ই-পেপার | শুক্রবার , ২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

পেকুয়ায় মসজিদ ও কবরস্থান রক্ষার দাবিতে মুসল্লিদের মানববন্ধন

নিজস্ব প্রতিনিধি, পেকুয়া :

কক্সবাজারের পেকুয়ায় মসজিদ ও কবরস্থান রক্ষার দাবীতে দাবীতে মানববন্ধন করেছে স্থানীয় মুসল্লী ও এলাকাবাসী।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) জুমার নামাজ শেষে উপজেলার সদর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের উত্তর মেহেরনামা মছন্যাকাটা জামে মসজিদ এলাকায় এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

স্থানীয় মুসল্লীরা দীর্ঘ লাইন ধরে রাস্তায় মানববন্ধনে দাড়িয়ে মসজিদ ও কবরস্থানের জায়গা একই এলাকার আবদুল মালেক নামে এক ব্যক্তি গোপনে বন্দোবস্তি করে খতিয়ান সৃজন করার পায়তারা করেছে বলে অভিযোগ করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

মানববন্ধনে উপস্থিত স্থানীয়রা অভিযোগ করেন ১৯৬০ সালে এলাকার প্রবীণ মুরব্বি আবুল হোছাইন তার পৈত্রিক ভাবে দখল প্রাপ্ত ও পাউবোর আংশিক জায়গার উপর নির্মিত মছিন্যাকাটা জামে মসজিদ, কবরস্থান,নির্মান করেন, ১৯৯৬ সালে আবুবকর হেফাজখানা প্রতিষ্ঠা করে অদ্যবদি স্থানীয় মুসল্লীরা নামাজ আদায় করে আসছেন।

মানববন্ধনে বক্তৃতারা বলেন,পানি উন্নয়ন বোর্ডে হতে মোটাংকের টাকার বিনিময়ে অসাধু কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রতিবেদন নিয়ে সরকারী জায়গায় বসত বাড়ি আছে বলে দখল দেখিয়ে চৈরভাঙ্গা এলাকার মোহাম্মদ নছিমের পুত্র অবসরপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য পরিদর্শক আব্দুল মালেক নামের এক ব্যক্তি জেলা প্রশাসক হতে বন্দোবস্ত হাতিয়ে নিয়ে মসজিদ ও কবরস্থান তার জায়গা বলে দাবী করে আসছে।

মানববন্ধনে মনোহর আলম বাদশাসহ অনেকেই বলেন, আবদুল মালেক শুধু মসজিদ কবরস্থানে জায়গা নন তিনি স্থানীয়দের বসত বাড়ি ও চলাচল রাস্তা গোপনে বন্দোবস্তি করে খতিয়ান সৃজন করে নিরীহ মানুষের ঘর বাড়ী দখল করার পায়তারা চালাচ্ছে।

জানা যায়,১৯৬০ সালে স্থানীয় প্রবীণ মুরব্বি হাজী আবুল হোছাইন ও আবদুল মতলত গং এর মালীকানাধীন বিএস ৯৬২ খতিযানের বিএস ৪৬২ নং দাগের জায়গায় মছন্যাকাটা এলাকায় মসজিদ ও কবরস্থান নির্মাণ করেন।

১৯৭০ সালে মসজিদের ব্যয় নির্বাহের জন্য মেহেরনামা মৌজা হতে ওয়াকফ রেজিস্ট্রারী মুলে ২ একর ৭৯ শতক জমি মসজিদের নামে দানপত্র করেন। পরবর্তীতে বি এস জরিপ মতে মসজিদের নামে বি এস খতিয়ান সৃজিত হয়ে চুড়ান্ত ভাবে প্রচার আছে।

মসজিদ প্রতিষ্ঠার পর থেকে এলাকাবাসী মসজিদ ও কবরস্থান সংস্কার করে এবং মসজিদের পাশে ধর্মীয় শিক্ষা প্রসারে উদ্দেশ্যে একটি হেফজ ও এতিমখানা নির্মাণ করেন।

মসজিদ প্রতিষ্ঠাতার পুত্র প্রবীণ মুরব্বি আহমদ শফি বলেন, আমার পিতা ১৯৬০ সালে মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেন, এলাকার মানুষের সহযোগিতায় মসজিদ ও কবরস্থানের ব্যপক উন্নয়ন হয়। আবদুল মালেক নামে যে ব্যক্তি মসজিদের জায়গা বন্দোবস্তি নিয়েছে বলে দাবী তুলছে তা ধর্মীয় কাজে বাধার সামিল, আমরা এর তিব্র প্রতিবাদ ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

মছন্যাকাটা সমাজ কমিটির সভাপতি আবদুল্লাহ আনসারী বলেন, মসজিদ প্রতিষ্ঠার পর থেকে সমাজ কমিটি মসজিদের উন্নয়নে সহযোগিতা করে আসছে।

আবদুল মালেক নামের ব্যক্তি মসজিদ ও কবরস্থানে জায়গা দাবী করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করে,ওই মামলায় তার পক্ষে একতর্ফা আদেশে হাসিল করেন। মসজিদ কমিটির সভাপতি আজিজুল হক বাদী হয়ে ওই একতর্ফা আদেশের বিরুদ্ধে চকরিয়া সিনিয়র সহকারী ১৩২/২০২৩ মামলা দায়ের করলে আদালত ১৭/৭/২০২৩ ইংরেজি তারিখে ওই একতর্ফা আদেশ স্থগিত করে নথি টেক করার নির্দেশ প্রদান করেন।

কিন্তু তিনি অবৈধভাবে পেকুয়া ভূমি অফিসের কর্মকর্তাদের ম্যনেজ করে খতিয়ান সৃজন করার পায়তারা চালাচ্ছে। এতে স্থানীয় এলাকাবাসীর মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করায় জনস্বার্থে অবৈধ খতিয়ান সৃজন কার্যক্রম বন্ধের দাবীতে মানববন্ধন নেমেছে এলাকাবাসী।

অভিযুক্ত আবদুল মালেকর কাছে এবিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন,আমি মছন্যাকাটা মসজিদের জন্য জায়গাটি দান করে দিতে খতিয়ান সৃজনের আবেদন করেছি,খতিয়ান সৃজিত হলে আমি জায়গাটি মসজিদের নামে রেজিস্ট্রারী করে দিব।

আদালতের মামলা স্থগিত আদেশের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন,আদালত আমাকেই রায় দিয়েছে তারা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা কাগজ বানিয়েছে।
মানববন্ধনে স্থানীয় শ্রেণী পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।