ই-পেপার | শুক্রবার , ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

রাশিয়ার চেচনিয়ায় ভয়াবহ নির্যাতনে সাংবাদিককে পিটিয়ে মুখে রঙ মাখিয়ে দিল অস্ত্রধারীরা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ভয়াবহ নির্যাতনের শিকার হয়েছেন রাশিয়ার বিখ্যাত অনুসন্ধানী সাংবাদিক ইয়েলেনা মিলাশিনা। দেশটির চেচনিয়া রাজ্যে কিছু অস্ত্রধারী তাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে অমানবিক নির্যাতন করে।

তারা তার হাতের আঙুল ভেঙ্গে দেয়, মাথার চুল কেটে দেয়। এছাড়া ছাড়ার আগে তার মুখে সবুজ রঙ মেখে দেয়।

সাংবাদিক ইয়েলেনার সঙ্গে ওই সময় একই গাড়িতে ছিলেন মানবাধিকার আইনজীবী আলেক্সান্ডার নেমোভ। অস্ত্রধারীরা এই আইনজীবীর পায়ে ছুরিকাঘাত করে।

হামলার শিকার সাংবাদিক ও আইনজীবী মঙ্গলবার (৪ জুলাই) বিমানবন্দর থেকে চেচনিয়ার গ্রোজনিতে যাচ্ছিলেন। সেখানে একটি আদালতে জারিমা মুসায়েভা নামক এক অধিকারকর্মীর একটি বিচারের রায় দেওয়ার কথা ছিল। ধারণা করা হয়, জারিমার পরিবার চেচনিয়ার নেতা রমজান কাদিরভ ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধাচরণ করায় তাকে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে।

 

আর জারিমার আইনজীবী হিসেবে কাজ করছিলেন হামলার শিকার আলেক্সান্ডার নেমোভ। ছুরিকাহত হওয়া সত্ত্বেও খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে তিনি আদালতে উপস্থিত হয়েছিলেন।

অনুসন্ধানী সাংবাদিক ইয়েলেনা মিলাশিনা রাশিয়ার স্বাধীন গণমাধ্যম নোভায়া গাজেতায় কাজ করেছেন। তিনি ২০১৯ সালে চেচনিয়ায় সমকামীদের ওপর হামলা ও গুপ্ত হত্যা নিয়ে বেশ কয়েকটি প্রতিবেদন করেন। এ কারণে তার ওপর ক্ষুব্ধ ছিল রাজ্যের নেতৃবৃন্দ। এতে হুমকির মুখে ছিল তার জীবনও।

 

টিভি ও অনলাইনে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, সাংবাদিক ইয়েলেনা হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে আছেন। আর তার দুই হাতে ব্যান্ডেজ লাগানো। এছাড়া পরিষ্কারভাবে তার মুখে সবুজ রঙ দেখা যায়। এ রঙটি রাশিয়ায় জেলোঙ্কা নামে পরিচিত।

হামলার বিষয়টি চেচেন মানবাধিকারকর্মী মনসুর সুলতায়েভের কাছে বর্ণনা করেন সাংবাদিক ইয়েলেনা। তিনি বলেন, ‘তিনটি গাড়ি দিয়ে আমাদের গাড়ি আটকানো হয়। এটি একটি ক্লাসিক কিডন্যাপিং ছিল। তার আমাদের ড্রাইভারকে ঝাপটে ধরে এবং তাকে গাড়ি থেকে ছুড়ে ফেলে দেয়। তারা গাড়ির ভেতর প্রবেশ করে, আমাদের মাথা নিচু করে ধরে… আমার হাত বাঁধে, সেখানে হাঁটু গেড়ে বসায় এবং আমার মাথায় পিস্তল ধরে।’

 

মানবাধিকার সংস্থা মেমোরিয়াল জানিয়েছে, ওই দুইজনের মুখমণ্ডলসহ শরীরে সব জায়গায় ব্যাপক মারধর করা হয়, লাথি মারা হয়, হত্যার হুমকি দেওয়া হয়, মাথায় পিস্তল ধরে তাদের সব জিনিসপত্র নিয়ে গিয়ে সেগুলো ভেঙে ফেলা হয়।

সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, মারার সময় তাদের হুমকি দিয়ে বলা হয়, ‘আপনাদের সতর্কতা দেওয়া হলো। এখান থেকে বের হয়ে যান আর, কিছু লিখবেন না।’

 

এদিকে এমন ঘটনার পর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট দপ্তর ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকোভ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, বিষয়টি সম্পর্কে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে অবহিত করা হয়েছে এবং এটি তদন্ত করা হবে।

চেচনিয়ার নেতা রজমান কাদিরভ ২০২০ সালে এই সাংবাদিককে একবার প্রকাশ্যে হুমকি দিয়েছিলেন।

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

 

এইচ এম কাদের,সিএনএন বাংলা২৪: