নীলফামারী প্রতিনিধি :
নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জসহ অন্যান্য এলাকায় আগাম জাতের আলু তোলা শুরু হয়েছে। মাত্র ৬৫ দিনে এই আলু তুলছেন কৃষকরা। এ সময়ে মাঠে কৃষক ও শ্রমিকের ব্যস্ততা বেড়েছে। পাইকারদের আনাগোনাও বেড়েছে। এছাড়া অনুকূল আবহাওয়া থাকায় আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। ভালো দাম পেয়ে কৃষকরাও খুশি।
জেলার অবহেলিত উপজেলা কিশোরগঞ্জ। বেশ কয়েক বছর থেকে আগাম জাতের আলু চাষ করে লাভবান হচ্ছেন এ এলাকার কৃষকরা। এ বছরও অনুকূল আবহাওয়ার কারণে আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রতি বছর এ উপজেলার ক্ষুদ্র-প্রান্তিক কৃষকরা আগাম আমন ধান ঘরে তুলে আগাম বাজার ধরার আশায় আগেভাগে আলুর বীজ বোনেন। বর্তমানে সেই খেত থেকে আলু উত্তোলন শুরু হয়েছে। পাইকাররা ক্ষেত থেকে আগাম জাতের এই আলু ৮০ টাকা কেজি দরে কিনে ট্রাকে করে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাচ্ছেন।
সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার বাহাগিলি, চাঁদখানা, গাড়াগ্রাম, নিতাই, প্রভৃতি এলাকায় আলুর মাঠে কেউ মাটি খুঁড়ছেন, কেউ কুড়াচ্ছেন আর কেউ ঠেসে ঠেসে বস্তা ভরছেন। কোথাও আবার ডিজিটাল মিটারে চলছে ওজন। খেতের মাঝে ভর্তি হচ্ছে ভ্যান, ট্রলি ও ট্রাক। খেতের মধ্যে আলু তোলার এমন দৃশ্য উপজেলার বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে। উপজেলার রনচন্ডি ইউনিয়নের কুঠিপাড়া গ্রামের কৃষক নুরুল আলীম বলেন, ৮০ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি করেছি। এতে খরচ বাদে দ্বিগুণ লাভ থাকছে। মাত্র ৬৫ দিনে এই আগাম জাতের আলু তুলে বাজারজাত করে দামে লাভবান হয়েছি।
একই গ্রামের হজরত আলী ৬২ শতক জমিতে আগাম আলু উত্তোলন করছেন। হজরত আলী বলেন, বরাবরের মতো চলতি বছর ১৫ সেপ্টেম্বরে জমিতে ৬০ থেকে ৬৫ দিনে ফলনযোগ্য আগাম আলু তুলছি।আগাম আলু চাষীরা অভিযোগ করে বলেন, ভারত থেকে নতুন আলু আমদানি করা হচ্ছে। এটি বন্ধ করা জরুরি। এছাড়া হরতাল-অবরোধ চলতে থাকলে আগাম আলুর দামে ধস নামবে। এতে এ জেলায় প্রায় ৮ হাজার হেক্টরে যে আগাম আলু চাষ হয়েছে, তার দাম না পেলে আলু চাষীদের লোকসানের মুখে পড়তে হবে।
আলুর পাইকারি ক্রেতা আনোয়ার হোসেন বলেন, বাজারে এখন আগাম জাতের আলু উঠতে শুরু করেছে। এসব আলু ঢাকা, রাজশাহী, সিলেট, চট্টগ্রাম, বরিশাল, খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের আড়তে সরবরাহ করা হচ্ছে। কাঁচা বাজারের মূল্য সঠিকভাবে বলা যায় না। এক সপ্তাহ পরে আলুর দাম বাড়তেও পারে, আবার কমতেও পারে।
কিশোরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লোকমান আলম বলেন, চলতি বছর এই উপজেলায় ৬ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে আগাম আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এর মধ্যে ৪ হাজার ৬০০ হেক্টর আগাম আলু আবাদ করা হয়। বাজারে নতুন আলু উঠতে শুরু হয়েছে। চলতি বছর অনুকূল আবহাওয়ায় আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। চড়া দাম পেয়ে কৃষক পরিবারও খুশি। আগাম আলু, আগাম ধান চাষ করে এ অঞ্চলের মানুষ ভাগ্যের পরিবর্তন আনছেন।