নিজস্ব প্রতিবেদক ,ঢাকা :
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জাতীয় পার্টির (জাপা) কর্তৃত্ব নিয়ে ফের প্রকাশ্যে দেবর-ভাবির লড়াই। শনিবার (১৮ নভেম্বর) নির্বাচন কমিশনে (ইসি) দুইপক্ষের পাল্টাপাল্টি চিঠিতে এ বিষয়টি আবার সামনে এসেছে।
জাপার প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুর পর থেকেই মূলত দলের কর্তৃত্ব নিয়ে লড়াই শুরু হয় ভাই গোলাম মোহাম্মদ কাদের (জিএম কাদের) ও স্ত্রী বেগম রওশন এরশাদের মধ্যে। মাঝে এ লড়াই নিয়ে তেমন সাড়াশব্দ না হলেও সংসদ নির্বাচন নিয়ে ফের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এলো। জাপা মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে এক চিঠিতে জানিয়েছেন, চেয়ারম্যান পদে থাকা জিএম কাদেরের স্বাক্ষরে হবে সংসদ নির্বাচনের প্রার্থী মনোনয়ন।
এদিকে সিইসিকে লেখা চিঠিতে জাপার প্রধান পৃষ্ঠপোষক বেগম রওশন এরশাদ বলেছেন, তার দল চতুর্থবারের মতো বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের শরীক দল হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছে। এটা হবে শুধু মাত্র নির্বাচনী জোট। নির্বাচনের পরে জাতীয় পার্টির নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা দলীয় সিদ্ধান্ত অনুসরণ করবেন।
এ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থীরা দলীয় প্রতীক ‘লাঙ্গল’ কিংবা প্রার্থীর ইচ্ছানুসারে মহাজোটে জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করতে পারবেন। রওশদ এরশাদের মুখপাত্র কাজী মো. মানুনুর রশিদ এ বিষয়ে সাংবাদিকদের বলেন, কে জাতীয় পার্টির প্রতিনিধিত্ব করছে, অপেক্ষা করি টাইম উইল সে। উনি (জিএম কাদের) নির্বাচন না করলে হারিয়ে যাবে। সম্প্রতি বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদের বাসভবনে সভা হয়েছে। ওই ফোরামে সিদ্ধান্ত হয়েছে জাপা নির্বাচনে অংশগ্রহণ কবরে। যখনই উনি (জিএম কাদের) ফোন করেন তখনই বিরোধী দলীয় নেতার সঙ্গে উনার কথা হয়। আমরা আহ্বান জানাব তিনিও নির্বাচনে অংশগ্রহণ কবরেন। ৩০০ আসনেই আমরা প্রার্থী দিতে চাই। তবে জোট হলে সেভাবে সিদ্ধান্ত হবে।
তিনি বলেন, জাতীয় পার্টির অন্য অংশ বলতে কিছুই নেই। গণঠতন্ত্র অনুযায়ী বেগম রওশন এরশাদ প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে তিনি প্রার্থীর মনোনয়ন দেবেন। তিনিই মূলত জাতীয় পার্টি। গঠনতন্ত্রে বলা আছে, প্রধান পৃষ্ঠপোষক দলের সর্বময় ক্ষমতা এবং কর্তৃত্ব সংরক্ষণ করবেন। তবে পাল্টাপাল্টি চিঠি এবং জাপায় কার কর্তৃত্ব আমলে নেবে, এমন প্রশ্নের জবাবে ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, এটা কমিশন দেখবে। কারণ দু’টো চিঠি এসেছে। কমিশন যেটা আমলে নেয়। সাইনিং অথরিটি কে হওয়ার কথা- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নরমালি দলের চেয়ারম্যান, সাধারণ সম্পাদক বা মহাসচিব সাইনিং অথরিটি নরমালি হয়। জিএম কাদের সাইনিং অথরিটি, তাহলে বিবেচনা কী হবে, এ প্রশ্নের জবাবে অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, এটা কমিশন বলতে হবে।
সিইসি ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ৩০ নভেম্বর, মনোনয়নপত্র বাছাই ১ থেকে ৪ ডিস্ম্বের, রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কমিশনে আপিল দায়ের ও নিষ্পত্তি ৬ থেকে ১৫ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ১৭ ডিসেম্বর। রিটার্নিং কর্মকর্তারা প্রতীক বরাদ্দ করবেন ১৮ ডিসেম্বর। নির্বাচনি প্রচার চলবে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত। আর ভোটগ্রহণ হবে ৭ জানুয়ারি (রোববার)।
সিএনএন বাংলা২৪