বেলায়েত হোসেন বাবু, রংপুর :
দুই বছর হতে চললো স্বামী আলাউদ্দিন (৩৮) নিখোঁজ। থানায় জিডি করা হলেও নিখোঁজ স্বামীর খোঁজ পাচ্ছেন না স্ত্রী নাদিরা আক্তার (২৭)। স্বামীর খোঁজ না পেয়ে হতাশ হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন দুটি কন্যা শিশু নিয়ে।
পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, রংপুর জেলার বদরগঞ্জ উপজেলার মধুপুর ইউনিয়নের মোড়লপাড়ার সাবেদ আলী ও মৃত মমিনা বেগমের ৪ ছেলে ও দুই মেয়ের মধ্যে একজন আলাউদ্দিন। গত ২০২১ সালে তিনি পারিবারিকভাবে আর্থিক সমস্যার কারণে স্ত্রী নাদিরা আক্তারের সাথে কথা বলে ঢাকা চলে যান কর্মের জন্য।
আলা উদ্দিন ও নাদিরা আক্তারের ঘরে ৮ম শ্রেণীতে পড়ুয়া ইশরাত জাহান আরফিন (১৪) ও ২ বছরের ইফফাত জাহান অরিণ নামে দুটি মেয়ে সন্তান রয়েছে। আলা উদ্দিন ঢাকা চলে যাওয়ার পরে বড় মেয়ে পরিক্ষার ফি বাবদ বাবার কাছে টাকা চাইলে ২০২১ সালের ১২ অক্টোবর ৩ হাজার টাকা বিকাশে পাঠিয়ে দিয়ে সেদিন হতে যোগাযোগ বা কোন প্রকার তথ্য পাচ্ছেন না আলা উদ্দিনের স্ত্রীসহ পরিবার। পরবর্তীতে থানায় জিডি করা হলেও কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এমতাবস্থায় অর্ধহারে, অনাহারে জীবন যাপন করছেন নাদিরা আক্তারসহ পরিবার। কান্না বিজড়িত অবস্থায় তিনি তার স্বামীর সন্ধান চান, স্বামীকে ফেরত চান।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নাদিরা আক্তার বলেন, ‘আমার স্বামী নিখোঁজ হওয়ার দুই বছর পার হলেও তার কোনো সন্ধান পাচ্ছিনা। কেউ কোন সন্ধান দিতে পারছেনা। গোপনে কারো সাথে যোগাযোগ আছে কিনা সেটাও জানিনা। আমি একা বাড়িতে থাকি, কেমন করে থাকবো-চলবো সেটাও জানিনা। আমার শ্বশুরবাড়ির লোকজনও তেমন কোনো খোঁজ নেননা। আমি জানতে চাই- আমার স্বামী জীবিত আছে না মরে গেছে। জীবিত থাকলে তার সন্ধান চাই। আমি সকলের সহযোগিতা কামনা করছি। দুই সন্তান নিয়ে আমি খুব কষ্টে জীবন যাপন করছি।’
আলা উদ্দিনের পিতা সাবেদ আলী ছেলের খোঁজ নেননা এমন দাবি অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি বয়স্ক, অশিক্ষিত মানুষ। ছেলের খোঁজে কোথায় যাবো, কী করবো জানিনা। তাই আমার মন টানলেও কিছু করতে পারছি না। আর আমার ছেলের সাথে আমার কোনো প্রকার যোগাযোগ হয় না। আমার ছেলের খোঁজে সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।’
এলাকার বাসিন্দা পারুল, লাকি, মোতাহারা, শান্তনা, মোহসিনাসহ আরও কয়েকজন বলেন, ‘আলা উদ্দিন ও নাদিরার সংসারে কোনো অশান্তি বা ঝগড়া আমরা পাশে থেকেও শুনিনি। তাদের সুখের সংসার ছিলো। আলা উদ্দিন পরে ঢাকা গিয়ে কেনো যে আর ফিরছেনা তা উদঘাটন হওয়া দরকার।
