ওসমান হোসাইন, কর্ণফুলী :
চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে দীর্ঘ ১২ বছর মামলা চলার পর অবশেষে প্রকৃত জমির মালিককে তার মালিকানা ও অর্পিত সম্পত্তি বুঝিয়ে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। ১৪ নভেম্বর দুপুরে কর্ণফুলী উপজেলা শিকলবাহা ইউনিয়নের কালারপোল এলাকায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট প্রতীক দত্ত ও আদালত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাও নাজির এসে দখল বুঝিয়ে দেন।
এর ফলে শিকলবাহা মৌজার বিরোধীয় ২৭শতক শতক জমি মালিকানা বুঝে পেল প্রকৃত মালিক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন মুরাদ।
হঠাৎ জমিটি বিবাদী পক্ষের লোকজন নিজেদের বলে দাবি করে আসছিল। পরবর্তীতে তারা ওই সম্পত্তি জোরপূর্বক দখলে নিতেও চেষ্টা করেন।উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সহিংসতা অবস্থা সৃষ্টি হলে বাদি ন্যায় বিচারের স্বার্থে ২০১১ সালের বিজ্ঞ আদালতে মামলা করেন।
বিজ্ঞ আদালত বিরোধীয় জমির সমস্ত কাগজত্র নথিপত্র যাছাই বাচাই করে বাদির কাগজপত্র সঠিক প্রমাণিত হওয়ায় দীর্ঘ ১২ বছর মামলাটির রায় দেন বিজ্ঞ আদালত।পরবর্তীতে দীর্ঘ ১ যুগ পর বিভিন্ন আইনি প্রক্রিয়া শেষে অবশেষে মালিকগণ তাঁদের জমি বুঝে পেল।
জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট প্রতীক দত্ত জানান, দীর্ঘদিন মামলা চলার পর প্রকৃত মালিকগণের পক্ষে রায় দেয় বিজ্ঞ আদালত। বিজ্ঞ আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের নির্দেশে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রকৃত মালিকগণকে তাঁদের সম্পত্তি বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।এদিকে জমি বুঝে পেয়ে সন্তোষ জানিয়েছেন মালিক পক্ষ মহি উদ্দিন মুরাদ জানান, কিছুটা দীর্ঘসূত্রিতা হলেও অবশেষে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশের বিচার বিভাগ ও চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের কাছে তিনি ও তাঁর পরিবার ঋণী।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ১৮ আগস্ট শিকলবাহা ইউনিয়নের কালারপোল এলাকায় সমাজসেবক ও ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব মহিউদ্দীন মুরাদের সাথে জমির বিরোধে বিবাদ হয়। ওই সময় মামলার প্রধান আসামি মো. ইসমাইল বুলুর নেতৃত্বে অবৈধ অনুপ্রবেশ ও প্রতিপক্ষের উপর গুলি চালানোর ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় শিশু আরিফসহ মোট ৬ জন গুলিবিদ্ধ হন। ওই ঘটনায় জসিম উদ্দিন বাদী হয়ে কর্ণফুলী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলায় প্রধান আসামি মোহাম্মদ ইসমাইল (৫২) বুলুকে ৮ বছরের কারাদণ্ড নিয়েছেন আদালত। মেট্রোপলিটন চিফ ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক রবিউল হোসেন গত ৩ জানুয়ারি ৪ আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন।মামলার রায়ে আদালত প্রধান আসামি মোহাম্মদ ইসমাইল বুলুকে হত্যা চেষ্টার অপরাধে ৫ বছর ও ৩২৪ ধারায় ৩ বছর সাজা প্রদান করেন। অন্য তিন আরো আসামিকে অবৈধ অনুপ্রবেশের অপরাধে ৩ মাস করে সাজা প্রদান করেন। প্রধান আসামি মোহাম্মদ ইসমাইল বুলু পটিয়া উপজেলার মালিয়ারা বাসিন্দা মৃত গ্রামের খলিলুর রহমানের পুত্র।
জমির দখল বুঝিয়ে দেওয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন-সংশ্লিষ্ট আদালতের নাজির, সিএমপি কর্ণফুলী থানার এসআই মোবারক হোসেন ও আবদুল্লাহ আল মামুন পুলিশের স্পেশাল ফোর্সের সদস্যগণ।