন জোট গঠন করা হয়েছে। জোটের নেতৃত্বে রয়েছে কল্যাণ পার্টি।

 

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষণা ছিল কল্যাণ পার্টির। বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে এতদিন বর্তমান সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন-সংগ্রাম করে আসছিল। হঠাৎ কেন মত বদলে নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত?

 

এ বিষয়ে বুধবার (২২ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে সংবাদ সম্মেলনে কল্যাণ পার্টির মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীক বলেন, আমি এখান থেকে বের হওয়ার পর বা বিদ্যমান অবস্থাতেই ৫০০ কমেন্ট আসবে যে বিশ্বাসঘাতক, দালাল, বেচা হয়ে গেছে। মেজর জেনারেল ইবরাহিম বা বীরপ্রতীক ইবরাহিম বেচা যাওয়ার পাত্র নয়। এরজন্য আপনাদের কাছে আবেদন করব ধৈর্য ধরুন, দেখেন কখন কী হয়, কী করি। নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য কোনো চাপ আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি পরশুদিন হাইকোর্টে গিয়েছিলাম। এই প্রশ্নটির উত্তর দেওয়া এই মুহূর্তে আমার পক্ষে সমীচীন না। এটা উহ্য রাখতে হবে।

 

এখন যেহেতু কল্যাণ পার্টি নির্বাচনে যাচ্ছে সেহেতু কি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রয়োজনীয়তা আর নেই জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি মনে করি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। কিন্তু বিদ্যমান রাজনীতি পরিস্থিতির কারণে সেই তত্ত্বাবধায়ক পদ্ধতি আসছে না। না আসার কারণে আমাকে একটা সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমাদের যা আছে তার মধ্যে অংশ নেব নাকি সব কিছু থেকে বিরত থাকব। আমি প্রথম বিকল্পটা বেছে নিয়েছি। আমরা এতদিন দাবি করেছিলাম, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ব্যতীত নির্বাচনে যাব না। তার উত্তর হচ্ছে, দাবি আদায়ে সফল না হয়ে বিকল্প পন্থায় নির্বাচনে অবদান রাখার সুযোগ নিচ্ছি। বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাওয়া মানে ‘আত্মহত্যা’ করা বলে অতীতে মন্তব্য করেছিলেন সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম।

 

এখন নির্বাচনে যাওয়ার মাধ্যমে তিনি ‘আত্মহত্যা’র সিদ্ধান্ত নিলেন কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এবং আমার নেতাকর্মীরা কষ্ট করে রাজনীতিটাকে টিকিয়ে রেখেছি। আমাদের টিকে থাকার একটা সীমা আছে। সেই সীমা আমরা ধরে রেখেছি। কিন্তু আমার এই মুহূর্তে রাজনৈতিক অক্ষমতা হচ্ছে আর তো পেরে উঠছি না এই সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে। এটা একটা সুনির্দিষ্ট অবস্থান এসে দাঁড়িয়েছে ২৮ অক্টোবরের পরে। আমাকে একটা সিদ্ধান্ত নিতে হবে আমি কি নিশ্চুপ থাকব নাকি আমি একটা বিকল্প পন্থা অবলম্বন করব। আমি বিকল্প পন্থা নিলাম, এই মর্মে যে আমি যে কথাগুলো বলার চেষ্টা করি, সেটা সংসদে বলব। যুক্তফ্রন্ট কয়টি আসনে নির্বাচন করবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা কয়টি আসনে নির্বাচন করবো সেটা এখনো স্থির করিনি। তবে আমাদের ১০০টি আসনে নির্বাচন করার প্রস্তুতি রয়েছে।

 

এ সময় বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির মহাসচিব জাফর আহমেদ জয়, নির্বাহী চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম, অতিরিক্ত মহাসচিব ফারুকুল ইসলাম, প্রেসিডিয়াম সদস্য আনোয়ারুল ইসলাম, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের চেয়ারম্যান শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, অতিরিক্ত মহাসচিব তফাজ্জেল হোসেন, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মহাসচিব আব্দুল আউয়াল মামুন, স্থায়ী কমিটির জ্যেষ্ঠ সদস্য অধ্যাপক ডা. ইকবাল হাসান মাহমুদ প্রমুখ।